বাংলাদেশের নতুন কোচ মাইক হেসন

তাঁর কোচ হিসেবেই থাকার কথা ছিল সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপেও । এই বিশ্ব আসর পর্যন্তই নিজ দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিও ছিল। কিন্তু এর বছরখানেক আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ‘চাপমুক্ত’ হয়ে মাইক হেসন পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্য পদত্যাগ করেছিলেন । তবে নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই হেড কোচ এক বছরের বিরতির পরই আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন । মাত্র ২২ বছর বয়সেই কোচিংকে পেশা বানিয়ে নেওয়া এই নিউজিল্যান্ডার এবার হতে চান সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিম-তামিম ইকবালদের কোচ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) তাঁকে পেতে মরিয়া ।

তবে স্টিভ রোডসের উত্তরসূরি হিসেবে তাঁকে চূড়ান্ত করার আগে সাক্ষাত্কার দেওয়ার জন্য হেসনকে ঢাকায়ও ডেকেছে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসন। নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম এই কোচ সেটি দিতেই আগামীকাল রাজধানীতে আসছেন । এর আগে বিসিবি গতকাল ঢাকায় আসা দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কোচ রাসেল ডমিঙ্গোরও সাক্ষাত্কার নিয়েছে । এই প্রোটিয়ার প্রেজেন্টেশনকে ‘সন্তোষজনক’ আখ্যা দিলেও মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস জানিয়ে রেখেছেন, জাতীয় দলের হেড কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়ার শেষ বিন্দুতে পৌঁছাতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে, ‘যেটি মাননীয় সভাপতি (নাজমুল হাসান) আগেও বলেছেন, আমরা সব কিছু শেষ করতে চাই ১০-১২ দিনের মধ্যে । আমরা চেষ্টা করব ঈদের আগেই হেড কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করার। যদি তা না হয়, তাহলে ঈদের পরেও চলবে।’

হেড কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, ঈদের আগেই অর্থাৎ ৯ আগস্ট বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা জোরালো বিসিবি সভাপতি ও পরিচালকদের সঙ্গে হেসনের আলোচনার পরই । জালাল যদিও জানিয়েছেন যে ডমিঙ্গো এবং হেসনের সঙ্গে বিসিবির করা সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন আরেকজনও। তাঁকেও ডাকার কথা বলা হয়েছে সাক্ষাত্কারের জন্য । তবে ওই সূত্র জানিয়েছে, আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে থাকা অবস্থায়ই হেসন ঢাকায় আসছেন। সাক্ষাত্কার দেওয়ার পরপরই চূড়ান্ত ঘোষণাও আসতে পারে । স্টিভ রোডসের ক্ষেত্রেও যেমনটি হয়েছিল ।

এটিও জানা গেছে যে সাক্ষাত্কার দিলেও নানা কারণে বিসিবির জাতীয় দল ভাবনায় ডমিঙ্গো নেই। তাঁকে বরং অন্য কাজে লাগাতেই বেশি উৎসাহী তারা। অবশ্য হেসনকে নিয়েও কিছু ‘যদি-কিন্তু’ আছে। নিউজিল্যান্ডকে ২০১৫-র বিশ্বকাপ ফাইনালে তোলা কোচ গত বছর জুনে নিজ দেশের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবে যোগ দিয়েছিলেন । দুই বছরের সেই চুক্তির বছর পেরিয়েছে মাত্র। এই অবস্থায় তাঁকে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জন্য ‘উইন্ডো’ কিছুতেই দিতে চাইবে না বিসিবি। বাংলাদেশ সাকিব-মুশফিকদের পূর্ণকালীন কোচ হিসেবেই তাঁকে চায় । এটি নিয়ে ‘গো’ না ধরলে ২০২০-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে রোডসের শূন্যস্থান হেসনকে দিয়ে ভরানোরই জোর সম্ভাবনা। যে সম্ভাবনার পালে হাওয়া দিচ্ছে তাঁর অধীনে খেলা ৫৯ টি-টোয়েন্টির মধ্যে কিউইদের শতকরা ৫০ শতাংশের (৩০ জয়, ২৪ হার) বেশি সাফল্যও। সেই সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী কোচের টেস্ট এবং ওয়ানডে সাফল্য তো আছেই!