রাজাকারের তালিকায় ভাষা সৈনিক মিহির লাল দত্তের নাম !

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯,৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ
0
14

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

সরকার প্রকাশিত কথিত ‘রাজাকারদের তালিকা’ নিয়ে দেশে ব্যাপক অষন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। দেশজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে, এই তালিকা কীভাবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয়েছে। এই কথিত তালিকায় ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এমনকী ভাষাসৈনিকদের নাম তুলে দেওয়া হয়েছে! বাদ পড়েছেন চিহ্ণিত রাজাকারেরা। যেমন বরিশালের প্রয়াত ভাষা সৈনিক ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মিহির লাল দত্তের নামও এসেছে রাজাকারের তালিকায়!

গত রবিবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকার বরিশাল বিভাগের ২২নং পাতার ৯৪ নম্বর রাজাকার হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা মিহির লাল দত্তের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে তার পিতার নাম জীতেন্দ্র দত্ত এবং আগরপুর রোডের বাসিন্দা উল্লেখ করা হয়। বরিশালের সুপরিচিত সাংবাদিক মিহির লাল দত্ত একাধারে কবি, নাট্যকার, গীতিকার, ছোট গল্পকার ও ভাষাবিদ। মিহির লাল দত্ত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পিতা জিতেন্দ্র লাল দত্ত এবং মেজ ভাই সুবীর দত্ত পান্থ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।

রাজাকারের তালিকায় পিতার নাম আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মিহির লাল দত্তের ছেলে শুভব্রত দত্ত। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘আমার বাবা একজন ভাষা সৈনিক এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। তার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং- ২৮৯ ২১/০৫/২০০৫ এবং মুক্তিবার্তা নং- ০৬০১০১১০৬০। এছাড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত সাময়িক সনদ নং- ম২৮৬১৬। তার নাম কীভাবে রাজাকারের তালিকায় এসেছে সেটা আমার বোধগম্য নয়। যারা এই তালিকার সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি দাবি করছি। এটা জাতির জন্য অপমানের।’

উল্লেখ্য, এই রাজাকারের তালিকায় ৬৫ নম্বরে নাম আছে বরিশালের জনপ্রিয় বাসদ নেত্রী ডা. মনীষা চক্রবর্তীর বাবা তপন কুমার চক্রবর্তীর। যদিও তিনি একজন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা, ক্রমিক নং ১১২ পৃষ্টা ৪১১৩। একইসঙ্গে মনীষা চক্রবর্তীর ঠাকুমা উষা রানিকে ৪৫ নম্বর রাজাকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও তার স্বামী অ্যাডভোকেট সুধির কুমার চক্রবর্ত্তীকে পাকিস্থানি মিলিটারি বাহিনী বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তিনিও ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল সংবাদমাধ্যমকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা নিজেরা কোনো তালিকা প্রস্তুত করিনি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা যে তালিকা করেছে, আমরা শুধু তা প্রকাশ করেছি। সেখানে কার নাম আছে, আর কার নাম নেই সেটা আমরা বলতে পারব না। একই নামে তো অনেক মানুষ থাকতে পারে। আর একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম রাজাকারের তালিকায় আসবে কেন, এটা হতে পারে না। আর যদি আসেও সেটা পাকিস্তানি বাহিনীর ভুল।’

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে