[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত চসিক মেয়র পদপ্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম বলেন, ব্যাক্তিগত কোন চাওয়া পাওয়ার চিন্তা নিয়ে আমি রাজনীতি করিনি। ৬৭ সালে ছাত্রাবস্থায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে রাজনীতি শুরু করেছি। লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানী শাসন শোষন হতে মুক্তি লাভ। সে পথেই চুড়ান্ত স্বাধীনতার পথে হেঁটেছি। বুকে বল ছিল স্বাধীনতা আসবেই, কিন্তু জানা ছিলনা কবে সে স্বাধীনতা পাব। সশস্ত্র যুদ্ধ সংগঠনে ছাত্রলীগের গোপন নিউক্লিয়াস টিমের হয়ে কাজ করেছি, ৭১এ সীমিত অস্ত্রবল নিয়ে পূর্ণ শক্তি সম্পন্ন পাক বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছি। কোন নিশ্চয়তা ছিল না যে, বেঁচে থাকব কিনা। সেই থেকে আজ পর্যন্ত যা যা করেছি জনস্বার্থেই করেছি।
গতকাল শনিবার বাকলিয়ার কালামিয় বাজারে নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ‘মুক্তি’ করোনা আইসোলেশন সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা ও সংশ্লিষ্টদের সম্মাননা প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আইসোলেশন সেন্টারটির সমম্বয়ক ইফতেখার কামাল খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় রেজাউল করিম চৌধুরী আরো বলেন, করোনার কারনে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্থগিত হয়, যখন প্রচারণার প্রায় শেষ দিক। প্রচারকার্যের সমস্ত ক্লান্তি ভুলে আমার তারুন্যের দিনগুলোর প্রেরণা নিয়ে মাঠে রয়ে গেলাম। লক্ষ্য এবার, করোনার সংক্রমন থেকে মুক্ত রাখতে হবে মানুষকে। মানুষকে সচেতন করতে নিজ উদ্যোগে স্বাস্থ্যবিধি সম্বলিত সতর্কতা ও সচেতনতামূলক হ্যান্ড বিল ছাপিয়ে নিজে বিতরন করলাম, গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জীবানুনাশক ছিটিয়ে নেতাকর্মীদেরকে উদ্বুদ্ধ করলাম। নিম্ম আয়ের মানুষসহ নিম্ম মধ্যবিত্তদের সাবান, স্যানিটাইজার, মাস্ক, জীবানুনাশক ইত্যাদি স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরন করেছি সাধ্যমত। লক ডাউন ঘোষিত হলে, জীবন ও জীবিকা দু’দিক রক্ষা করতে নিজ উদ্যোগে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা প্রেরণ করেছি, নিজে গিয়ে বিতরন করেছি। চেষ্টা করেছি ভবঘুরে থেকে শুরু করে নিম্মবিত্ত, নিম্ম মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত সকল শ্রেণী পেশার মানুষ, মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, আশ্রম সব জায়গায় সহায়তা প্রদান করতে।
নানা অপপ্রচার ও মিথ্যাচারে প্রভাবিত ডাক্তার নার্সদের মধ্যে করোনা ভীতি, বেসরকারী হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় অনাগ্রহ, অসাধু ওষুধ ব্যাবসায়ীদের অপতৎপরতায় রোগী নিয়ে চট্টগ্রামবাসী যখন বিভীষিকাময় পরিস্থিতির স্বীকার, একটু অক্সিজেন পাওয়ার জন্য রোগী ও স্বজনদের আহাজারি শুনে এবং ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা দেখে ঘুমাতে পারিনি সে দিনগুলোতে। তাই, নিজ উদ্যোগে বিনামূল্যের এই মুক্তি আইসোলেশন সেন্টারটি শুরু করি। পাশাপাশি নিজে এবং অন্যদের উদ্ধুদ্ধ করে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে হ্যালো ডাক্তার ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম চালু করেছি। এখন আমাদের ডাক্তার নার্সদের মধ্যে আর করোনাভীতি নেই বললেই চলে। ঊনারা এখন পূর্ণ উদ্যামে রোগী সেবায় কাজ করছেন, অক্সিজেন সংকটও আর নেই। তাই যে কোন সময় প্রয়োজন পড়লে আবারো এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ার প্রতিশ্রুতি রেখে আপাতত ‘মুক্তি’ আইসোলেশন সেন্টারে কার্যক্রম বন্ধ রাখছি। স্যালুট জানাচ্ছি সকল ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান, ওয়ার্ডবয়, আয়া ও সকল শুভানুধ্যায়ীদের। গত তিনমাসে তারা ২৯৮ জন করোনা আক্রান্ত বা করোনা সন্দেহে আসা রোগীদের সেবা দিয়েছেন। আগামীতেও প্রয়োজনের তাগিদে আপনাদের সাড়া পাব, আশাবাদ ব্যক্ত করছি। এ সময় তিনি সাধারণ রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান অব্যাহত রাখবেন বলেও ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৬নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের সভাপতি সামশুল আলম, বক্সিরহাট ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ফয়জুল্লাহ বাহাদুর, পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক আলী নেওয়াজ, ৬নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফুল আলম, বেসরকারি কারা পরিদর্শক আজিজুর রহমান আজিজ, ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুল আলম মিয়া, ১৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী জেসমিন আকতার রুজি, ১৮ নং ওয়ার্ডের সহ সভাপতি মোনাফ হাজি, ১৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সেলিম, যুবলীগ নেতা এন মোহাম্মদ রনিসহ এলাকার বিভিন্ন স্তরের জনসাধারন।