[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
এজি লাভলু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: বড় হচ্ছে ফুলবাড়ী উপজেলার চরাঞ্চলের চাষিদের আবাদ করা আগাম জাতের বেগুন গাছ। একইসঙ্গে স্বপ্নপূরণের আশা নিয়ে ফসল ঘরে তোলার অপেক্ষায় রয়েছেন জেলার সীমান্ত লাগোয়া ধরলা অববাহিকার চরাঞ্চলের চাষিরা।
এই অঞ্চলের চাষিরা মূলত রবি শস্যের ওপর নিভর্রশীল। এবার আগাম বেগুন চাষ করে তার লাভের আশা করছেন। বর্গা জমিতে বেগুন চাষ করে জীবন-জীবিকায় স্বচ্ছলতা এসেছে চরাঞ্চলের শতশত পরিবারের।
মৌসুম শুরুর আগেই আগাম বেগুন ফলিয়ে প্রতিবছর লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এ কারণেই বেগুন চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে এসব এলাকার চাষিদের। গত বছরের তুলনায় বেড়েছে চাষের হার।
সরেজমিনে ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বেগুনের ক্ষেত। চাষিরা ব্যস্ত ক্ষেত পরিচর্যায়। কোনো কোনো গাছে ইতোমধ্যেই ফুটেছে বেগুনের ফুল। এ ফুল থেকেই ১৫ থেকে ২০ দিন পরে উৎপাদিত বেগুন বিক্রি শুরু করবেন চাষিরা।
শুধু বেগুনই নয়, পাশপাশি নানা ধরনের সবজির আগাম চাষ বদলে দিচ্ছে চাষিদের ভাগ্য। তারা বেগুনের পাশাপাশি একই জমিতেই লাল শাক, মুলা শাক ও পাট শাক আবাদ করে বিঘা প্রতি আয় করছেন ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।
ফুলবাড়ী উপজেলার কুরুষাফেরুষা চরাঞ্চলের কৃষক হাসেম আলী (৫৫), পুলিন চন্দ্র রায় (৪০) বলেন, চরাঞ্চলের কৃষকরা বেগুন আবাদ করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়েছেন। আমরা প্রতিবছরেই রবি মৌসুমে আগাম বেগুন-সবজিসহ বিভিন্ন শাক উৎপাদন করে লাভের মুখ দেখছি। চলতি মৌসুমেও লাভের আশা করা হচ্ছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার চওড়াবাড়ী চরাঞ্চলের কৃষক মনছের আলী (৬৫), ধীরেন্দ্র নাথ রায়সহ (৪০) কয়েকজন কৃষক বলেন, প্রতি বিঘা বেগুন আবাদ করতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ক্ষেত রোগ মুক্ত ও আবহাওয়া অনুকূলসহ ভালো দাম থাকলে এক বিঘায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করা যায়। পুরো খরচ বাদ দিলে বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব।
কৃষক সিদ্দিক মিয়া (৫০), মুছা মিয়া (৪২) সহ অনেকেই জানান, ইতিপূর্বে আমরা অন্যের জমি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে বেগুনসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছি। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়। এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে ২ একর জমিতে বেগুনসহ বিভিন্ন ধরনের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ হতে পারে।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুর রশিদ বলেন, চাষিদের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সহযোগিতাও দেওয়া হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ধরলা অববাহিকার চরাঞ্চলসহ এই অঞ্চলের কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি বেগুন চাষ করছেন। এ অঞ্চলের মাটি বেগুন চাষের উপযোগী হওয়ায় চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৮০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা আগাম বেগুনের চারা রোপন করেছেন। বেগুন চাষ ও বিভিন্ন সবজি চাষের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।