[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি আলিম পরীক্ষায় ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে দুটি বিষয়ে । যৌন নিপীড়নের পর হুমকি-ধমকি মাথায় নিয়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে সে অংশ নিয়েছিল ওই দুটি পরীক্ষায় । এর পরই তাকে আগুনে হত্যা করা হয় পুড়িয়ে।
মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. হোসাইন বলেন, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে এবার আলিম পরীক্ষায় নুসরাতসহ পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৭৫ শিক্ষার্থী । তাদের মধ্যে পাস করে ১৫২ জন । কোরআন মাজিদ এবং হাদিস ও উসুলে হাদিস পরীক্ষায় ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে নুসরাত জাহান রাফি ।
তিনি আরো বলেন, সবগুলো পরীক্ষা দিতে পারলে ভালো ফল অর্জন করত নুসরাত। লেখাপড়ার প্রতি কতটা আগ্রহ থাকলে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও পরীক্ষায় অংশ নেয় একজন শিক্ষার্থী ।
পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সহপাঠী ও স্বজনরা নুসরাতের জন্য ভেঙে পড়ে কান্নায়। এ সময় উপস্থিত শিক্ষকদের চোখেও নেমে আসে শোকের অশ্রু। সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির তৈরি হয়।
ফল জানতে আসা নুসরাতের সহপাঠী নিশাত সুলতানা, নাসরিন সুলতানা, সাইফুল ইসলাম ও জাহেদুল ইসলাম বলেন, “আজ নুসরাতেরও পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে থাকার কথা ছিল আনন্দে । কিন্তু পাষণ্ডদের নির্মমতায় নুসরাত আজ আমাদের মাঝে নেই। সে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে দুটি পরীক্ষায় । বাকি পরীক্ষা দিতে পারলে ভালো ফল করত নুসরাত।”
এদিকে আলিম পরীক্ষার ফল প্রকাশের খবর পাওয়ার পর থেকে নুসরাতের স্বজনদের কান্না থামছে না । নুসরাতের মা শিরিনা আক্তারের বিলাপ করছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে দুনিয়ার পরীক্ষায় পাস করতে না পারলেও আখেরাতের পরীক্ষায় পাস করবে ইনশাআল্লাহ।’
কাঁদতে কাঁদতে নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, সকাল থেকে নুসরাতের বেশ কয়েকজন সহপাঠী ফোন দিয়ে রেজাল্টের খবর জানায়। কেউ ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে, কেউ ‘বি’ গ্রেড। ওরা নুসরাতের কথা বলে ভেঙে পড়ে কান্নায়। নুসরাত পরীক্ষা দিতে পারলে সেও ভালো রেজাল্ট করত বলে তারা জানায়।
নোমান আরো বলেন, ‘খুব মেধাবী ছিল নুসরাত। ২৭ তারিখের দুর্ঘটনার পর আমরা তাকে পরীক্ষা দিতে নিরুত্সাহিত করেছিলাম। কিন্তু সে পরীক্ষায় অংশ নেবে। ১ ও ২ এপ্রিল দুটি পরীক্ষায় অংশও নেয় সে।