স্বাধীনতা যুদ্ধে সাধারণ মানুষের অবদান মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে কম নয়: চসিক মেয়র

সোমবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯,১০:১৩ পূর্বাহ্ণ
0
73

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের দেশের সাধারণ মানুষ যারা মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদে আশ্রয় এবং ভরণ পোষণসহ সার্বিক সহযোগিতা করেছে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে কোন অংশের কম নয়। তিনি আজ রবিবার সন্ধ্যায় বিপ্লব উদ্যানের আধুনিকায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন উদ্বোধন কালে এসব কথা বলেন। স্থানীয় কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নান, চসিক সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেসমিন পারভীন জেসী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, স্টাইল লিভিং আর্কিটেক্টস লি. এর স্থপতি মো. মিজানুর রহমান ও চসিক আর্কিটেক্টস আবদুল্লাহ ওমর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিক সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেম, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ । তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য তারা জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। তাদেরকে সাধারণ মানুষ আশ্রয়সহ বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়েছিলেন বলে তারা নিরাপদ ছিলেন। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি আরো বলেন, আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। এ নগরে যারা বসবাস করে সেসব হ্নত দারিদ্রদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের করণাদি আছে। যাদের কোন ধরনের টিকেট ক্রয় করে রাইডস দেখার সামার্থ নেই। সেসব হ্নত দরিদ্র ও দরিদ্র শিশুদের সপ্তাহে একদিন বিনামূল্যে রাইডস দেখার সুযোগ দেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন, এ অঞ্চলের আশে পাশে অভুক্ত মানুষের অন্ন দেয়ার উদ্যোগও নেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এ ব্যাপারে তিনি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসমূহকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। চট্টগ্রাম নগরীকে স্বয়ংসম্পূর্ণ আধুনিক ও নিরাপদ নগরী গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন, পরিকল্পিতভাবে এ নগরে সব কিছুই করা হবে। নগর পরিকল্পনাবিদদের সমন্বয়ে নগরীতে বিশাল এলাকা জুড়ে একটি স্মৃতিশোধও নির্মাণ করা হবে। সিটি মেয়র বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে স্বাধীন করেছিলেন সকল বাঙালির জন্য সকল মানুষের জন্য। মুক্তিযুদ্ধে এদেশে সাধারণ মানুষের ভূমিকা ছিল অন্যতম। তাই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে এ উদ্যানটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন, আমরা ৬ দফার কথা বলি, কিন্তু ৬ দফা কি এ প্রজন্মের অনেকেই জানেন না। উদ্যানের প্রতিটি প্রবেশপথে ৬ দফা লিখন রয়েছে। তা এ প্রজন্মের নাগরিকরা প্রবেশের মূর্হুতে তা জানতে পারবে। উদ্যানটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও সৌন্দর্য রক্ষার কথা উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন এ উদ্যানের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রাখার দায়িত্ব দর্শণার্থীদের। এ ব্যাপারে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। নগরীর নাসিরবাদস্থ বিপ্লব উদ্যান আধুনিকায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন উদ্বোধন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব জায়গার উপর আউট সোসিং এর মাধ্যমে এই সৌন্দর্যবধন কাজ সম্পন্ন হয়। রিফর্ম লিঃ এবং স্টাইল লিডিং আর্কিটেক্টস লিঃ নামক বেসরকারী উদ্যোক্তাদের উদ্যোগে এই সৌন্দর্যবধনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যয় হয়েছে ৭ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি ২০ বছর দেখভাল করবে। এই উম্মুক্ত স্থানটি বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের ষোল ডিসেম্বর পর্যন্ত ধাপে ধাপে আন্দোলন সংগ্রামের তথ্য ও ইতিহাস আগামী প্রজম্মদের উদ্ধুদ্ধ করার লক্ষে বিভিন্ন স্থানে মুর‌্যাল স্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ করে ”৬৬ ভাষা আন্দোলনের ভাস্কর্য,”৫২ সালের ৬ দফা আন্দোলন ও ৬ দফার বিবরণ, ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ,”৭১সালে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীতার বিজয় শিখা এই সোল স্কোয়ারে রয়েছে। এছাড়া এই উদ্যানে উন্মুক্ত পার্কে প্রশস্ত ও দীর্ঘ ওয়াকওয়ে, বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের মানসিক প্রশান্তির লক্ষে উম্মুক্ত প্লাজা এবং নির্মল বাতাসের জন্য উদ্যান, জলাধার ও ফোয়ারা তৈরি করা হয়েছে। উদ্যানের চারিপার্শ্বের প্রাচীর অপসারণ করে বিপ্লব উদ্যানকে ২০ ঘন্টা উন্মুক্ত প্লাজায় পরিণত করা হয়। এতে নগরবাসীর মানসিক প্রশান্তির জায়গা হয়ে ্উঠবে এবং পার্কে প্রবেশের ক্ষেত্রে টিকেট লাগবে না। পার্কে বেড়াতে পারবেন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ। পার্কে বিশাল অংশ জুড়ে পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছে হরেক রকম ফুল ও সৌন্দর্যবর্ধনের গাছপালা। মানসিক প্রশান্তির জন্য থাকবে আলোকিত জলাধার ও সুবিশাল গ্লাস টাওয়ার । এতে আলোক স্তম্ভের প্রতিবিম্ব প্রতীয়মান হবে। জলাধারের মাঝে থাকবে দৃষ্টিনন্দন বর্ণিল ফোয়ারা। ক্লান্তি দুর করতে থাকবে বসার বেঞ্চ ও গ্যালারী। মাঠ জুড়ে থাকবে এলইডি লাইট,গার্ডেন লাইট,আন্ডার ওয়াটার লাইট । ফলে সন্ধ্যার পর আলো ঝলমলে হয়ে উঠবে উম্মুক্ত পার্কটি।এছাড়া শিশুদের খেলাধুলার জন্য থাকছে বিভিন্ন ধরনের রাইড সরঞ্জাম । পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য গনশৌচাগার সার্বক্ষনীকভাবে উন্মুক্ত থাকবে। রক্ষনাবেক্ষনের জন্য থাকছে প্রাইভেট ম্যানটেইনেন্স সুবিধা। অত্যাধুনিক বাস স্টপেজের পাশাপাশি থাকছে ফ্রি ওয়াই-ফাই, ইনফরমেশন ক্যাশ মেশিন, কিডস কর্ণার, ফুড কোর্ট, এটিএম প্লাজা, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন, মেনেজমেন্ট রুম ইত্যাদি। আরো থাকবে দর্শণার্থীদের জন্য খাদ্য ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়ের ব্যবস্থা। স্বাগতিক কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম তার বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষে বায়ান্ন থেকে একাত্তর মহান বিজয় দিবস পর্যন্ত স্বাধীনতার গৌরবগাঁথা ইতিহাস প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরার লক্ষে ও সবুজ নগরায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের অন্যতম সবুজ উদ্যান আধুনিকতার ছোঁয়ায় সজ্জিত নগরীর শুলকবহর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে সৌন্দর্যকরণে কাউন্সিলর সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে