[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ২৮ মার্চ থেকে দেশের দুস্থ, অসহায়, প্রতিবন্ধী, হিজড়া জনগোষ্ঠিসহ কর্মহীন শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি, জেলা সমাজকল্যাণ পরিষদ, প্রাকৃতিক ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, ভিক্ষাবৃত্তি নিরসন, উপজেলা সমাজকল্যাণ পরিষদ এর মধ্যে সারাদেশে ১ হাজার ১৯২টি ইউনিট অফিসে ২২ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। ঢাকা জেলায় প্রায় ৩ কোটি টাকাসহ জেলা প্রতি জনসংখ্যা ও দারিদ্রতার হার বিবেচনায় ২০ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সমাজসেবা অধিদফতর থেকে বিশেষ অনুদান হিসেবে জেলা পর্যায়ে ৩ কোটি টাকা বিতরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ অর্থের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলায় দুস্থ, অসহায়, প্রতিবন্ধী ব্যাক্তি, পথশিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের কাজ চলছে। বাড়িতে অবস্থানের ঘোষণায় কর্মহীন হয়ে পড়া ঢাকা শহরের ৫০০ পরিবারকে প্রতিদিন ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি পেয়াজ, আধালিটার সয়াবিন তেল ও একটি করে সাবান প্রদান করা হচ্ছে। ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সমাজসেবা অধিদফতরের উদ্যোগে ৩ হাজার ৮৪টি দুঃস্থ ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
ঢাকা শহরের ভবঘুরে ও বাস্তুহীন মানুষদের করোনার ঝুঁকিহ্রাস ও আবাসন সহায়তা দানের লক্ষ্যে সমাজসেবা অধিদফতর গৃহহীনদের সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রসমূহে স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু করেছে। জনসমাগম পরিহারের লক্ষ্যে দেশব্যাপী চলমান উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বয়স্কভাতা, বিধবা ও স্বামীনিগৃহিতা ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীভাতা’র নতুন সুবিধাভোগী বাছাই কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়াও নির্দিষ্ট দিনে ব্যাংক থেকে ভাতার অর্থগ্রহণের কারণে প্রচুর জনসমাগম এড়াতে সকল তফসিলি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সপ্তাহে তিন বা ততোধিক দিনে ভাতার অর্থপ্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ইউনিসেফ বাংলাদেশ-এর কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক পরিচালিত রোহিঙ্গা শিশুসুরক্ষার চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে সুবিধাবঞ্চিত ও এতিম ৪ হাজার ২১০ জন রোহিঙ্গা শিশু’র প্রতিপালনকারী ৩ হাজার ৪২ জন কেয়ার গিভারকে জনপ্রতি মাসিক ২ হাজার টাকা হিসেবে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ-২০২০ এর জন্য ৪ হাজার টাকা হিসেবে মোট প্রায় ১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হবে।
সরকারি শিশু পরিবার, ছোটমণি নিবাস, শেখ রাসেল দুঃস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, দুঃস্থ শিশুদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, শান্তি নিবাসের এতিম ও দুঃস্থ, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক নিবাসীদের এসব প্রতিষ্ঠানে করোনা সংক্রমণরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় শিশুসুরক্ষামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে ইউনিসেফ বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সমাজকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষায় ১০০ পিপিই গাউন, ২৫০টি ভাইরাস প্রতিরোধী চশমা, ৫০০ ভাইরাস প্রতিরোধী হ্যান্ডগ্লাভস্ ও ২৫০টি মাস্ক সরবরাহ করেছে। মাঠপর্যায়ে হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয়ে রোগীসেবায় কর্মরত সমাজকর্মী, খাদ্যসহায়তা প্রদানকারী সমাজকর্মী, পরিবহনসহায়তাকারী, শিশুসুরক্ষায় নিয়োজিত সমাজকর্মীদের এসব উপকরণ মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।