নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাবেক নেত্রী শারমিন গ্রেপ্তার

শনিবার, জুলাই ২৫, ২০২০,৪:২৩ পূর্বাহ্ণ
0
26

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক নেত্রী শারমিন জাহান। গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (ডিবি)।

এ তথ্য নিশ্চিত করেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।

অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক শারমিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএসএমএমইউর প্রক্টর অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামি শারমিন জাহান আওয়ামী লীগের গত কমিটির মহিলা ও শিশুবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক পদে ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে কোনো পদ না পেলেও দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি ২০০২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল শুক্রবার শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি দায়ের হয়েছে, তদন্ত চলছে।

এজাহারের বরাত দিয়ে তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্টার হিসেবে কর্মরত শারমিন জাহানের মালিকানাধীন ‘অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল’ গত ২৭ জুন ১১ হাজার মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ পায়। পরে এই কার্যাদেশের বিপরীতে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল ৩০ জুন প্রথম দফায় ১৩০০,  জুলাইয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় আরো ৪৬০ ও ১০০০ এবং চতুর্থ দফায় ৭০০ মাস্ক সরবরাহ করে। তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় পণ্য ‘সামগ্রিক গুণগতমানের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী পাওয়া যায়নি’ বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, কোনো কোনো ফেস মাস্কের বন্ধনী ছিঁড়ে গেছে, কোনো মাস্কের ছাপানো ইংরেজিতে লেখা ‘ত্রুটিপূর্ণ’ পাওয়া গেছে। এর ফলে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে, মাস্ক নিম্নমানের ছিল। এর ফলে কভিড-১৯ সম্মুখযোদ্ধাদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারত।

পুলিশ জানায়, এ বিষয়ে গত ১৮ জুলাই অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিএসএমএমইউ। এরপর ২০ জুলাই লিখিত জবাবে শারমিন দুঃখ প্রকাশ করেন, যা আসামির দোষ স্বীকারের শামিল। এ বিষয়টি আমলে নিয়ে শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় মামলা দায়ের করা হয় বলে ওসি জানান।

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর শারমিন ২০১৬ সালের ৩০ জুন স্কলারশিপ নিয়ে চীনের উহানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে উহানে লকডাউন শুরু হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তাঁর শিক্ষা ছুটির মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যে চীনে থাকা অবস্থায় গত বছরের মার্চে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল নামে সরবরাহকারী নিজের ব্যবসা শুরু করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শারমিন জাহান সাংবাদিকদের জানান, তিনি নকল মাস্ক সরবরাহ করেননি। তিনি বলেন, ‘এই মাস্ক আমরা তৈরি করিনি, এই মাস্ক চীন থেকে আনা হয়েছে। প্রডাক্ট খারাপ হলে, বিএসএমএমইউ প্রথমবারই বলতে পারত। তাহলে সেটা যাচাই করে দেখা যেত। এখন আইনি প্রক্রিয়ায় অভিযোগের মোকাবেলা করা হবে। মামলা যে কেউ করতে পারে। তবে আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে