[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এক বিবৃতি মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক হিন্দু বিধবা নারীদের স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষিজমিতে ভোগ-দখল করার বিষয়ে রায় ঘোষণা করায় সন্তোশ প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ২রা সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখ মাননীয় বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর একক হাইকোর্ট বেঞ্চ সিভিল রিভশন মো: নং ২৪৪৭৭/২০০৪, জোতিন্দ্র চন্দ্র মন্ডল- আবেদনকারী, বনাম গৌরী দাসী- প্রতিপক্ষ, মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষিজমিতে বাংলাদেশের হিন্দু বিধবা নারীদের আইনগত অধিকার দিয়েছেন। মহামান্য আদালতের আদেশ অনুযায়ী হিন্দু বিধবা নারীদের স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষিজমিতে ভোগ-দখল করার অধিকারী। ইতিপূর্বে বিধবা নারীরা শুধু অকৃষি জমির অধিকারী ছিলেন। এই ইতিবাচক রায় স্বামীর সকল সম্পত্তিতে হিন্দু বিধবা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠতার ক্ষেত্রে মাইলফলক। বাংলাদেশে প্রচলিত বৈষম্যমূলক হিন্দু পারিবারিক আইনে নারীরা সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী হন না শুধু জীবনস্বত্ব ভোগ করতে পারেন।
বাংলাদেশের সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে এবং নারী নীতিতেও সম্পদ-সম্পত্তিত্বে সম-অধিকার নারীর অধিকার নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা থাকলেও এদশে প্রচলিত পারিবারিক আইনে সম্পদ-সম্পত্তিতে নারীর সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়নি। এ দেশের হিন্দু বিধবাদের স্বামীর সব সম্পত্তিতে আইনগত অধিকার নিশ্চিত করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন সেখানে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীর সমানাধিকারের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি ইতিবাচক রায়। ভবিষ্যতে হিন্দু আইনের সংস্কার এবং নারী সমাজের আন্দোলনে নারীদের অন্যান্য সম-অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রেও এই রায় একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের এই ইতিবাচক রায় বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী। এই রায়ের আলোকে নারী-পুরুষ ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য সম্পদ-সম্পত্তিতে সম-অধিকার নিশ্চিত করে আইন তৈরীর জোর দাবি জানচ্ছে। সেইসাথে সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের ঘোষণা এবং সিডও সনদের আলোকে বাংলাদেশে প্রচলিত বৈষম্যমূলক পারিবারিক আইন (বিবাহ-বিচ্ছেদ, সম্পদ-সম্পত্তিতে অধিকার, অভিভাকত্ব, দত্তক) সংস্কার করে সকল নাগরিকের জন্য সমতাপূর্ণ ইউনিফরম বা অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে।