[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন উত্তর হাজীগঞ্জ, মুক্তিযোদ্ধা সড়কের পাশে আবাসিক ঘন বসতি এলাকায় মেসার্স আনোয়ারা ফ্যাশন লিমিটেডের ইউনিট-২ নিয়ম বহির্ভূত ভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ । এলাকাবাসী এ স্থাপনার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরের লিখিত অভিযোগ করার পরেও কোন প্রকার প্রতিকার পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে নারায়নগঞ্জস্থ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জোন-৮ এর অথরাইজ অফিসার তৌফিক ইসলামের সাথে গত ১৩ মে সোমবার তার নিজস্ব কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন উত্তর হাজীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক এলাকাবাসীর পক্ষে হোসনা আরা, মোঃ শাহ্ আলম ও হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি টিম। আলোচনায় মেসার্স আনোয়ারা ফ্যাশন লিমিটেড ইউনিট-২ রাজউকের নির্দেশ অমান্য করে নিমার্নের কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে স্থান পায়।
তথ্যসূত্রে জানা যায় যে, হাজার-হাজার লোকের বসতি এ হাজীগঞ্জ এলাকা। এছাড়াও রয়েছে সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ সহ সরকারি ও বেসরকারি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা ও মাতৃসদন কেন্দ্র। রাতদিন ছোট ছোট ছেলেমেয়ে সহ সকল বয়সের লোকজনের যাতায়াত অত্র এলাকায়, এ সকল লোকদের দাবি আবাসিক এলাকায় কোনভাবে যেন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে না উঠে। কেননা এ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে জন বসতি বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলবে। বায়ূ দূষণ, শব্দ দূষন ও পরিবেশ দূষণ সহ নানা ধরনের সমস্যা জনজীবনকে দূর্বিষহ করে তুলবে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারনা। ইতোমধ্যে আনোয়ারা ফ্যাশন লিমিটেড জমিটির মালিকানা ক্রয়করে কুট কৌশলে রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ কাজা শুরু করে, এর আগে টিনসেড তৈরি করে পরিবেশ অধিদপ্তরের ও নগর পরিকল্পনার ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র ছাড়াই নিংটিং কারখানার উৎপাদনের কাজ শুরু করে। এ নিংটিং কারখানার সুতার ডাস্ট বসবাসরত এলাকাসির ঘরে ঘরে বাতাসে বেশে এসে ঘরের পরিবেশ নষ্ট সহ মানুষের নিশ্বাসের সমস্যা হচ্ছে ; ফলে অনেকেই বর্তমানে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছে।
এলাকাবাসী এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে গত ৫ মে রাজউক কর্তৃপক্ষের নারায়ণগঞ্জের ইমারত পরিদর্শক তারেক ও মনির হোসেন ঘটনাস্থাল পরিদর্শনে আসলে কারখানার লোকজন হতবিহল হয়ে পড়ে। কারখানাটি স্থাপনের অনুমোদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে আনোয়ারা ফ্যাশনে কর্তব্যরত প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কোন ধরনের কাগজ পত্র দেখাতে পারেনি। যা ফলে তাৎক্ষনিক ভাবে চলমান পাইলিং এর কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন সরেজমিনে আসা ইমারত পরিদর্শক তারেক। সেই সাথে অনুমোদন না নিয়ে কাজ করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন, এই নিষেধাজ্ঞা কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আজঅব্দি রাতের অন্ধকারে চুপি চুপি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আনোয়ারার কর্তৃপক্ষ বলছে আমাদের অনুমোদনের জন্য কাগজপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর পূর্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে পরিদর্শক এসে পরিদর্শন করে যান। এলাকাবাসী আশাবাদী ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ)-এ চিহিৃত অত্র আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় জনবসতির কথা চিন্তা করে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার অনুমতি দিবেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর যদি অসাধু উপায়ে অনুমতি দিয়ে থাকেন তাহলে এলাকাবাসী সবাই এক হয়ে জোড় পদক্ষেপ নিবে বলে দাবি উঠেছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে প্রতিনিধিগণ ও অথরাইজ অফিসারের সাথে আলোচনায় এক পর্যায়ে বলেন-আমরা চাই আমাদের বসতি প্রতিটি মানুষ পরিবেশের দূষণ মুক্ত থেকে বসবাস করতে। একটি আবাসিক এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠানের কারণে আমরা মৃত্যু ভয়ের হুমকিতে থাকতে চাই না। আমাদের এলাকাবাসীর যৌক্তিক এ দাবি আপনি সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগণ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের কে দূষণ মুক্ত পরিবেশে বসবাসে অব্যাহত রাখবেন। এলাকাবাসী আরো বিশ্বাস করেন রাজউক আইনের মধ্যে থেকেই কারখানার স্থানান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পিছিয়ে পড়বে না ; এতেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ হবে এবং পরিবেশ সংরক্ষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চির-সুন্দর উদ্যোগকে প্রকৃতি অর্থে সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
যৌথ আলোচনার পর অথরাইজ অফিসার তৌফিক ইসলাম তদন্ত পরিদর্শক তারেকের সাথে সমন্বয় করে এ অনিয়মের বিরুদ্ধে উল্লেখ করে বলেন যে, অতিদ্রুত মেসার্স আনোয়ারা ফ্যাশন লিমিটেড ইউনিট-২ সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দপ্তরে লিখিত নোটিশ প্রেরণ করিবে, অথরাইজ অফিসার আরো বলেন – আইনের উর্ধে কেউ নয়, রাজউক নিষ্ঠার সাথে এ অনিয়মের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে উপস্থিত উত্তর হাজীগঞ্জ, মুক্তিযোদ্ধা সড়ক এলাকাবাসীর পক্ষে প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেন।