‘সংগ্রাম’ বিশ্বাস করে মানবজাতির মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে

বৃহস্পতিবার, মার্চ ৫, ২০২০,৯:১৭ পূর্বাহ্ণ
0
437

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

চৌধূরী মোহাম্মদ মাসুম, প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক, সংগ্রাম

মানব সংবাদ : সংগ্রাম প্রতিষ্ঠানটি শুরুর প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।

চৌধূরী মোহাম্মদ মাসুম : সাগর বিধৌত বরগুনা জেলার দক্ষিণে সাগর, পশ্চিমে সুন্দরবন। সারা ভূখন্ড জুড়ে রয়েছে ছোট-বড় অনেক নদী ও অসংখ্য খাল। প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল বরগুনার মানুষদের জীবন ব্যবস্থা বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় কিছুটা অস্থিতিশীল ও গতানুগতিক ধারা থেকে ভিন্নতর। উপকূলীয় গরীব মানুষগুলোর উপর অন্যায়, শোষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রামী চেতনায় একিভূত করার জন্য ১৯৮৫ সালের ৬ জানুয়ারি সংগ্রামের আবির্ভাব ঘটে। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে পাথরঘাটায় সংগ্রাম প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে পাথরঘাটা যুবক্লাব হিসেবে শুরু হলেও পরবর্তীতে সংগ্রাম নামে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে এর কর্মসূচি, লোকবল ও কর্মএলাকা বরিশাল বিভাগের সর্বত্র বিরাজমান।

মানব সংবাদ : দেশের দারিদ্র বিমোচনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সমূহের কার্যক্রমকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

চৌধূরী মোহাম্মদ মাসুম : বাংলাদেশে এখন এনজিও উপার্জনমূলক কর্মকাণ্ডে ঋণ প্রদানের ধারণাটির পরিবর্তন এনেছে। ক্রেডিটপ্লাস কর্মকাণ্ড হিসেবে সেবা কার্যক্রমের সুবিধার ক্ষেত্রে অংশীজনের যথাযথ দাবি প্রতিষ্ঠার লক্ষে তাদেরকে সংগঠিত করার ওপর অগ্রাধিকার দেওয়ার পক্ষপাতি। এই ধারণা থেকে নারী অধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, পরিবেশ, দুর্যোগ নিয়ে ব্যাপক কাজ করছে। তবে ঋণ সহায়তার মাধ্যমে উপার্জনমূলক কর্মকাণ্ডের শুধু অর্থনৈতিক সুবিধাই নেই, সামাজিক সুবিধাও অনেক, বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষমতায়নে উপার্জনমূলক কর্মকাণ্ডের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

মানব সংবাদ : সংগ্রাম প্রতিষ্ঠানটি কী কী সেবা ও সুবিধা নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে?

চৌধূরী মোহাম্মদ মাসুম : সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় পিকেএসএফ’র সহযোগিতায় সংগ্রাম বরগুনা জেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের ৭,৭২৩ পরিবার এবং বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়ন ৫,৪৫৪ পরিবারের মধ্যে সমন্বিত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে ব্যাপক সফলতা সৃষ্টি করেছে। ১৪২ জন লোকবল এই কর্মসূচির সাথে সম্পৃক্ত আছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মসংস্থান তৈরী, ভার্মিকম্পোস্ট, স্যানিটেশন, সুপেয় পানির ব্যবস্থা (পন্ডস্যান্ড ফিল্টার, অগভীর ও গভীর নলকুপ স্থাপন), ওয়ার্ড সেন্টার স্থাপন, সমৃদ্ধ বাড়ি তৈরি, উন্নত চুলা, সোলার ল্যাম্প বিতরণ, বাসক পাতা চাষ, তরুণদের প্রশিক্ষণ প্রদাণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করা, স্বল্প সার্ভিস চার্জে ঋণ সুবিধা, জীবিকায়নের জন্য অনুদান প্রদান প্রভৃতি কার্যক্রম এই কর্মসূচিতে বিদ্যমান। এসকল কর্মকা- বাস্তবায়নের মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারের কার্যকর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে টেকসই ভিত্তিতে তাদের দারিদ্র অবস্থা হ্রাস করে উন্নয়ন কার্যক্রমে দরিদ্রের অভিগম্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। ১০০টি বৈকালীন শিক্ষাসহায়তা কেন্দ্র পরিচালনা করা হচ্ছে যার মাধ্যমে শিশুদের ক্লাশের পড়া শিখিয়ে দেয়া হয়। এর ফলে শিশুরা ক্লাশের পড়া মুখস্ত করে যেতে পারছে এবং তাতে তারা বেশ উপকৃত হচ্ছে। এছাড়া সংগ্রাম পাথরঘাটা উপজেলায় এতিমখানা, হাফেজি মহিলা মাদ্রাসা, চৌধূরী মাসুম টেকনিক্যাল এণ্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ , চৌধূরী মাসুম কৃষি প্রযুক্তি কলেজ স্থাপন করেছে। অতিদরিদ্র পরিবারের এসএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের এযাবত ৩৪৩ জনকে ৫০ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে উল্লেখিত শিক্ষার্থীবৃন্দ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে। ভিক্ষা পেশা পরিহার করে স্বাভাবিক পেশায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পিকেএসএফ অর্থায়নে সংগ্রাম ইতোমধ্যে ২০ জন ভিক্ষুককে তাদের সক্ষমতা অনুসারে প্রত্যেককে ১.০ লক্ষ টাকার লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়েছে। এর ফলে তাদের পেশা পরিবর্তন করে অত্যন্ত সুখে শান্তিতে বসবাস করছে।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ১৩৩জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জীবন মানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হয়েছে। ১৬ জন প্রতিবন্ধীকে ২৮দিনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ১২ জনের রিফ্রেসার্স শেষ হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে হচ্ছে। ১৬ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নিয়মিত পিআরটি (চিকিৎসা সেবা) দেয়া হচ্ছে। ৭জন গুরুতর অসুস্থ প্রতিবন্ধীব্যক্তি পটুয়াখালী প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনে রেফার করে সুস্থ করা হয়েছে। ২০ জন প্রতিবন্ধী শিশুকে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত ৭২জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে সহায়ক উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চাকরী প্রদান করা হয়েছে ৫ জনকে। ৩০ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতাভূক্ত করা হয়েছে। ভিজিডি কার্ডে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ১০ জনকে। আইজিএ (আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকাণ্ড) প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ৭৫ জনকে। বিধবা ভাতায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ১ জনকে। শিল্পি ভাতায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ১ জনকে । ২০০জন প্রবীণ ব্যক্তিকে সহায়তা দিচ্ছে সংগ্রাম। এসকল প্রবীণকে প্রতিমাসে ৫০০ টাকা ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও হুইল চেয়ার, কমোট লেট্রিন, লাঠি, ছাতা, কম্বল ইত্যাদি প্রদান করা হয়েছে। যেসকল প্রবীণব্যক্তি ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে তাঁদের সৎকারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান করা হয়েছে।
বরগুনা জেলার ৫টি উপজেলার ৭,৩০০ জন চাষীর মাধ্যমে বারি-৬ জাতের মুগডাল চাষে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। উৎপাদিত মুগডাল থেকে ৬০% ডাল ক্রয় করে ইউগ্লেনার মাধ্যমে জাপানে রপ্তানী করা হয়েছে। পাথরঘাটা উপজেলায় ১,০০০ জন কাঁকড়া চাষিকে আধুনিক প্রযুক্তি ও কলাকৌশল বিষয়ক দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, হ্যাচারিতে ব্যবহারের জন্য মা কাঁকড়া স্থাপন, বিভিন্ন ধরনের কাঁকড়া চাষ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সংগ্রাম শিশু ও তরুণ প্রজন্মের জন্য ‘সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বরগুনা জেলার ৩টি উপজেলার ২৮টি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

সিডর পরবর্তী বিনামূল্যে ঘর বিতরণ ৭০১০ টি ঘর প্রদান করেছে। একটি নিরাপদ বাসস্থান প্রাপ্তি এবং আয় উপার্জনমূলক কর্মকান্ডে প্রান্তিক পর্যায়ে জীর্ণ আবাসে বসবাসরত অতিদরিদ্র পরিবারের জীবনমান বৃদ্ধিসহ সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির প্রত্যাশা নিয়ে সংগ্রাম ১৩৬টি গৃহ নির্মাণে সামান্য সার্ভিস চার্জে ৭০,৭০,০০০, টাকা ঋণ প্রদান করেছে। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ বিশেষ করে সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ ১৬ হাজার পরিবারের প্রত্যেককে ৩ বার করে ১৪ আইটেমের ত্রাণের প্যাকেজ দিয়েছে। কৃষকের হালের বলদ মারা যাওয়ায় ২৫০টি পাওয়ার টিলার বিতরণ করেছে। জেলেদের পূনঃবাসনের লক্ষ্যে ১৩০ টি ট্রলার প্রদান করা হয়েছে। জনকল্যাণে ৮৯টি রাস্তা নির্মাণ করেছে যার দৈর্ঘ ৮৩.৬০৫ কিলোমিটার। রাস্তা মেরামত করেছে ১৪৭টি। ২টি সাইক্লোন সেল্টার, ১টি বক্স কালভার্ট, ৭৬টি রিং কালভার্ট ও ৫টি সাঁকোর স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। জলমহালে মাছ চাষের উপযোগি করে জেলেদের হস্তান্তর করা হয়েছে ৮৪.২১ হেক্টর জলাশয়। শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে ১৪ টি বিদ্যালয়ে, বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনা ১৪৫টি, কিশোরীদের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণের জন্য জমি প্রদান ৫ শতাংশ, রেডিও বিতরণ ২০ টি, বিনামূল্যে ছাগল বিতরণ ৫১৯৬ টি, পাওয়ার পাম্প বিতরণ ৫০ টি, লবণ সহনশীল বীজধান বিতরণ ৩১.৮ টন, সোনালী মুরগী প্রদান ৩৫৮৮০ টি, মুরগী পালন সামগ্রী বিতরণ ৬৫৬১ পরিবার, ঘরের আংশিক সামগ্রী বিতরণ ১৮২৩, ঝরেপড়া শিশুকে শিক্ষাভূক্তকরণ ৪,৮০০ জন, উপকারভোগিদের প্রশিক্ষণ প্রদান (বিভিন্ন মেয়াদের) ৬৪০২ জন, বিনামূল্যে সেলাই মেশিন প্রদান ৬৫০ টি, কেঁচো দিয়ে ভার্মিং কম্পোস্ট সার উৎপাদন খামার তৈরী ১০৪০টি, কৃষকদের মাঝে সবজি বীজ বিতরণ ২৯৩৯০জন, তিন মাস ব্যপি কারিগরী প্রশিক্ষণ ৪৫ জন, আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তি চলাচল উপযোগীকরণ (র‌্যাম্প তৈরী) ৮টি, দুর্যোগকালীন জরুরি উদ্ধার সরঞ্জাম বিতরন ১১ সেট।
সংগ্রাম স্বাস্থ্য সেবা এমবিবিএস ডাক্তার, প্যারামেডিক ডাক্তারদের মাধ্যমে এ যাবত ২০১৫ টি স্যাটেলাইট ক্লিনিক পরিচালনা করেছে এবং ৩২০২ টি স্ট্যাটিক ক্লিনিক আয়োজন করেছে। ডাক্তারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তা পেয়েছে ৩০,৫২৮ জন, সরকারী/বেসরকারী হাসপাতাল/ক্লিনিকে রোগী রেফার করা হয়েছে ১১৫৫ জন, পুষ্টিকণা বিতরণ করা হয়েছে ৩০২২৬ শিশুকে। সংগ্রামের বিভিন্ন কর্মসূচির সহযোগিতার মাধ্যমে এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ১৯৮৮ সন থেকে এযাবৎ ২হাজার ৫৪৭ জনের চোখের ছানী অপারেশন করে দিয়েছে এবং ১৮ হাজার ২০৪ জন রোগির চোখের চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। সংগ্রাম ১৯৯৩ সন থেকে জনকল্যানে ১২৮৮ টি ডিপহ্যান্ড টিউবওয়েল, ৫১ টি স্যালো টিউবওয়েল, ১০৪ টি পন্ড স্যান্ড ফিল্টার, ৪০ টি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং সিস্টেম, ৪ টি গণ সৌচাগার, ৫৯ টি বিদ্যালয় লেট্রিন স্থাপন, ১৮ টি ডাস্টবিন, ৩৭২ টি পরিবেশবান্ধব অবসেট লেট্রিন, ৫ রিং ১ স্লাবের ১১,৯৮০ সেট লেট্রিন প্রদান করেছে।

অর্থ প্রদানকারী সংস্থা-পিকেএসএফ এর সহযোগিতায় ৫০টি ঋণের শাখার মাধ্যমে ৫০ হাজার ৭৯৩ জন সদস্য’র মধ্যে এযাবৎ ৯০০ কোটি ৪৭ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৩৪ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। বর্তমান ঋণস্থিতি ৮৬ কোটি ৭৬ লক্ষ ২৬ হাজার ২৬৮ টাকা। সদস্যদের আমানত সংগ্রামে জমা আছে ২৫ কোটি ৭৫ লক্ষ ৩৩ হাজার ২০৫ টাকা। সংগ্রাম থেকে ঋণ গ্রহণ করে ২০১৪ সনে বাংলাদেশে শ্রেষ্ঠ কৃষি উদ্যোক্তার পুরস্কার পেয়েছেন লাউপাড়া শাখার মোঃ ছোমেদ ফকির এবং ২০১৬ সনে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় হয়েছেন কড়ইবাড়িয়া শাখার আজিজুল হক সিকদার।

মানব সংবাদ : দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ‘সংগ্রাম’ কী ধরনের ভূমিকা পালন করছে?

চৌধূরী মোহাম্মদ মাসুম : সংগ্রাম বিশ্বাস করে যে মানবজাতির মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে, যার মাধ্যমে তাদের অসহায়ত্ব ও অমানবিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব এবং এর জন্য প্রয়োজন উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকা। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার বিভিন্ন দারিদ্র চক্রে দরিদ্র জনগোষ্ঠি জড়িয়ে পড়ে এবং তারা সামাজিক অবিচারের শিকার হচ্ছে। এই জনগোষ্ঠি উন্নয়নের মূলস্রোত ধারার বাইরে থাকায় তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সম্ভাবনা অপ্রকাশিত থেকে যায়।
সুতরাং সংগ্রাম দরিদ্র জনগোষ্ঠির কাঙ্খিত আর্থ-সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তনে সহায়তা করার জন্য তাদের সচেতন করার কাজ করে যাচ্ছে। সংগ্রাম দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় শক্তিশালী অবস্থান তৈরীর সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরণের পরিবর্তন যখন ঘটে, দরিদ্র জনগোষ্ঠি তখন তাদের নিজস্ব সমাজকে উন্নত করতে সক্ষম হয় এবং সত্যিই তখন তারা সমাজ পরিবর্তনের কার্যকর প্রতিনিধি হিসেবে পরিগণিত হয়। সংগ্রাম জনগণের ক্ষমতায়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে এবং সাথে সাথে অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রত্যাশা করে।

মানব সংবাদ : বর্তমানে এই খাতের সবচেয়ে প্রধানতম চ্যালেঞ্জ কি বলে মানে করেন?

চৌধূরী মোহাম্মদ মাসুম : একচিলতে হাসি ফোটানোর ও দুঃখ-দুর্যোগে পাশে থাকার ইচ্ছায় প্রকাশ ঘটে এনজিওর। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানুষের মানসিক অবস্থা কার্যক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে এনজিওদের। এনজিওর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত, উপযুক্ত ও ক্রমাগত অর্থায়ন যোগার করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নির্ভরযোগ্য ইমেইল এবং ইন্টারনেট সংযোগে প্রবেশাধিকার ব্যবস্থা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পর্যাপ্ত নেই। ফলে সাধারণত বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বের সাথে সাড়াদান সম্ভব হয়না। এছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার জিবনমান উন্নত করছে। কিন্তু অধিকাংশক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যাবহারের গতির সাথে তাল মিলাতে সক্ষম হয় না। ফলে কার্যক্রম বাস্তবায়নে সমস্যার সম্মুখীন হয়।

মানব সংবাদ : দেশের সরকারের কাছে এই খাতের জন্য আপনাদের বিশেষ কোন প্রত্যাশা আছে কী?

চৌধূরী মোহাম্মদ মাসুম : সরকারের কাছে উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচনে কর্মরত এনজিওদের কাজের স্বীকৃতির দাবি জানাচ্ছি। এর ফলে এনজিওগুলো আরো উৎসাহ পাবে।

মানব সংবাদ :সংগ্রাম প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

চৌধূরী মোহাম্মদ মাসুম : সময়ের সাথে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করাই সংগ্রাম-এর ভবিষ্যত স্বপ্ন।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে