[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এক বিবৃতিতে, গাজীপুরের টঙ্গীর আউচপাড়া মোক্তার বাড়ি এলাকায় খাবারের প্রলোভনে একই বাড়িতে চার শিশু ধর্ষণ, ঢাকার ধামরাইয়ের চরচৌহাট এলাকায় ৩৫ বছরের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ এবং নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের বেগম উত্তর রামনারায়ণপুর গ্রামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহনসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণ এবং বেআইনী সালিশ বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলেন, ২৮.০৪.২০২০ ইং তারিখ দৈনিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানা যায় যে, গত ২৬ এপ্রিল ২০২০ তারিখ রোববার গাজীপুরের টঙ্গীর আউচপাড়া মোক্তার বাড়ি এলাকায় ভিকটিম শিশুদের (বয়স: আট, সাত, পাঁচ বছর বয়সী ৩টি কন্যা শিশু এবং তিন বছর বয়সী ছেলে শিশু) বামা-মা দিনমজুরের কাজে বাড়ির বাইরে থাকায় সন্ধ্যায় ওই চার শিশু বাড়ির উঠানে খেলাধূলা করছিল। এ সময় খাবার কিনে দেয়ার কথা বলে এক এক চারটি শিশুকে ডেকে এন নিজ কক্ষে ধর্ষণ করে বেলায়েত হোসেন বেনুকে (৫০) ও তার সহযোগী বিল্লাল হোসেন (৪৭)। ঘটনাটি জানাজানি হলে রাতেই কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায় অভিযুক্তরা। শিশুদের শারীরিক পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৭ এপ্রিল ২০২০ তারিখ সোমবার ঢাকার ধামরাইয়ের চরচৌহাট এলাকার বাদশা মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধ ৩৫ বছরের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বাদশা মিয়াকে তার ঘরে তালা দিয়ে ৬ ঘন্টা আটকে রাখার পর স্থানীয় মাতাব্বররা বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে রাত সাড়ে দশটার দিকে সালিশ বৈঠক চলাকালে ধর্ষককে আটক করেছে ধামরাই থানা পুলিশ। এ সময় মাতব্বররা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
গত ২৭ এপ্রিল ২০২০ তারিখ সোমবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের বেগম উত্তর রামনারায়ণপুর গ্রামের প্রবাসী ফেয়ার হোসেনের স্ত্রী-র সঙ্গে তাঁর ভাশুর শাহজাহান সাজুর বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শাহজাহান ক্ষিপ্ত হয়ে দা নিয়ে গৃহবধূকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। গৃহবধূ মাটিতে লুটে পড়লে পালিয়ে যান শাহজাহান ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাড়ি থেকে চলে যান। বাড়ির অন্যরা মূমূর্ষ অবস্থায় গৃহবধূকে নোয়াখালী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টার দিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়।
বিবৃতিতে আরো বলেন, দেশের এই সংকটময় সময়ে সারাদেশে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংতায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ঘটনাদ্বয়ের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহনসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণসহ নির্যাতনের শিকার শিশুদের, প্রতিবন্ধী নারীকে সুচিকিৎসাসহ তাদের এবং তাদের ও হত্যার শিকার গৃহবধূর পরিবারের নিরাপত্তা ও বেআইনী সালিশ বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছে। সেইসাথে এ ধরণের ঘটনায় পুনরাবৃত্তি রোধে বিশেষ মনোযোগ ও আশু কার্যকর বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে। একইসাথে ধর্ষন, হত্যা, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধে সকল সামাজিক শক্তিকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।