নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি সহিংসতার ৫টি ঘটনায় মহিলা পরিষদের ক্ষোভ প্রকাশ

রবিবার, জুন ২১, ২০২০,৫:০১ অপরাহ্ণ
0
35

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এক বিবৃতিতে, কোভিড-১৯ সংক্রমনের এই দূর্যোগ সময়কালীন দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি নৃশংস ও বর্বর সহিংসতার ৫টি ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ২০ জুন ও অদ্য ২১ জুন, ২০২০ তারিখ বিভিন্ন দৈনিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় যে-

চতুর্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রীর বাবা-মা বগুড়া জেলার শেরপুর পৌর শহরের খন্দকার টোলা এলাকায় না থাকায় সে নানা-নানীর সঙ্গেই বসবাস করতো। গত ২০ জুন শনিবার সকাল থেকে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ হলে খন্দকার টোলা মধ্যপাড়ায় একটি নির্মাণধীন বাড়ির পাশের ডোবায় স্থানীয়রা মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

আশুলিয়ায় ঘোষবাগ এলাকায় বড়ভাই রুহুল আমিনের বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা নারীর মরদেহ একটি ফাঁকা ঘরের মেঝেতে গলায় রশি প্যাঁচানো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ অন্তঃসত্ত্বা নারীর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ শহরসংলগ্ন চরমালশাপাড়া মহল্লার আসকর আলীর মেয়েকে যৌতুকের জন্য প্রায়ই তাঁর স্বামী জাহিদ হোসেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা শারীরিক নির্যাতন করতেন। গত ২০ জুন ২০২০ তারিখ জাহিদ ও তাঁর পরিবারের লোকজন গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহত গৃহবধূ লাশ উদ্ধার করে।এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের হযেছে।

জয়পুরহাট জেলা আক্কেলপুরে নির্যাতনের শিকার নারী মেহেদী হাসানের সঙ্গে বিয়ের পর জানতে পারেন মেহেদীর স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। এরপর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন কথা কাটাকাটি হলে তারই জের ধরে ছাড়াছাড়ি করার কথা হয়।গত ১৯ জুন নির্যাতনের শিকার নারী বিয়ের কাবিন নামার নকল তুলতে আক্কেলপুরে নিকাহ রেজিস্ট্রারের গেলে মেহেদী শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে চলে যায়। পরের দিন গত ২০ জুন ২০২০ তারিখ নির্যাতনের শিকার নারীর বাবার বাড়ি থেকে ১০ গজ দূরে রাস্তার পাশে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে জানালে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

চূযাডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার এরশাদপুর গ্রামের গোরস্থানপাড়ার ফকির মোহাম্মদের ছেলে আবুল হাশেম ফেরিওয়ালা শিশুকন্যাকে যৌন হয়রানির করে। গত ২০ জুন আবুল হাশেম জিনিসপত্র বিক্রি করতে একই গ্রামের মসজিদপাড়ায় গেলে সে সময় নির্জন স্থানে সাতবছরের এক শিশুকন্যাকে কোলের ওপর বসিয়ে যৌন হয়রানি করলে এলাকার লোকজন আবুল হাশেমকে পুলিশের কাছে সোর্পদ করে।   

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ স্কুলছাত্রী ও অন্তঃসত্ত্বা নারীর রহস্যজনক মৃত্যু, যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূদের হত্যা এবং কন্যাশিশুকে যৌন হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে। স্কুলছাত্রী ও অন্তঃসত্ত্বা নারীর রহস্যজনক মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটনপূর্বক উক্ত ঘটনাসমূহের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছে। একইসাথে যৌন হয়রানির শিকার শিশুর নিরাপত্তাসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে। সেইসাথে এ ধরণের নৃশংস, বর্বর ঘটনা প্রতিরোধে আশুকার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকার ও প্রশাসনের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। ধর্ষণ, গণধর্ষণ, যৌন নিপীড়র, পারিবারিক সহিংসতা এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধে সকল সামাজিক শক্তিকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে