[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
দাফন সম্পন্ন হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুতোভয় যোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল শওকত আলীর। গতকাল নড়িয়া বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে বাদ জোহর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে হেলিকপ্টার করে তাঁর মরদেহ নেয়া হয় শরীয়তপুরের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক আবদুর রউফ স্টেডিয়ামে। পরে নিয়ে যাওয়া হয় নড়িয়া উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ।
এর আগে, সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন শওকত আলী।
শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার লোনসিং বাহের দিঘীরপাড় গ্রামে ১৯৩৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন শওকত আলী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৫৯ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পান।
ষাটের দশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বিপ্লবী পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ২৬নং আসামী ছিলেন। এ মামলায় মালির ক্যান্টনমেন্ট থেকে ১০ জানুয়ারি ১৯৬৮ তারিখে গ্রেপ্তার হন। এবং ১৯৬৮-৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুর সাথে প্রায় ১৩ মাস কারাগারে ছিলেন। ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ তারিখে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন। এরপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে ১৯৬৯ সালে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়।
তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকালে তিনি মাদারীপুর এলাকার কমান্ডার পরে ২ নম্বর সেক্টরের অধীনে সাব-সেক্টরের কমান্ডার ও প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি মুজিবনগরস্থ সশস্ত্রবাহিনীর সদর দপ্তরের স্টাফ অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান। তবে অবসরের সময় তিনি কর্ণেল পদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে অর্ডন্যান্স সার্ভিসেসের পরিচালক নিযুক্ত হন।