উত্তরাঞ্চলের ৫জেলায় সেচ সুবিধা সম্প্রসারণে ২৫০ কোটি টাকার প্রকল্প

বুধবার, মে ১২, ২০২১,১২:২০ পূর্বাহ্ণ
0
44

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

নাসরিন নাজ : বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে নদী-খালের পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য ২৫০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)।

এ প্রকল্পের আওতায় রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলার ৩৫টি উপজেলা সেচ সম্প্রসারণ সুবিধার আওতায় আসবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমান খান।

তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় পুনঃখননের মাধ্যমে রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাটের ৩৫টি উপজেলার বিভিন্ন পরিত্যক্ত খাল, বিল, পুকুরের পানির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। পাঁচ বছরে ২৩০ কিলোমিটার খাল, ১১টি বিল, ১১৮টি পুকুর পুনঃখনন করে সঞ্চিত ও ধারণকৃত পানির সাহায্যে প্রায় ১০ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া ১৩০টি এলএলপিতে ১৩০ কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণ করে সেচের পানির অপচয় রোধের মাধ্যমে কৃষকের সেচ ব্যয় হ্রাস ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক জানান, বিদ্যমান জলাবদ্ধতা দূর করে আরো ৩৫০ হেক্টর অনাবাদি পরিত্যক্ত জমি চাষের উপযোগী করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি এ প্রকল্পের আওতায় সৌরশক্তি চালিত পাটকুয়া খননের মাধ্যমে স্বল্প পানিগ্রাহী ফসল, সবজি উৎপাদনের ব্যবস্থা করে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন নিশ্চিত করা হবে। কর্মসূচির আওতায় প্রকল্প এলাকায় ২ কিউসেক ক্ষমতা সম্পন্ন সৌরশক্তি চালিত এলএলপি ৩০টি, বিদ্যুৎ চালিত এলএলপি ১০০টি, সৌরশক্তি চালিত ৫০টি পাটকুয়া খননের মাধ্যমে স্বল্প পানিগ্রাহী ফসল উৎপাদনের ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি আরো জানান, এ প্রকল্পের আওতায় বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলায় দুই লাখ ৩০ হাজার বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ এবং ঔষধি গাছের চারা রোপণ করে পরিবেশ বান্ধব ভূ-কাঠামো গড়ে তোলা সহ অতিরিক্ত বনজ সম্পদ সৃষ্টি এবং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন সহ পুষ্টিমান বৃদ্ধি করা হবে। পাশাপাশি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১০টি নিজস্ব বিভাগীয়, রিজিওনাল এবং জোনাল অফিস ভবন নির্মাণ করা হবে।

বিএমডিএ সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থ বছরে উল্লেখ্যিত জেলায় প্রকল্পের চলমান কার্যক্রমের আওতায় মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, পীরগঞ্জ, নাগেশ্বরী উপজেলার দুটি বিল ও ১২টি পুকুর খনন, ১০টি বিদ্যুৎ চালিত, ১০টি সৌরশক্তি চালিত এলএলপি স্থাপন, ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ ২০টি ভূ-গর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণ, ১০টি পাটকুয়া নির্মাণ, ৪০ হাজার বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ এবং ঔষধি গাছের চারা রোপণ কর্মসূচি প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। এর মাধ্যমে প্রায় ৫০০ হেক্টর অনাবাদি জমি এরই মধ্যে সেচ সুবিধার আওতায় এসেছে। অবশিষ্ট কাজ আগামী জুন মাসের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। এছাড়া দুই জেলায় তিনটি অফিস ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

বিএমডিএ জানিয়েছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সৌরশক্তি চালিত ৮০টি সেচযন্ত্র স্থাপনের ফলে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৭০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের মাধ্যমে সেচ কাজে পরিবেশবান্ধব আবহ সৃষ্টি এবং বিদ্যুতের ওপর চাপ হ্রাস পাবে। পানির অপচয় রোধ, সেচ দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ব্যয় হ্রাস পাবে। এর ফলে ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’র অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখা সহ ২০৩০ সালের মধ্যে ভূ-উপরোস্থ পানির ব্যবহার ৩০ শতাংশ উন্নীত করা সহজ হবে।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে