লকডাউন শুরু হয়েছে ৫টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে

শুক্রবার, মে ২১, ২০২১,১:১৩ অপরাহ্ণ
0
24

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

আজ সকাল থেকে  কক্সবাজারের পাঁচটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে লকডাউন চলছে যা পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানান ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দৌজা নয়ন।

যে ৫ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে লকডাউন চলছে সেগুলো হলো  উখিয়ার ২-ডব্লিউ, ৩, ৪, ১৫ এবং টেকনাফের ২৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প।

সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্য মতে, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে। এর মধ্যে উখিয়ার ৪টি এবং টেকনাফের ১টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে লকডাউন ঘোষণা করেছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে গত বুধবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬৩ জন। এদের মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪১ হাজার ৪৭৭ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬৩৯ জন রোহিঙ্গা। এখনো আইসোলেশনে রয়েছে ২১১ জন। 

আক্রান্ত ও মারা যাওয়াদের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি হচ্ছে করোনার দ্বিতীয় প্রকোপ শুরু হওয়ার পর তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই। এখন ক্যাম্পগুলোতে করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখি রয়েছে।  এতে করোনা সংক্রমণ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আগেভাগেই লকডাউন ঘোষণা দিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সামছু-দৌজা জানান, করোনা মহামারির দ্বিতীয় প্রকোপে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সংক্রমণের হার বেড়েই চলছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকা ক্যাম্পগুলোতে লকডাউন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে উখিয়া ও টেকনাফের ৫টি ক্যাম্পে লকডাউন ঘোষণার ব্যাপারে ক্যাম্প প্রশাসনসহ রোহিঙ্গাদের সেবায় নিয়োজিত দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলোকে করণীয় সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। এতে লকডাউন কার্যকরে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। 

নির্দেশনার তথ্য উল্লেখ করে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলেন, লকডাউন ঘোষিত ক্যাম্পগুলোর বাসিন্দারা নিজেদের ক্যাম্পের বাইরে যাতায়াত করতে পারবেন না। চিকিৎসা ও খাদ্যসহ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যে কারো চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। 

এছাড়া, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া লকডাউন ঘোষিত ক্যাম্পগুলোতে দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সীমিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেন সামছু-দৌজা।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের স্বাস্থ্য বিষয়কশাখার সমন্বয়ক ডা. তোহা ভূঁইয়া জানান, এমনিতেই গত ৩-৪ মাস ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোসহ কক্সবাজার জেলায় করোনা আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে। যা গত এক বছরের আক্রান্তের সংখ্যা তুলনায় বেশি। 

গত এক মাস ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে করোনা আক্রান্তের বেড়েই চলছে। মারাও গেছে ৩ জন। গত এক বছরে যে পরিমাণ আক্রান্ত হয়েছে তার প্রায় অর্ধের কাছাকাছি হচ্ছে গত ৩-৪ মাসের মধ্যে।

তোহা বলেন, স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে প্রাথমিকভাবে ধারণা হচ্ছে, করোনার দ্বিতীয় প্রকোপকালে গত এক মাস রমজানে ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সামাজিকভাবে জনসমাগম হয়েছে বেশি। রোজার মাসে প্রতিদিনই ক্যাম্পের মসজিদগুলোতে তারাবির নামাজ আদায় এবং ঈদের দিনগুলোতে ঘিঞ্জির মত বসতির বাসিন্দা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার সমাগম ঘটেছে। এতে সংক্রমণের হারও প্রতিদিনই উর্ধ্বমুখী।

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আক্রান্তের হার উদ্বেগজনক থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতেই প্রশাসন লকডাউন ঘোষণার নির্দেশনা জারি করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে