বিমান বাহিনীর সুবর্ণ জয়ন্তীর ক্ষণ গণনার উদ্বোধন

মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০,১:৫৬ অপরাহ্ণ
0
34

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

আগামী ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৫০ বছর পূর্তির ক্ষণ গণনা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সোমবার বিএএফ শাহীন হল, তেজগাঁও, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উক্ত ক্ষণ গণনা অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি দুইটি স্মারক ডাক টিকেটও উন্মোচন করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এই তথ্য জানিয়েছে। 

আইএসপিআর আরো জানায়, প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছালে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বিবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি তাকে স্বাগত জানান। উল্লেখ্য, এই ক্ষণ গণনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের লক্ষ্যে সারা বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এছাড়াও, তিনি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সব শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের লক্ষ্যে বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নিঃসন্দেহে তা নবপ্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত করবে।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিমান বাহিনীর অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পক্ষ ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণের পাশাপাশি বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা সেক্টর কমান্ডারের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছিলেন।

রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের সে উত্তাল দিনগুলোতে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতিকে সম্পূর্ণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একটি স্বতন্ত্র বিমান বাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হয়। আর এ লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর একটি অটার বিমান, একটি ড্যাকোটা বিমান ও একটি অ্যালুয়েট হেলিকপ্টার এবং ৫৭ জন বাঙালি বৈমানিক, কারিগরি পেশার বিমান সেনা ও বেসামরিক বৈমানিকদের সমন্বয়ে ভারতে নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে ‘কিলো ফ্লাইট’ নামে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যাত্রা শুরু করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ৫০টি বিমান অভিযান সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনার মাধ্যমে ‘কিলো ফ্লাইট’ বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।

উক্ত ক্ষণ গণনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সদস্যদের অবদান, আত্মত্যাগ, স্বাধীনতার চেতনা এবং দেশ প্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রতিষ্ঠার ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘কিলোফ্লাইট’ এবং মুক্তিযুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের অবদানের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাঃ লেঃ মতিউর রহমান’ প্রদর্শন করা হয়। 

এছাড়াও, একটি মনোজ্ঞসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিমান সদরের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, আমন্ত্রিত অতিথিরা এবং কিলো ফ্লাইটের বীর যোদ্ধাসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে