[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
তানভীর হোসেন অপু
নারী তুমি লাবণ্যময়ী এক অসমাপ্ত কবিতার আত্মহুতি,
তোমাকে নিয়ে সারাক্ষণ শব্দের জাল বুনি।
তোমার সারা দেহে শুভ্র গন্ধে ভরে আছে আমার শৈশব
তুমি জগৎ জননী, তুমি বিশ্বব্রহ্মা
তোমাতেই মিশে আছে সকল পুরুষের হৃদপিণ্ড।
তোমার উদ্ধমূখী হাতে হাত রেখে পুরুষ যায় রণাঙ্গনে,
যেখানেই আহত হয় সেখানেই ঈশ্বরমূর্তি তুমি ;
শুশ্রূষা আর সেবায় কত পরম যত্ন -আত্মি।
তুমি লাস্যময়ী লজ্জাবতী লতিকার পুষ্পমালিনী
তোমার হাসিতে বিশ্ব হাসে,
তুমি কাঁদলে ভূলোক-ধুলোক ফাটিয়া পড়ে।
তুমি বিশ্বব্রহ্মা, তুমি বিশ্ববিধাত্রি, তুমি শ্রীমতি, শ্রেয়শী
তোমার কোমল পরম ছোয়ায় পাষাণ নরম হয়
দেখলে তোমার মায়াবি চাহনি, শীতল পরস পায় আমার অন্তরযামী।
তুমি নারী তোমাকেই খুঁজি যখন পিপাসাগ্রস্থ হই আমি।
হে প্রেমাংশু,নারীমূর্তি দেবী
এই হৃদয়ের অতল সুমুদ্দুরে দেবতার আসনে তুমি।
নুপুর পায়ে আলতা রাঙা চরণ দুখানি প্রত্যহ শিহরণ জাগায় অন্তরে প্রেমার্ত, ক্ষ্যাপাশূল হানি
সবকিছু তোমারে পাওয়ার লাগি।
সৃষ্টিলগ্নের আদিকাল হতে প্রেরণাময়ী তুমিই তো ছিলে
আজো শূন্য বিকেলে উদাস নয়নে ডান হাতটা ধরে তুমি।
নারী তুমি অবলা নও, ভালোবাসার উৎস জাগরণী,
তোমার কোলে মাথা রেখে মরতেও তো পারি!!
কখনো তুমি জগৎজননী, কখনো প্রেয়সী, কখনো সতী ভার্যা, কখনোবা স্বপনের আলোকবর্তিকা
এভাবেই নানা রূপে ধরা দাও তুমি।
তোমার বক্ষেতে শুধু শীতল দুগ্ধ নয়, ভালোবাসাও আছে জানি
ভূমিষ্ট শিশুর প্রথম আহার্যটাও যোগাও তুমি।
পুরুষের যত জয় যত বীরত্ব গাঁথা
সবকিছুর মূলে দেবীমূর্তি তোমারি অবদান সমানে সমানি,
আত্ম -সম্মান, গ্লানি, জরাজীর্ণ, বেদনার অশ্রু তোমারও তো আছে জানি,
তাইতো সময় পেলে মুখ লুকাও আচলের পানে, আর পড়ে টপটপ পানি।
কখনো তুমি বীরের মা, কখনো সন্তানহারা, কখনো সবর্সহারা বিধবা প্রতিমূর্তি
তবুও তুমি জেগে ওঠ আবার নতুন পতাকার অগ্নিলীলা সাক্ষী।
তুমি চির অম্লান, চির ভাস্বর
যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ করেছ কাঁধে কাঁধ রাখি
প্রিয় দেশটাকে ভালোবেসে বীরাঙ্গনা হয়ে বাঁচি।
তুমি ধর্ষিত নারী, তুমি কলঙ্কিত ভার্যা রূপ রমনী
তুমি আটকাতে পারোনি তোমার ১৪ বছরের বিয়ে,
নিকৃষ্ট সমাজের কাছে অন্যায় ভাবে হেরেছ তুমি।
তুমিই সেই নারী যার ছায়াতলে বসে কেটেছে আমার শৈশব -কৈশোর
তোমার শীতল পরস ঠাণ্ডা করেছিল আমার নবরূপ আত্মা।
গেরুয়া রংয়ের শাড়ি, ঠোঁটে টকটকে লাল লিপিস্টিক, কালো চশমা, পায়ে ঝনঝনানির শব্দ, আধো ল্যাংটা শরীর
নর্তকীদের ভিড়ে তোমারে দেখা মিলেছিল পাঁচতারকা বারে
তুমিই ছিলে সেই নারী।
তোমার লাগি বলী হয়েছে অনেক সভ্যতা ও জাতি
সেখানেও ছিলে তুমি।
নারী, তুমি আমার প্রথম ভালোবাসা
তোমার হাত ধরে চলতে শেখা।
যৌবন দীপ্ত শরীরে সারাক্ষণ কল্পনায় রং মাখি
সেই কল্পনায় নারীমূর্তি ছবিটিও তুমি।
তুমি পরিশ্রমী, অসম্ভব পরিশ্রমী
কখনো তুমি কৃষাণী, কখনোবা জেলেনি, সময়ের পরিক্রমায় আরো কতো কি!!
তুমি ভালোবাসার রথের সারথি,
অপরের জন্য নিজের সুখ দিয়েছে জলাঞ্জলি,
কবির চোখে তুমি আজীবন চিরযৌবনা যুবতী ভার্যা নারী।
লেখক: তানভীর হোসেন অপু, মার্কেটিং প্রথম বর্ষ, (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ)।