[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারি ফেডারেশন এর সভাপতি আব্দুল মোতালেব ও সাধারণ সম্পাদক কামরূল আহসান ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল তৈরী পোষাক কারখানায় শতাব্দীর ভয়াবহ বিপর্যয় তথা রানা প্লাজা ভবনধ্বসে একহাজার একশত চৌত্রিশ জন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু এবং আড়াই সহস্রাধিক শ্রমিক মারাত্বক আহত হওয়ার ঘটনার শোকাবহ সপ্তম বার্ষিকীতে গভীর বেদনাময় চিত্তে স্মরণ করেছেন।
আজ এক বিবৃতিতে গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারি ঐক্যপরিষদ নেতৃবৃন্দ বলেন, অবৈধভাবে নির্মিত ও ত্রুটিপূর্ণ ভবনে পাঁচটি পোষাক কারখানার প্রায় সাড়ে তিনহাজার শ্রমিককে তাদের আপত্তিসত্বেও মালিকপক্ষ জোরপুর্বক কাজে যোগদানে বাধ্য করে তাদের সকলকে ঐ ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিপতিত করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় শিল্প দূর্ঘটনা এটিই প্রথম, যা শিল্প দূর্ঘটনার ইতিহাসে একটি মর্মান্তিক ও বিয়োগান্তক অধ্যায়। যা দেশের তৈরী পোষাক শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের করুণ কর্মপরিবেশর চিত্র সামনে নিয়ে আসে এবং বিরুপ ধারণা তৈরী করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আহত শ্রমিকরা চরম অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। ক্ষতিপূরণ প্রদানের দির্ঘসুত্রিতা এবং ভাগে ভাগে প্রদানের কারনে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসনের কর্মসুচি গতি হারাচ্ছে। আহতদের চিকিৎসা উপযোগী প্রতিশ্রুত হাসপাতালের কোন দৃশ্যমান ব্যবস্থা হয়নি। ফলে দুর্ঘটনার পর গত সাত বছরে আহতদের সুচিকিৎসা না হওয়ায় তা এখন তাদেও স্বাস্থ্যহানির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
বিৃতিতে রানা প্লাজা আহতদেও সুচিকিৎসা প্রদান এবং তাদের পরিবারের ব্যয় নির্বাহে আর্থিক জোগান ও স্থায়ী রেশন কার্ড নিশ্চিতকরা, আইনসংশোধন করে রানা প্লাজা ঘটনার জন্য দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, কর্মক্ষেত্রে অবহেলাজনিত মৃত্যুতে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপুরণ নির্ধারণ করে শ্রম আইন সংশোধন, ২৪ এপ্রিলকে রাষ্ট্রিয়ভাবে গার্মেন্টস শ্রমিক শোক দিবস ঘোষণা, নিহতদের স্মরণে স্থায়ী স্মৃতি বেদী নির্মাণ ও ভবন ধ্বসের স্থানে স্মৃতি চত্বর করা এবং নিহত শ্রমিকদের কবর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয় যে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব আজ করোনাভাইরাস কভিড-১৯ মহামারি আক্রান্ত। এই পরিস্থিতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনায় জনস্বাস্থ্য বিভাগ ব্যক্তি দুরত্ব বজায় রেখে সামাজিকসুরক্ষা বিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। এমন পরিস্থিতে রপ্তানীমুখি শিল্পের জন্য সরকার ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা ব্যবস্থা নিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ভাতা দ্রুত পরিশোধ এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার সুযোগ করে দিতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সাধারন ছুটি চলাকালীন কোন কোন কারখানার মালিক কারখানা লে-অফ ঘোষনা এবং শ্রমিক ছাঁটাই করেছেন যা বে-আইনী। আমরা দুর্যোগকালীন এই পরিস্থিতে শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা সুরক্ষার জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানাই।
বিবৃতিতে কভিড-১৯, স্বাস্থ্য বিধি বাধ্যকতা চলমান থাকায় রানা প্লাজা দিবসের কর্মসুচি জন-জমায়েত না করে স্ব স্ব স্থানে অবস্থান করে স্মরণ ও তাদের স্মতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।