[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
গভীর সাদা পোশাকে পুলিশ ইয়াবা উদ্ধারের জন্য রাতে বাড়িতে প্রবেশ করে । এ সময় দরজা খুলতে বললে ভয় পায় বাড়ির ভেতরে থাকা লোকজন। তারা তখন ভয়ে ‘ডাকাত’ ‘ডাকাত’ বলে চিৎকার শুরু করলে ছুটে আসে প্রতিবেশীরা। কিন্তু আগত পুলিশদের আচরণ পুলিশি না-হওয়ার কারণে ‘ডাকাত’ সন্দেহে এলাকাবাসী আটক করে চার পুলিশ পরিচয়দানকারীকে। পরে ধস্তাধস্তিতে অন্ধকারে একজন কামড় বসিয়ে দেন পুলিশের এএসআই সুমনকে।
খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক পুলিশদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ইয়াবাসহ ব্যবসায়ীকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বাড়িওয়ালাসহ এলাকাবাসীদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পাবনা ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের মাঝদিয়া ইসলামপাড়ায় মওলা বক্সের বাড়িতে গত বুধবার (চলতি মাসের ১২ জুন গভীর রাতে) এই ঘটনাটি ঘটেছে। আসামিরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া। তবে ঘটনাটি পুলিশের অরাজকতা বলে দাবি করছেন এলাকাবাসী। আর পুলিশ দাবি করছে, ঘটনাটি মাদকসংক্রান্ত।
তবে ঘটনাটি বুধবার গভীর রাতে ঘটলেও শুক্রবার রাতেই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে শহরে । আজ (শনিবার) ঘটনাস্থল ঘুরে, হাসপাতাল ও থানা সূত্রে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এলাকাবাসী ও বাড়ির মালিক মওলা বক্স জানান, ঘটনার দিন গভীর রাতে কে বা কারা তার বাড়িতে প্রবেশ করে দরজায় ধাক্কা দেন। এত রাতে ‘কে’ জিজ্ঞাসা করা হলে একজন নিজেকে পুলিশ পরিচয় দেন। দরজা খুলতেই তারা হুড়াহুড়ি করে ঘরের মধ্যে ঢুকে শুরু করেন সমস্ত আসবাপত্র ভাঙচুর । এ সময় তারা ঘরে থাকা নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার লুট করেন। এতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তাদের এ-রূপ আচরণে আমরা ডাকাত বলে সন্দেহ করে চিৎকার শুরু করি। আশপাশ থেকে লোকজন এসে তাদের আটক করে রাখে। আটককৃতদের উদ্ধার করে পরে পুলিশের একটি দল এসে ।
তারা অভিযোগ করেন, পুলিশ এখন তাদের মাদক কারবারি বলে প্রচার করছে। কিন্তু তাদের কেউই মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।
থানা সূত্র জানাচ্ছে, ঘটনার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাদা পোশাকে এএসআই সুমনের নেতৃত্বে অপর তিন এএসআই শামীম, সরোয়ার ও একাব্বুর উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের মাঝদিয়া ইসলামপাড়ার মওলা বক্সের ছেলে মাদক কারবারি মান্নানকে আটক করতে ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ পরিচয় দেওয়ার পর মাদক কারবারিরা তাদের আটক করে রাখে। তাদের কামড়ে এএসআই সুমন এবং ধস্তাধস্তিতে পুলিশের সকলেই মৃদু আঘাতপ্রাপ্ত হন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাদের উদ্ধার করে ।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সুমন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাঝদিয়া ইসলামপাড়া গ্রামে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ আসামি ধরতে গেলে গ্রামবাসী আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আটক করে রাখেন। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে আনে। তবে মওলা বক্সের বাড়ি থেকে নগদ টাকা ছিনিয়ে আনার বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী জানান, মাদকের ইনফরমেশন পেয়ে তারা মান্নান নামের একজনকে আটক করে ইয়াবাসহ। পরিকল্পিতভাবে মাদক কারবারিরা পুলিশের ওপর হামলা করে মাদক ছাড়িয়ে নেয় কারবারিকে। এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়া ও মাদকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।