[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেম। এদিক-ওদিক ছোটাছুটি-ঘোরাঘুরি। অতঃপর বিয়ের স্বপ্ন। চূড়ান্ত প্রায় কথাবার্তাও । বেঁকে বসল কথিত প্রেমিক, বিয়ে করবে না। অস্বীকার করল সম্পর্কের কথাও । এখন তো হুমকি দিচ্ছে ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার। এমনকি দেওয়া হচ্ছে হত্যার হুমকিও । সেই ফেসবুক প্রেমিক এখন মেয়েটির ‘গলার কাঁটা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনাটি । ভুক্তভোগী মেয়েটি নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে করা আবেদনটি গত বৃহস্পতিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। পুলিশ শুরু করছে ঘটনার তদন্ত । এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পরামর্শও নিয়েছেন আদালতের। একাধিক সালিস বৈঠকেও এ নিয়ে সুরাহা হয়নি। শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়া মেয়েটি এখন হয়ে পড়েছেন অসুস্থ ।
এলাকাবাসী, পরিবার ও থানায় করা জিডি সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার শেরপুরের আবুল কালাম খন্দকারের ছেলে সিরাজুল খন্দকারের (২৭) সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় বাগানবাড়ী এলাকার কলেজছাত্রীর। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক । বিয়ের প্রতিশ্রুতি পাওয়ায় প্রেমিকের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় মেয়েটি ঘোরাঘুরি করে । দুজন ঘনিষ্ঠ হয়। এ অবস্থায় মেয়েটি বিয়ের প্রস্তাব দেন প্রেমিককে। এর পর থেকেই প্রেমিক ‘গা ঢাকা’ দেয়। পরে এ নিয়ে এলাকায় একাধিক সালিস বৈঠক হয়। বৈঠকে বিয়ে বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়। সিরাজুল ও তার পরিবার বিয়েতে সম্মতি দেয়। এরই মধ্যে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করা যায়নি।
থানার দায়ের করা জিডিতে উল্লেখ করা হয়, বিয়েতে রাজি হয়েও এখন সিরাজুল ও তার পরিবার করে টালবাহানা। এখন সব অস্বীকার করে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। বলছে, তাদের ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে। এমনকি মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছে।
ভুক্তভোগী ওই মেয়ে বলেন, ‘ওর (সিরাজুল) সঙ্গে যদি আমার বিয়ে না হয় তাহলে আমি আর এলাকায় মুখ দেখাতে পারব না। তখন আমার মরণ ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। তাকে বিয়ের আশাতেই বেঁচে আছি আমি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. খবির উদ্দিন বলেন, ‘এ নিয়ে সর্বশেষ ১৪ জুলাই হওয়া বৈঠকে আমি উপস্থিত ছিলাম। তখন জানানো হয় আগে হওয়া একাধিক বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বিয়ে নিয়ে । বৈঠকে মেয়েটি জানায় সিরাজুলকে সে তার সব দিয়ে দিয়েছে। সে তাকে বিয়ে করতে চায়। সবাই এসব কথা শুনে বিয়ে বিষয়ে আলোচনা করলেও মেয়েটি অসুস্থ থাকায় দিনক্ষণ ঠিক করা যায়নি।’
সিরাজুলের বাবা অস্বীকার করেছেন দুজনের সম্পর্কের কথা । গতকাল শুক্রবার বিকেলে তিনি বলেন, ‘বললেই তো আর বিয়ে হয়ে যায় না। আমার ছেলে ওই মেয়েকে চিনলেও কোনো সম্পর্ক ছিল না। থানায় জিডি হওয়ার বিষয়টিও জানা নেই আমার ।’
জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে একটি করা হয়েছে সাধারণ ডায়েরি । প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।’
সদর থানার ওসি মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘অভিযোগকারী মেয়েটির পরিবারকে বলা হয়েছে যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে। নজরদারি রাখা হয়েছে অভিযুক্তদের ওপরও ।’