বিশ্বায়নের বর্তমান প্রেক্ষাপটে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি সময়ের দাবি: শিল্পমন্ত্রী

সোমবার, অক্টোবর ১৯, ২০২০,৬:১৭ অপরাহ্ণ
0
16

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

          ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সকল খাতের উৎপাদনশীলতা বর্তমান ৩ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ উন্নীত করা হবে। এজন্য সেক্টরভিত্তিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যম বিভিন্ন খাতের চাহিদা নিরূপণ করা হবে এবং চাহিদার আলোকে অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হবে।

          জাতীয় উৎপাদনশীলতা পরিষদ (এনপিসি)’র ১৫তম সভায় গতকাল এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে অনুষ্ঠিত এই সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন সভাপতিত্ব করেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার সভায় সহ-সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

          সভায় নবম-দশম শ্রেণির আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যবসায় উদ্যোগ পাঠ্যপুস্তকে ‘উৎপাদনশীলতার ধারণা ও আধুনিকায়ন’ অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে পাণ্ডুলিপি প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া, এনপিও’র চলমান কার্যক্রমের পাশাপাশি কৃষি, সেবা ও শিল্প সেক্টরের উৎপাদনশীলতার লেভেল নির্ধারণের লক্ষ্যে লেবার ফোর্স সার্ভে দ্রুত সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে অনুরোধ জানানো হয়। সভায় উৎপাদনশীলতা আন্দোলনকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন কলা-কৌশল’ বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

          সভাপতির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কৃষি, শিল্পসহ সকল খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে শিল্প মন্ত্রণালয় ২০৩০ সাল নাগাদ জাতীয় পর্যায়ে উৎপাদনশীলতা ৫ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রণালয় অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাসহ সরকারের অন্যান্য উন্নয়ন দলিল বিবেচনা করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কৌশল হাতে নিয়েছে। বিশ্বায়নের বর্তমান প্রেক্ষাপটে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি সময়ের অনিবার্য দাবি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

          নূরুল মজিদ হুমায়ুন আরো বলেন, কৃষিখাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম অগ্রাধিকার। দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদী জমিকে কৃষি উৎপাদনের আওতায় আনতে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি শিল্পখাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো হবে। উৎপাদনশীলতা বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সকলের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করে ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি মাস্টার প্ল্যানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি জানান।

          শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হলে শ্রমিকদের প্রতি আরো মনোযোগ দিতে হবে। তাদের জন্য কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের কর্মপরিবেশ উন্নত করতে হবে। তিনি বলেন, শিল্পপণ্যের গুণগত মান উন্নীত করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশীয় পণ্যের সম্প্রসারণ করতে হবে। শিল্প প্রতিমন্ত্রী সরকারি বেসরকারি খাতে পরিচালিত সকল কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপন করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পরামর্শ দেন। তিনি উন্নতজাতের আখ উৎপাদনের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে দেশের কৃষি, মৎস্য ও প্রানিসম্পদের মান উন্নয়নে গবেষণা কার্যক্রমকে আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।

          সভায় শিল্প সচিব কে এম আলী আজম জানান, ২০৩১ সালের উৎপাদনশীলতার লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৬ শতাংশ অর্জনে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।

          সভায় বিদ্যুৎ সচিব ড. সুলতান আহমেদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব কে এম আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. লুৎফুল হাসান, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম, পরিকল্পনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মোশাররফ হোসেন, বেপজা’র জিএম তানভীর হোসেন, এফবিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ইউএমসিএইচের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে