লক্ষ্মীপুরের গ্রামে-গঞ্জে মাদক বিক্রি দিন দিন বাড়ছে

শনিবার, জুন ২৯, ২০১৯,১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ
0
461

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে বিক্রি হচ্ছে মাদক। এসব এলাকায় মাদক ব্যবহারকারী ও বিক্রেতার সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে নানা অপরাধ। যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরীরাও মাদকাসক্ত হয়ে ভয়ংকর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। 

মাদকের অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর-যুবকরা। মাদকের সহজলভ্যতায় অধিকহারে বিপদগামী হচ্ছে উঠতি বয়সের কিশোররা। অত্যাধুনিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে অতি সহজেই হাতের নাগালে পেয়ে যাচ্ছে মাদক। ফলে উপজেলার সর্বত্র ইয়াবা, গাঁজা, ফেন্সিডিলের ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে।স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, সহজলভ্য হওয়ায় কিশোর, তরুণরা এ মরণনেশায় ঝুঁকে পড়ছে। প্রশাসনের তেমন কোন তৎপরতা না থাকায় এ উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে ইয়াবার জমজমাট ব্যবসা চলছে। ফলে সেবনকারীর সংখ্যাও আশংকাজনক হারে বাড়ছে। 

রায়পুর মার্চ্চেন্টস্ একাডেমীর এক শিক্ষক বলেন, প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত দশটা-এগারোটা পর্যন্ত মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রামের রাস্তায় হেঁটে হেঁটে ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজা বিক্রি করে। প্যান্ট বা শার্টের ভেতর রেখে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তা বিক্রি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ‘উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের সুনামগঞ্জ, নয়ারহাট, বাঁশতলা, মোল্লারহাট, সোনাপুর ইউপির বাসাবাড়ি, চরবগা, রাখালিয়া, চরপাতা ইউপির বোর্ডারবাজার, পশ্চিম চরপাতা সিংহেরপুল এলাকা, বামনী ইউপির বাংলাবাজার, কবিরহাট এলাকাসহ বিভিন্ন গ্রাম্যশহরে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা। এদিকে চরমোহনা, রায়পুর, দক্ষিণ চর আবাবিল, উত্তর চরবংশী, দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়ন ও উত্তর চর আবাবিল ইউপির বেড়িবাঁধ এলাকা, এমপিবাজার সড়ক, হায়দরগঞ্জ ফাঁড়িথানার পেছনের কাইমুদ্দি বাড়ির এলাকা, কাঠেরপুল, ফজুমোল্লা ষ্টেশন, ঝাউডগী ও উত্তর চর আবাবিল গ্রামে সবচেয়ে বেশি মাদক বিক্রি হয় বলে জানা গেছে। 

এছাড়া রায়পুর পৌরসভা বাসস্ট্যান্ড, মধুপুর, মুড়িহাটা সংলগ্ন আখড়া, মুচিহাটা, পোষ্টঅফিস সংলগ্ন ওয়াবদা কলোনি, মহিলা কলেজ সংলগ্ন এলাকা, নতুনবাজার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়ার্কশপ এলাকা, গোডাউন সংলগ্ন নদীর পাড়, পীর ফয়জুল্লা সড়কের ১৫-২০টি স্পটে দেদারছে এ মাদক ব্যবসা ও সেবন চলছে। 

এলাকাবাসী জানান, সন্ধ্যা হলেই মোটরসাইকেলের আনাগোনা বেড়ে যায়। বাড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদেরও। দেখা যায় ৮-১০টি মোটরসাইকেল এদিক সেদিক ছুটে বেড়াচ্ছে। এভাবেই মাদকের কেনাবেচা হয় বলে জানান এলাকাবাসী।

লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মিজানুর রহমান মুন্সি জানান, মাদকের সহজলভ্যতা ও প্রশাসনের তেমন তৎপরতা না থাকায় এ উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে চলছে মাদকের জমজমাট ব্যবসা। এ কারণে সেবনকারীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে, অন্যদিকে অপরাধ ও নৈতিক অবক্ষয়ও বেড়ে চলছে। এখান থেকে উত্তরণ হতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তোতা মিয়া বলেন, নিত্যনতুন কৌশল পাল্টিয়ে ঘুরে ঘুরে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক বিক্রি করে। এদের ধরতে প্রতিদিন পুলিশের টহল চলছে। গত এক সপ্তাহে একাধিক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মাদকের সাথে জড়িত এমন কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে