[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
নিজস্ব সংবাদদাতা : গত দুইটি বছর ভয়ংকর করোনার বিশ্ব ব্যাপী প্রাণসংহারি সংক্রমনে মসজিদে মুসলমানদের শুক্রবারের জুমার নামাজ হতে শুরু করে পবিত্র শবেবরাত, ঈদগাহে যেয়ে দুই ঈদের নামাজ পড়া আর নামাজ শেষে কোলাকুলি করে আত্মীয় স্বজন বন্ধু- বান্ধবদের বাসায় মজা করে বেড়ানো আর খাওয়া-দাওয়া করা, তারপর অনেকের মক্কা শরীফে যেয়ে পবিত্র হজব্রত পালন, বাংলা নববর্ষের ৩/৫/৭ দিনের বৈশাখী মেলা, হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব, খ্রীষ্টানদের বড় দিনের মহোৎসবসহ আরও বিভিন্ন মেলা – উৎসব, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানগুলো কোনকিছুই প্রাণ খুলে, মন ভরে উপভোগ করতে পারেনি এ দেশের মানুষ।
মাহে রমজান মাসের বিভিন্ন দিনে অসংখ্য ইফতার পার্টিতে যোগদান, ইফতারি বিনিময়ের অন্য রকম আনন্দ-প্রশান্তি অন্ত বাঙালী কোন কিছুই করতে পারেনি। গেল দু’বছর যাবৎ মুখে ঠুস( মাস্ক), মাথায় নীল-সাদা রঙের ঢাকা পর্দা, দু’হাতে গ্লাভস আর এপ্রোন পড়ে সারা শরীর ঢেকে ভিন গ্রহের অদ্ভুত এলিয়েনদের মত অদ্ভুত পোশাক-আশাকে সজ্জিত হয়ে যেন যুদ্ধে গমনের মত অল্প সময়ের জন্য ঘরের বাহিরে বের হয়ে আবার তাড়াতাড়ি ঘরের ভিতর ঢুকে পরে প্রতি মুহূর্তে উৎকণ্ঠায় টিভির পর্দায় চোখ ছিল স্বাস্থ্য বিভাগের বুলেটিনের উপর।
আজ আরো কতজন মারা গেল..! আরও কতশত-হাজার-লক্ষ লোক আক্রান্ত হয়েছে? এরপর আবার কখন, কোন সময়ে কার উপর চড়াও হয়ে বসে রাক্ষসী করোনা কে জানে? এটাই ছিল গত ২০২০ হতে ২০২১ পর্যন্ত দুই বছরের জীবনের চালচিত্র।
এসব দেখে তখন আর চুপ করে থাকতে পারিনি। আর তাই কলম হাতে তুলে নিয়ে লিখে ফেললাম ২০২০ এর জুনে ” অন্য রকম দিন যাপনে করোনাকালের চালচিত্র ” আর ২০২১ সালে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট নামক বহুরূপী ভয়ংকর করোনার আক্রমণে দিশেহারা মানুষের করুণ জীবন নিয়ে জুলাই,২০২১ মাসে লিখলাম ” করোনা, লকডাউন ও কষ্টদায়ক মাইকিং…..!” শীর্ষক দুটি নিবন্ধ যা জাতীয় পত্রিকা “দৈনিক যুগান্তর”, দৈনিক দেশকাল, ঢাকা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর এবং বিভিন্ন জেলা হতে প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক পত্রিকায় এবং প্রখ্যাত অনলাইন পত্রিকা দৈনিক প্রভাতফেরী, দৈনিক মানব সংবাদ, কলম 24 প্রভৃতিতে প্রকাশিত হয়।
শুধু তাইনয় ঐ দুটি বিশেষ নিবন্ধ জাতীয় ইংরেজি দৈনিক “The Asian Age “, একমাত্র বেসরকারি ইংরেজি ম্যাগাজিন “The Reflector”–এ প্রকাশিত হয়। এই স্মৃতিগুলোই মনে পড়ে গেল পাক্কা দুই বছর পর কৃষিবিদ গ্রুপ কর্তৃক আয়োজিত ইফতার পার্টিতে উপস্থিত থাকার সুবাদে। এতক্ষণ উপরের কথাগুলো বলছিলেন আলোচনা ও ইফতার পার্টিতে যোগদানকারী আমন্ত্রিত অতিথি কৃষিবিদ শেখ মোঃ মুজাহিদ নোমানী,” বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত কৃষি সাংবাদিক, বিশিষ্ট লেখক, উদ্ভাবক, অবঃপ্রাপ্ত উপ পরিচালক ও জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত পরিষদ বাংলাদেশ।
গত ৯ এপ্রিল,২০২২ তারিখে মিরপুর-১৪ তে অবস্থিত বিশাল পুলিশ স্টাফ কলেজ (পিএসসি) কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হলো কৃষিবিদ গ্রুপের চমৎকার ইফতার পার্টি। কনভেনশন সেন্টারের একতলা-দুতলা মিলিয়ে কৃষিবিদ গ্রুপের প্রায় ১৫০০ শেয়ার হোল্ডার ও শুভানুধ্যায়ীসহ প্রায় দু’হাজার আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন ” কৃষিবিদ গ্রুপের সাফল্যের ২১ বছর” শীর্ষক আলোচনা ও জাঁকজমকপূর্ণ ইফতার পার্টিতে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালের প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীদের আইকন এসিআই গ্রুপের এর স্বনামধন্য চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশনের সম্মানিত সভাপতি এম. আনিস উদ-দৌলা। অপর বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল ( বিএআরসি)এর সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান, কৃষিবিদ গ্রুপের উপদেষ্টা, স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত জাতীয় এমিরেটাস বিজ্ঞানী ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা অপর আরেকটি অনুষ্ঠানে থাকায় উপস্থিত থাকতে পারেননি।
মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কৃষিবিদ গ্রুপের উপদেষ্টা বিচারপতি আব্দুর রউফ। সাবেক সচিব ড. জহুরুল করিম ও সাবেক অপর সচিব আইয়ুব মিয়া, ওয়াসার সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চীফ ইঞ্জিনিয়ার ও কৃষিবিদ গ্রুপের উপদেষ্টা ইন্জিনিয়ার মোঃ রহমতুল্লাহ। কৃষি ফাউন্ডেশন ও কেএমসিএসএল-এর চেয়ারম্যান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ তারিক হাসান, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য ড. মো. শহিদুর রশীদ ভূঁইয়া ও সাবেক দুই উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহী-আলম ও প্রফেসর ড. মোঃ কামাল উদ্দিন, ডিএই-এর সাবেক দুই মহাপরিচালক মোঃ ইব্রাহিম খলিল ও মোঃ এনামুল হকসহ আরও অনেকে।
বিকাল ৪. ০০ ঘটিকায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমেই উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম সরকার, চেয়ারম্যান, কৃষিবিদ গ্রুপ।
এরপর ” কৃষিবিদ গ্রুপের সাফল্যের ২১ বছর ” বিষয়ক আলোচনায় সংক্ষিপ্ত তথ্য চিত্রসহ কৃষিবিদ গ্রুপের বিগত ২১ বছরের সাফল্যের ও “ভিসন ও মিশন ২১০০” এর নানা দিক তুলে ধরেন, কৃষিবিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী ড. আলী আফজাল। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম বলেন, কৃষিবিদ গ্রুপ প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত ২১ বছরে দেশের অর্থনীতিতে, বিশেষ করে কৃষি সেক্টরে যে ভূমিকা পালন করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে কৃষিবিদ গ্রুপ সর্বদাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও দোয়া পরিচালনা করেন মোঃ আব্দুর রউফ সাবেক বিচারপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান, কৃষিবিদ গ্রুপ।