[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
এক ব্যক্তি দেনার দায়ে মানসিক অবসাদগ্রস্ত ছিলেন । আর সেই অবসাদ থেকে প্রথমে নিজের পোষা কুকুরকে গুলি করে তিনি হত্যা করলেন । তারপর আত্মহত্যা করেছেন নিজের বন্দুকের গুলিতে । ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনায় চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ।
সেদিন ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় জয়নগর থানার নারায়ণীতলার চৌধুরী পাড়ার বাসিন্দাদের। ঘুম চোখে তড়িঘড়ি তাঁরা বাইরে বেরিয়ে আসেন । খোঁজ নিয়ে জানেন, ওই পাড়ার বাসিন্দা শুভঙ্কর রায়চৌধুরীর বাড়ি থেকে পাওয়া গেছে ওই আওয়াজ । সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা ছুটে যান শুভঙ্কর রায়চৌধুরীর বাড়িতে ।
বাড়ির মধ্যে ঢুকে তাঁরা দেখেন, ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন শুভঙ্কর রায়চৌধুরী এবং তাঁর দুই পোষা কুকুর। একটি দোনলা বন্দুক মৃতদেহের পাশেই পড়ে রয়েছে। ঘরের মেঝে ভেসে যাচ্ছে রক্তে।
শুভঙ্কর রায়চৌধুরীর স্ত্রী জানান, তিনি ঘুমিয়েছিলেন ওপরের ঘরে । সকালে গুলির শব্দ পেয়ে নীচে নেমে আসেন। নীচে নেমে দেখতে পান, স্বামী শুভঙ্কর রায়চৌধুরী ও দুই পোষা কুকুর মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছটফট করছে। দুই পোষা কুকুরকে মেরে শুভঙ্কর রায়চৌধুরী নিজেও আত্মঘাতী হয়েছেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে জয়নগর থানার পুলিশ। মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য ।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় অটোচালক শুভঙ্কর রায়চৌধুরী। তাঁর বাবার নামে লাইসেন্স করা ওই বন্দুকটি তাঁদের বাড়িতে আছে দীর্ঘদিন ধরেই । দেনার দায়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন শুভঙ্কর। তার ওপর সময়মতো কিস্তির টাকা না দেওয়ায় বুধবার তাঁর অটোটি বাজেয়াপ্ত করে নেয় ঋণপ্রদানকারী অর্থলগ্নি সংস্থাটি। এর ফলে মানসিকভাবে শুভঙ্কর আরও ভেঙে পড়েন । মা, বোন, স্ত্রী ও তিন বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে সংসারে তিনি-ই ছিলেন একমাত্র উপার্জনকারী। একদিকে দেনা, অন্যদিকে অটোটিও হাতছাড়া হওয়ায় তিনি একদম মুষড়ে পড়েন । আর সেটাই তাঁকে ঠেলে দেয় আত্মহত্যার দিকে । পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে । বন্দুকটির লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজপত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।