[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এবং পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান গতকাল সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় হাওরে কৃষক ও শ্রমিকদের ধান কাটায় উৎসাহ দিতে এবং বোরো ধান কাটার অগ্রগতি দেখতে পরিদর্শন করেন।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জের ডুংরিয়ায় পরিদর্শন শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ সময়টা বোরো ধান কাটার মৌসুম। আমাদের সারা বছরের মোট চাল উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি যোগান দেয় বোরো ধান। সেজন্য, শুধু হাওর নয়, সারা দেশের ফসল সুষ্ঠুভাবে ঘরে তোলা জরুরি। এটি করতে পারলে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, করোনার বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যেও হাওরের বোরো ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা এসে ধান কাটছেন। পাশাপাশি হাওরের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ধান কাটা যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশে হাওরের কৃষক যাতে সহজে যন্ত্রপাতি কিনতে পারে সেজন্য যন্ত্রের দামের ৩০% দেয় কৃষক এবং ৭০% দেয় সরকার । একই সাথে, দেশের অন্য এলাকা থেকে হাওরের আগাম বোরো ধান কাটার জন্য কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার নিয়ে আসা হয়েছে। এর ফলে ইতোমধ্যে হাওরের ৬৫% বোরো ধান কৃষক ঘরে তুলতে পেরেছে। সুনামগঞ্জসহ অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ৭৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।
এসময় কৃষিমন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী নতুন ২টি হারভেস্টার কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে অতিসম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত ১০০ কোটি টাকার ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন । সারাদেশে ধান কাটা সহজতর করতে মোট ২০০ (আগের ১০০ ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত ১০০) কোটি টাকার মাধ্যমে প্রায় ১৩০০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৯৩৪টি রিপার, ২২টি রাইস ট্রান্সপ্লানটারসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের কাছে সম্প্রতি পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য এবং কৃষি খাতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। এই দুটি খাত একে অপরের পরিপূরক। স্বাস্থ্য ও কৃষি ছাড়া বাঁচা যাবে না। সেজন্য আগামী বাজেটে কৃষি খাতে আরও বরাদ্দ বাড়ানো হবে। যাতে করে কৃষিকে আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকীকরণ করে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়।
পরে কৃষিমন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী কৃষকদের মাঝে সাবান, মাস্ক, গামছা ও লুঙ্গি বিতরণ করেন। এসময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার সব সময় কৃষক ও শ্রমিকদের পাশে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি কাজের সময় বজ্রপাতে কেউ মারা গেলে তাঁর ত্রাণ তহবিল থেকে ১ লাখ টাকা করে অনুদান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুরক্ষার সাথে কৃষি কাজ চালিয়ে যেতে কৃষকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মন্ত্রী আহ্বান জানান। যাতে করে করোনা পরিস্থিতিতেও কৃষি উৎপাদন অব্যাহত থাকে। কেউ অসুস্থ বা করোনাক্রান্ত হলে সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতাও প্রদান করা হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।