দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ওয়ার্কার্স পার্টি উদ্বেগ প্রকাশ

বৃহস্পতিবার, মার্চ ৫, ২০২০,৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ
0
51

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

“বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি পলিটব্যুরো গভীর উদ্বেগের সাথে সম্প্রতি দিল্লীতে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে চরম উস্কানীমূলক সাম্প্রদায়িক বক্তব্য ও শ্লোগান প্রদান, তাদের জীবন-জীবিকা কর্মস্থল, গণপরিবহণ ও বাসস্থানে  হেয় করা ও হুমকি প্রদানের ঘটনা লক্ষ্য করছে।

পার্লামেন্টে নাগরিকত্ব সংশোধন আইনপাশ করার পর এই ঘটনাবলীর আরও বিস্তৃতি ঘটেছে। এসব বিষয়  ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও বাংলাদেশসহ পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশসমূহে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি জাতিসংঘ ভারতের সুপ্রীম কোর্টে সিএএ সংক্রান্ত মামলায় পক্ষভুক্ত হতে চেয়ে আবেদন করেছে। বাংলাদেশ সিএএসহ এসব সম্প্রদায়িক ঘটনা সম্পর্কে বিশেষভাবে মর্মাহত এই কারণে যে ভারতীয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রেক্ষাপট হিসাবে বাংলাদেশকে পাকিস্তান ও আফগানিস্থানের সমপর্য্যায়ভুক্ত করে সংখ্যালঘু নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং এখনও ভারতের ক্ষমতাসীন দলের উচ্চ পর্য্যায় থেকে এর পুর্নরুক্তি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে চায় যে, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে রক্তের বন্ধনে বাংলাদেশ-ভারতের যে সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে উঠেছে তার মূলে ছিল অসম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্বকে মিথ্যা প্রমাণ করেছে। ওয়ার্কার্স পার্টি ভারতে সিএএ পাশ হওয়ার সময়েই বলেছে ধর্মীয় বিভাজনের ভিত্তিতে প্রণীত এই আইন উপমহাদেশের দ্বিজাতিতত্বকে পুনপ্রতিষ্ঠিত করেছে। এবং এর প্রতিক্রিয়ায় উপমহাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী জঙ্গীগোষ্ঠী সমূহকে ন্যায্যতা প্রদান করবে ও এসব দেশে সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পথকে প্রশস্ত করবে। দিল্লীর সাম্প্রতিক দাঙ্গার ঘটনাবলী এর প্রমাণ।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি দৃঢ়ভাবে মনে করে যে ধর্মনিরপেক্ষকতা ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক যে ভিত্তির উপর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত এবং বর্তমানে সেই সম্পর্ক বিকাশের এক উচ্চ পর্যায়ে, সেক্ষেত্রে ভারতের ঘটনাবলী অভ্যন্তরীণ চরিত্রের হলেও, ঐ সম্পর্ককে ক্ষুন্ন করবে না কেবল, তার মধ্যে আস্থাহীনতা ও অবিশ্বস তৈরী করবে।

এই অবস্থায় ওয়ার্কার্স পার্টি আশা করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, নাগরীক জীবনে নিরাপত্তাহীনতা, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সকল নিপীড়ন বন্ধে ভারত সর্বপ্রকার ব্যবস্থা নেবে এবং উপমহাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দৃঢ়ভাবে অক্ষুন্ন রাখার ব্যাপারে বাংলাদেশ ও ভারত একসাথে কাজ করবে এবং তাকে এগিয়ে নেবে। ”
পার্টির সভাপতি জননেতা রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে আজ ৪ মার্চ অনুষ্ঠিত পলিটব্যুরোর সভার শুরুতে পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা সভায় এই প্রস্তাব তুলে ধরেন। আলোচনায় অংশ নেন পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড ড. সুশান্ত দাস, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড কামরূল আহসান, কমরেড এ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, কমরেড হাজী বশিরুল আলম, কমরেড নজরুল ইসলাম হক্কানী, কমরেড নজরুল হক নিলু।  

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে