ইতিহাস-ঐতিহ্যের কালের সাক্ষী কৈখালি বাজারের বটবৃক্ষ

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২০,৯:৩৮ অপরাহ্ণ
0
135

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

বাধন রায়, ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার চেচরী রামপুর ইউনিয়নের কৈখালি বাজারে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে প্রায় দেড় শতাধিক বছরের ঐতিজ্যবাহী বটবৃক্ষটি।

কৈখালি বাজারের এখন মধ্যবর্তী স্থানে ইউণিয়ন পরিষদ সংলগ্ন এই অতি প্রচিন গাছটি রয়েছেন। এক সময় বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া স্রোতস্বিনী কৈখালি ভারানী খালটি  বর্তমানে এখন নাব্যতা হারিয়ে এক রকম মরা খাল। প্রায় ৩শত মিটার প্রশস্তের খালটি বর্তমানে ১০-১২ মিটার প্রশস্ততা নিয়ে আধমরা অবস্থায় বয়ে চলেছে এবং শুকনো মৌসুমে খালটিতে পানি থাকে না।

খালটির উভয় পাড়ে প্রকারভেদে ২শ মিটার জায়গা সিকস্থি হয়েছে এবং উভয় পাড়ে সিকস্থি জায়গা বাসিন্দারা ভোগ দখল করছে। কৈখালি বাজারের খালের ভরাট হওয়া জায়গায় অসংখ্য দোকানপাট, এমনকি চেচরীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি সিকস্থি জায়গায় নির্মিত হয়েছে। খালটি কাঠালিয়া উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বিশখালি নদী থেকে ভারানি খাল বের হয়েছে এবং পাশ্ববর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলা সদরের কচা নদীর শাখা, পোনা উপ- নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।

এই খালেরই অপর একটি অংশ কাঠালিয়া উপজেলার আমুয়া বন্দরের বিশখালির শাখা নদী থেকে আর একটি বিশাল  ভাড়ানি খাল কৈখালি বাজারের কাছে এসে মিলিত হয়ে কাঠালিয়া-ভান্ডারিয়া ভারানি খাল নামে সংযুক্ত হয়েছে। কাঠালিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়ন, আমুয়া ইউনিয়ন ও চেচরীরামপুর এই ৩টি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ প্রায় ২০ কিলোমিটারের এই খালটি। ২০কিলোমিটারের দীর্ঘ খালের উভয় পাড়ে সিকস্থি জমির পরিমান কয়েক হাজার একর,যা নদী পারের বাসিন্দারা ভোগ-দখল করছে। এক সময় এই ভাড়ানি খালটি জোয়ার-ভাটায় তীব্র স্রোতের কারনে তুফানমুখি ছিল। কম সময়ে দূরত্ব কমিয়ে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নৌযান এ খালটি ব্যবহার করতো। প্রশস্থ এই ভারানি খাল দিয়ে যাত্রীবাহি নৌযান ও পণ্য পরিবহনের কাগোর্ চলেছে।

বর্তমান সময় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠায় ও খালটি নব্যতা হারানোর কারনে খালের  ব্যবহার সংকুচিত হয়েছে। সময়ের বিবর্তনে খালটির ইতিহাস-ঐতিজ্য ম্লান হয়ে গেলেও কালের সাক্ষী হিসাবে বট বৃক্ষটি দাড়িয়ে আছে।এই বাজারের বর্ষিয়ান ব্যবসায়িরা জানিয়েছে, ছোটবেলা থেকেই বট গাছটিকে তারা এখন যেমন দেখছেন, তেমনি দেখে আসছে এবং তাদের পূর্ব পুরুষের কাছ থেকে শোনা তথ্য অনুযায়ি এই বট বৃক্ষটির বয়স দেড় শতাধিক বছর অতিক্রম করেছে।

বিশাল আকারের ২টি ভাড়ানি খাল বাজার সংলগ্ন এলাকায় এসে সংযুক্ত হওয়ায় খালটি উত্তালমুখি ছিল এবং কথিত রয়েছে কৈখালি বাজারে বট গাছটি সংলগ্ন তৎকালিন সময় ঢেউয়ের মধ্যে পাড়ে নেমে এক দরবেশ এই বট বৃক্ষটির চারা ডুব দিয়ে রোপন করেছিলেন এবং সেই গাছটি ধীরে-ধীরে বড় হয়ে আজকের অবস্থায় এসেছে। 

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে