[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ) অধ্যক্ষ, চেতনা মডেল একাডেমী
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ) একজন একনিষ্ঠ ও নিবেদিতপ্রাণ ইংরেজি শিক্ষক। তিনি ১৯৫৭ সালের ১৯ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার ইব্রাহিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ হতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষকতা, নৈতিক দর্শন, নেতৃত্বের শিল্প, সেনাবাহিনী কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক হিসেবে সুদীর্ঘ ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। তিনি বিএমএ’র ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানসহ বিএমএ’র ভাষা অনুষদের প্রধান ছিলেন। এছাড়াও তিনি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ইংরেজি কোর্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিএমএ’র পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষকদের উপদেশক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, এএসইএ’র উপদেশক ও বিসিএস কর্মকর্তাদের উপদেশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সেনাবাহিনী ও বিজিবি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের কার্যনির্বাহক হিসেবে ৬ বছর দায়িত্ব পালন করেন। বারিধারা স্কলার্স স্কুল এন্ড কলেজে তিনি প্রায় ৭ বছরের অধিক সময় ধরে সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে অধ্যক্ষ এর দায়িত্ব পালন করেন করেছেন। তিনি বারিধারা স্কলার্স এর অধ্যক্ষ থাকাকালীন অক্সফোর্ড একাডেমিক ইউনিয়ন এর আমন্ত্রণে অক্সফোর্ড প্রাঙ্গণে ” professional achievements and innovative development of BSI” শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে “ইন্টারন্যাশনাল সামিট অফ লিডার্স” অক্সফোর্ড, ইউকে কর্তৃক অধ্যাপক সম্মাননা অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি “চেতনা মডেল একাডেমী” তে অধ্যক্ষ হিসাবে নিযুক্ত হয়ে এখনও তার পেশাদারি দায়িত্ব পালন করছেন। এই কর্মদ্যেমী ব্যক্তিত্ব সম্প্রতি মানব সংবাদ পত্রিকায় একটি সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। তার সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন মানব সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক সাজেদা বেগম ও নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার আহমেদ। মানব সংবাদ অনলাইনে পোর্টালে এই গুণী ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হলো।

মানব সংবাদ: চেতনা মডেল একাডেমী প্রতিষ্ঠানটি শুরুর প্রেক্ষাপট সর্ম্পকে জানতে চাচ্ছি?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ২০০৫ সালের দিকে মিরপুরে এলাকাতে কোন ইংলিশ ভার্সন স্কুল বা কলেজ ছিল না। ইংলিশ এডুকেশন তথা ইংলিশ ভার্সনটাকে জনপ্রিয় করে তোলা এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করার জন্য এই এলাকায় প্রথম ইংলিশ ভার্সন স্কুল খোলা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল আমাদের শিক্ষাটাকে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া। আমাদের দেশে প্রচলিত পাঠ্যক্রম কোন অংশেই আন্তর্জাতিক পাঠ্যক্রমের চেয়ে নিম্ন মানের নয়। কাজেই এই পাঠক্রমকে যদি ইংলিশ ভার্সনে পড়ানো হয় তাহলে আমাদের দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা আরো সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারবে এবং আমাদের দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উপস্থাপন করতে পারবে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা কার্যক্রমে আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। এই প্রেক্ষাপটে ২০০৫ সালে চেতনা মডেল একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা হয়। চেতনা মডেল একাডেমীকে আমরা সংক্ষেপে CMA (সিএমএ) বলি।

মানব সংবাদ: প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম সর্ম্পকে জানতে চাচ্ছি?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): এই প্রতিষ্ঠান আর্লি 1, 2, 3 ( প্লে, নার্সারি, কেজি) থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল এবং 2008 সালে উচ্চ মাধ্যমিক বা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ ক্লাস চালু করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হল ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ে ইংলিশ ভার্সনের শিক্ষার্থীর না পাওয়ার কারণে এই প্রতিষ্ঠান কলেজ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া। তবে আশার বিষয় হচ্ছে, বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ইংলিশ ভার্সন কলেজ শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে। কাজেই আমরা নতুন করে কলেজ ক্লাস তথা কলেজ শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করতে যাচ্ছি।

মানব সংবাদ: ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য এই প্রতিষ্ঠানটিকে শিক্ষার্থীরা কেনো বেছে নিবে?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের জন্য যে ধরনের ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন, শিক্ষক প্রয়োজন তা আমরা নিশ্চিত করে থাকি। অভিজ্ঞ ও দক্ষ মানসম্পন্ন শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। পাশাপাশি শিক্ষকদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। আমাদের প্রতিষ্ঠানে আমরা শিক্ষার্থীদের যত্নের সাথে মানসম্মত পড়াশোনা নিশ্চিত করে থাকি। অনেক ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ভর্তি কার্যক্রমের সময় ভালো মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নেয়। অমনোযোগী বা দুর্বল শিক্ষার্থীদের ভর্তি নেয় না। তবে আমরা এ বিষয়ে একটু ব্যতিক্রমধর্মী পন্থা অবলম্বন করি। আমরা বিশ্বাস করি মেধাবী শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তুলনামূলক অমনোযোগী ও দুর্বল শিক্ষার্থীকে কিভাবে মেধাবী শিক্ষার্থী করে গড়ে তোলা যায় ও ভালো ফলাফল করানো যায় আমরা সেই প্রচেষ্টাই করি। তাদের জন্য আমরা বিভিন্ন আধুনিক পন্থা চালু করেছি। আমরা বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ, পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক, ট্রেনিং এবং প্রতি ক্লাসে সীমিত সংখ্যক শিক্ষার্থী এই সকল বিষয়গুলো নিশ্চিত করি তাদের যত্ন প্রদানের জন্য। একজন শিক্ষক যথেষ্ট পরিমানে দায়িত্বশীল ও নির্ভরশীল হওয়ার পরই আমরা তাদের শ্রেণিকক্ষে প্রেরণ করি। এর আগে কোন শিক্ষককে আমরা ক্লাসে পাঠাই না। আমরা আমাদের ৬৮ জন দায়িত্বশীল শিক্ষক দ্বারা উচ্চ মানের মানসম্মত শিক্ষা প্রদান নিশ্চিত করছি।
মানব সংবাদ: এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যয় কেমন?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): অন্যান্য সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের শিক্ষা খরচ একটু বেশি। তবে ইংলিশ ভার্সন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তুলনামূলক কম। শিক্ষা খরচ তথা শিক্ষা ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে আছে। যাতে করে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত লোকের সন্তানরা পড়াশোনা করতে পারে এমন পর্যায়েই আছে। চেতনা মডেল একাডেমী এখন অব্দি অমুনাফাভোগী প্রতিষ্ঠান হিসাবেই রয়েছে। আমাদের এই প্রতিষ্ঠান কোন মুনাফাভোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না।
মানব সংবাদ: অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আপনাদের প্রতিষ্ঠানে তহবিল বা শিক্ষা ব্যবস্থা আছে কী?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে একটি দরিদ্র তহবিল রয়েছে। আমরা চেষ্টা করি অস্বচ্ছল মেধাবী সকল শিক্ষার্থীকে এই তহবিল থেকে অনুদান দিয়ে তাদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে।

মানব সংবাদ: তরুণরাই গড়বে ডিজিটাল বাংলাদেশ সরকারের এই প্রত্যাশা বাস্তবায়নে আপনার প্রতিষ্ঠান কী ভূমিকা রাখবে বা রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): তরুণদেরকে যথাযথভাবে গড়ে তোলার জন্য আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের তিনটি নীতি বাক্য রয়েছে। প্রথমত হচ্ছে EDUCATION (শিক্ষা), WISDOM (জ্ঞান) এবং CHARACTER (চরিত্র)। এই ত্রিমাত্রিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের আমরা গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। আমরা শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যার মাঝে সীমাবদ্ধ থেকে শিক্ষার্থীদের শ্রমবিমুখ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই না। আমরা হাতে কলমে বিজ্ঞানসম্মত এমন একটি পদ্ধতির শিক্ষা প্রদান করতে চাই, যাতে করে তারা বৈশ্বিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক লেখাপড়া গ্রহণ করতে পারে এবং নিজেদেরকে যোগ্য বলে প্রমাণ করতে পারে। আমি দুবার অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে EBA (ইবিএ) কনফারেন্সে গিয়েছি। তাদের সাথে শিক্ষামূলক বিষয় কিছু মত বিনিময় করেছি। আমাদের কিছু পদ্ধতি তারা গ্রহণ করেছে এবং তাদের কিছু পদ্ধতি আমরা গ্রহণ করেছি। একটি আধুনিক বিশ্বে যে চলমান শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত শিক্ষা প্রদান, যেটি উন্নত দেশগুলোতে প্রদান করা হচ্ছে সেই হিসেবে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের কে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। যাতে করে তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করে বিশ্ব দরবারে টিকে থাকতে পারে সেই প্রয়াস চালাচ্ছি এবং এটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।

মানব সংবাদ: পুঁথিগত বিদ্যা ও হস্তগত বিদ্যাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? এবং এর সম্ভাবনা নিয়ে মন্তব্য আছে কী?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমাদের যে জাতীয় পাঠক্রম রয়েছে তা নিয়ে আমি হতাশাগ্রস্থ নই। কেননা আমাদের জাতীয় পাঠক্রম অনেকটাই সমৃদ্ধশালী। এটিকে যদি সঠিকভাবে যোগ্য শিক্ষক দ্বারা ও চারিত্রিক মানসম্পন্ন শিক্ষক দ্বারা প্রদান করা হয় তাহলে শিক্ষা, প্রজ্ঞা এবং চরিত্র গঠনে জাতিগতভাবে অনেক এগিয়ে যেতে পারবো। আমি অত্যন্ত আশাবাদী আমাদের দেশের পাঠক্রম ও সহপাঠক্রম কার্যক্রমগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। কেননা এর মাধ্যমে আমাদের যে ত্রিমাত্রিক পর্যায়ের উদ্দেশ্য রয়েছে সেগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারবো ও জাতি গঠনে অনেক ভূমিকা রাখতে পারবো।
মানব
সংবাদ: চারিত্রিক ও মানসিক বিকাশের জন্য
প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব কতটুকু বলে আপনি মনে করেন?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা অনেকটাই উদারতার পরিচয় দিচ্ছি। নীতিগতভাবে একটি শিক্ষার্থীকে গড়ে তোলার জন্য আমরা প্রজ্ঞা ও চরিত্র গঠনে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করছি। সহপাঠ্যক্রম কার্যক্রমগুলো তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য। বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে ঢাকা শহরে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার করার মত জায়গা নেই, এসেম্বলি করার মত জায়গা নেই। কিন্তু আমাদের সিএমএ তে দুইটা খেলার মাঠ রয়েছে। এই দুইটা প্লে-জোনে তারা খেলাধুলা করে এবং সামনে অনেক বড় একটা জায়গা রয়েছে যেখানে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে এসেম্বলি করে থাকি। তাছাড়াও আমাদের যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসগুলো রয়েছে সেগুলো আমরা যথাযথভাবে উদযাপন করে থাকি। যাতে করে সেই দিবসগুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করে আমাদের ছেলে-মেয়েরা আন্তর্জাতিক মনোভাব নিয়ে গড়ে উঠতে পারে।

মানব সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক সাজেদা বেগমকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ) এর লেখা ” The Caring Principal – A Leader of Leaders” গ্রন্থটি প্রদানের একটি বিশেষ মুহূর্ত ।
মানব
সংবাদ: শিক্ষা খাতের উন্নয়নের জন্য
বর্তমান সরকারের কাছে আপনাদের কোন প্রত্যাশা আছে কী?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): হ্যাঁ। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। জাতীয় উন্নয়ন হতে হলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন শিক্ষার উন্নয়ন। এটি ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমার বিশ্বাস বর্তমান সরকার মনেপ্রাণে এর সাথে একমত পোষণ করে। সেই লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং আমাদের যথাযথ প্রণোদনা ও সহায়তা করে যাচ্ছে। তবে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে আমাদের বোর্ডে ও মন্ত্রণালয়ে বারবার ঘুরতে হয়, দৌড়াতে হয় এবং বিভিন্ন রকম হয়রানির শিকার হতে হয়। এই সকল হয়রানি যেন আর না হয়, আমরা যেন সহজে আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়ন করতে পারি, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতা কামনা করছি। দেখা যাচ্ছে যে, কলেজ খোলার জন্য আমরা আবেদন করে অপেক্ষা করছি কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে তেমন কোনো ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি না। একেকবার একেক জনের কাছে যাচ্ছি এবং বিভিন্নভাবে হয়রানি হচ্ছি। দীর্ঘ প্রতীক্ষা করতে হচ্ছে আমাদের। এতে করে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণ থেকে। এই এলাকার অভিভাবকরা আমাদের কাছে জোরালোভাবে দাবি জানাচ্ছে শিক্ষার্থীদের দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ইংলিশ ভার্শনে শিক্ষা প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণের। কেননা আমরা দশম শ্রেণি পর্যন্ত যে শিক্ষা তাদের প্রদান করছি তাতে তারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। অবিভাবকরা চায় শিক্ষার্থীরা যেন দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মানসম্মত শিক্ষাটা আমাদের কাছ থেকে গ্রহণ করতে পারে। কাজেই সরকারের কাছে এটা আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, আমরা যেন কলেজ অনুমোদন পেতে পারি ও দেশে মেধাবী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারি। আর অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখা যায় যে, তারা শিক্ষার্থীদের জন্য সবগুলো শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় উপকরণ ব্যবস্থা করতে পারে না। তাদের সবগুলো প্রদান বা ব্যবস্থা করার মত সামর্থ্য হয়ে ওঠে না। যদিও আমরা সবকিছু প্রদান করে থাকি কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান তা পারে না। সরকার তাদের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। কেননা আমরা চাই একজন শিক্ষার্থী যথাযথভাবে এবং আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী যেন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। আরেকটি বিষয় হলো শিক্ষার্থীদের যথাযথ শিক্ষা গ্রহণের জন্য আরামদায়ক শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষা সেবা ও যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান সরকার আরো কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারে।

মানব সংবাদ: শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে কোন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে কী?
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জি. আর. জাহাঙ্গীর, এইসি (অবঃ): এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ে আমরা অনেক স্বপ্ন দেখি এবং তা অনেক বিশাল। আমাদের এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে মিরপুর এলাকার মধ্যে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি বলে বিবেচিত। আমরা চাই বাংলাদেশে এরকম প্রতিষ্ঠান আরো গড়ে উঠুক এবং এই প্রতিষ্ঠানটি আরো এগিয়ে যাক। আমরা এই প্রতিষ্ঠানটিকে আরো আন্তর্জাতিকীকরণ, আধুনিকরণ করার আন্তরিক প্রয়াস চালাচ্ছ। আধুনিক বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যে শিক্ষাটা দেয়া হচ্ছে, আমরা যেন তাদের শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে প্রতিযোগিতা করে জয়ী হতে পারি সেই স্বপ্নই আমি দেখি এবং আমরা অনেকটাই সে স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছেছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই আমরা আধুনিক বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় জয়ের দেখা পাবো।