[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ আর নেই। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিশিষ্ট এই রাজনীতিক ও আইনজীবীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। অভিজ্ঞ এই পার্লামেন্টারিয়ান, আইনজ্ঞ ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে মওদুদ আহমদকে দুই দফায় ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর ফুসফুসে পানি জমে যায়। পরে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গত ১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী হাসনা মওদুদ।
মওদুদ আহমদের একান্ত সহকারী মোমিনুর রহমান সুজন জানান, সিঙ্গাপুরে হাসপাতালে আইসিউতে থাকা মওদুদ আহমদের অবস্থা গত কয়েক দিন ধরেই সংকটাপন্ন ছিল। ১৫ দিন ধরেই তাঁর ফুসফুসে পানি জমা হচ্ছিল। পাশাপাশি তাঁর কিডনি জটিলতাও বেড়ে যায়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, আজ বুধবার সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে কোনো ফ্লাইট নেই। সে ক্ষেত্রে আগামীকাল বৃহস্পতিবার মওদুদ আহমদের মরদেহ দেশে আনা হতে পারে। আর বিশেষ কোনো ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা গেলে আজই মরদেহ দেশে আনা হবে। তাঁকে ঢাকায় না জন্মস্থান নোয়াখালীতে দাফন করা হবে, সে বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
মওদুদ আহমদ দেশের এক বর্ণাঢ্য রাজনীতিক। তিনি আইনমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদেরও একজন। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। আশির দশকে এরশাদের সঙ্গে তাঁর যুক্ত হওয়া ছিল রাজনীতির এক বড় চমক।
১৯৮২ সালে এরশাদ সামরিক শাসন জারির পর বিশেষ সামরিক আদালতে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এই রাজনীতিক। ১৯৮৫ সালে সেই দণ্ড মাথায় নিয়েই এরশাদ সরকারের মন্ত্রী হন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতি হন মওদুদ আহমদ। এরশাদের পতনের পর ১৯৯৬ পর্যন্ত তিনি জাতীয় পার্টিতে ছিলেন। এর পরপরই ‘ঘরের ছেলে ঘরে ফেরা’র মতোই বিএনপিতে ফিরে আসেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর তিনি আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী মওদুদ আহমদ ধানের শীষ ও লাঙল দুই প্রতীকেই নির্বাচন করেছেন। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থেকে তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।