[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
সফলভাবে বসানো হয়েছে পদ্মা সেতুর ৩১তম স্প্যান। আজ বিকেল ৪টায় এটি জাজিরা প্রান্তের ২৫ ও ২৬ নং পিলালের উপর বসানো হয় দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের সহায়তায়। পদ্মা সেতুর ৪৬৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো এটি বসানোর ফলে। ৩১তম স্প্যানটিই ছিল জাজিরা প্রান্তের সর্ব শেষ স্প্যান। এ স্প্যানটি মাওয়া ও জাজিরাকে সংযুক্ত করেছে। এখন বাকী থাকল মাওয়া প্রান্তের আর ১০টি স্প্যান।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এসব তথ্য দিয়ে জানান, করোনার মধ্যেও পদ্মা সেতুর কাজ থেমে নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। ৩১তম স্প্যানটি ছিল একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। নদীর স্রোতে আর চ্যানেলের মুখে এটি স্থাপন করতে নৌ পথ বন্ধ করাতে হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ স্প্যানটি সফলভাবে বসাতে পারায় এখন আর তেমন কোনো জটিলতা থাকলো না। মাওয়া প্রান্তের বাকী ১০টি স্প্যান বসাতে তেমন বেগ পেতে হবে না। এ বর্ষায়ই এ ১০টি স্প্যান বসানো সম্ভব হবে।
তিনি জানান, নৌপথ বন্ধ করার পর ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ৩৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ভাসমান ক্রেন বহন করে নির্ধারিত পিলারের কাছে নিয়ে যায়। এরপর শুরু হয় স্প্যান বসানোর কার্যক্রম। ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে এটিকে ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে বসিয়ে দেয়া হয় ২৫ ও ২৬ নং পিলালের ওপর।
সেতুতে ২৯৫৯টি রেলওয়ে এবং ২৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। বর্তমানে রেলওয়ে স্ল্যাব বসেছে ১১০৫ টি ও রোডওয়ে স্ল্যাব ৬৩০টি বসানো হয়েছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের আরো জানান, ৩১তম স্প্যানটি কাল বৃহস্পতিবার বসানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ১১ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত অবহাওয়া খারাপ থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। তাই একদিন আগে বুধবার এটি বসানোর পরিকল্পা করা হয়। এটি জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের সংযোগ স্থল। যেখানে একটি নৌ চ্যানেল দিয়ে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটের ফেরিসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল করে। এ চ্যানেল দিয়ে এসকল নৌযান চলাচল করলে স্প্যানটি পিলালের উপর বসাতে মারাত্মক ঝুঁকি থেকে যায়। তাই নৌযান বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছিল বুধবার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট পরিহার করে ঢাকা-পাটুরিয়া-ভাংগা রুট ব্যবহার করার জন্য। আমাদের অনুরোধে সারা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নৌ পথ বন্ধ রাখায় ৩১তম স্প্যানটি পিলারের উপর বসাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। একেকটি খুঁটি ৫০ হাজার টন লোড নিতে সক্ষম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় নিজস্ব অর্থায়নে। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের ‘সিনো হাইড্রো করপোরেশন’।