[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
পাবনা চাটমোহরে শারমিন আক্তার (২৪) নামের এক স্বামী পরিত্যক্তা নারী নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেছেন । এ ঘটনা ঘটে শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে ।আবু সাইদের মেয়েনিহত শারমিন উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চড়ইকোল পশ্চিমপাড়া গ্রামের ।
তবে তার আত্মহত্যার কারণ নিশ্চিত হওয়া না গেলেও পরিবারের দাবি, শারমিনের মাথায় সমস্যা (মানসিক রোগ) ছিল। আর স্কুল শিক্ষকরা দাবি করেন, খুবই ভালো মেয়ে ছিল শারমিন। তাকে দেখে কখনও মনে হয়নি যে, তার মাথায় কোনো সমস্যা ছিল।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শারমিনের বাবা আবু সাইদ রিকশা চালান ঢাকায়। বাড়িতে তারা দুই বোন ও এক ভাই মায়ের সাথে থাকেন। চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস এইটে পড়া অবস্থায় তিন বছর আগে পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার চামটা গ্রামে বিয়ে দেয়া হয় শারমিনকে। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় ছাড়াছাড়ি হয় দেড় বছর আগে। এরপর বাড়িতে থেকে শারমিন পুনরায় লেখাপড়া শুরু করেছিলেন ।
নিহতের ছোট বোন চাটমোহর সরকারি ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী শান্তা খাতুন জানান, শুক্রবার রাতে খাবার পর ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। রাত একটার দিকে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙে তার। বাইরে গিয়ে দেখেন বাড়ির পাশে আমগাছের নিচে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে নিয়েছেন বড় বোন শারমিন আক্তার। তারা আগুন নেভানোর অনেক চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। শারমিনের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই ।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তথ্যে আত্মহত্যা বলেই প্রতিয়মান হচ্ছে। এ ঘটনায় দায়ের হয়েছে একটি অপমৃত্যু মামলা । তারপরও এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে বিষয়টি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের বাবা আবু সাইদ জানান, আমি ঢাকায় থাকি। রাত দু’টার দিকে গায়ে আগুন দিয়ে মৃত্যুর খবর পাই শারমিনের। মেয়েটা কি কারণে আত্মহত্যা করলো তা বুঝতে পারছি না। এখানে অন্যকোনো ঘটনা আছে কি না, তাও জানি না। তবে মেয়ের মাথায় একটু সমস্যা ছিল বলে দাবি করেন তিনি।
চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস রঞ্জন তলাপাত্র জানান, মেয়েটি তাদের স্কুলে ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়া অবস্থায় বিয়ে দেয় তার বাবা-মা । স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর গেলো জানুয়ারি মাসে স্কুলে পড়ালেখা করার জন্য ইচ্ছাপোষণ করে আমাদের কাছে। পরে তাকে ক্লাস নাইনে তাকে রেজিস্ট্রেশন করানো হয়। সে নিয়মিত ক্লাস করতো, গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ স্কুলে এসেছিল। সে খুবই ভালো মেয়ে ছিল। তাকে দেখে ও কথাবার্তা শুনে কখনও মনে হয়নি কোনো সমস্যা ছিল তার মাথায়।
এদিকে এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর মানসিক দুশ্চিন্তা ও পারিবারিকভাবে মায়ের সাথে কলহের কারণে আত্মহত্যা করেছেন শারমিন আক্তার ।