[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য রোধ করতে দৃষ্টিভঙ্গিগত পরিবর্তন ও মাঠের লড়াইকে যুগপৎ এগিয়ে নিতে হবে। এছাড়া নারীর সামগ্রিক মুক্তি অর্জন সম্ভব নয়।
২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংসদ আয়োজিত “নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য বন্ধ ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের দাবিতে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জননেতা রাশেদ খান মেনন একথা বলেন। নারী মুক্তি সংসদের সভাপতি নারীনেত্রী হাজেরা সুলতানার সভাপতিত্বে রাজধানীর তোপখানা রোডের ওয়ার্কার্স পার্টির অফিস চত্বরে অনুষ্ঠিত এই সভায় তিনি আরও বলেন, করোনাকালীন মহামারিতে কর্মসংস্থান না থাকায়, সবাইকে ঘরে থাকার বাধ্যবাধকতায় এই সহিংসতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাল্যবিবাহ রোধে আইন থাকার পরও বাল্যবিবাহ বেড়েছে।
নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা সৃষ্টি হলেও বাতির নিচে অন্ধকারের মতই আজও পুরুষতান্ত্রিকতার জাঁতাকলে নারীরা পিষ্ট ও পদদলিত। করোনাকালে কর্মজীবী নারীদের বেকারত্ব, অনেক শ্রমজীবী, গার্মেন্টস নারীরা ন্যূনতম প্রণোদনা পান নি। আমরা যে নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতার কথা বলি এ লড়াই নারীর একার নয়। এটি নারী-পুরুষের সর্বজনীন লড়াই।
আজকে আফগানিস্তানে তালেবান ও মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের আঁতাতের ফলে ধর্মান্ধ তালেবান সেখানে ক্ষমতা দখল করেছে। তাদের প্রধান ও প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে নারী ও শিশু। তারা সেখানে গঠিত মন্ত্রীসভায় কোন নারীকে স্থান দেয়নি, স্কুল-কলেজ এমনকি কর্মক্ষেত্রে নারীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা পুনরায় নারীকে গৃহবন্দী করে রেখেছে। আমাদের দেশেও ঐ ধর্মান্ধ গোষ্ঠী, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীকে বর্বরোচিত ও রুচিহীনভাবে ‘ট্রল’ করা হয়। এরা তালেবানদেরই দোসর। এরা নারীকে পদদলিত, কোনঠাসা করে রাখতে চায়। নারীর তথা মানুষের সর্বজনীন অধিকার আদায়ে আমাদের রয়েছে এক গৌরবজনক ঐতিহ্য ও সংগ্রামের ইতিহাস। বেগম রোকেয়া, কবি সুফিয়া কামাল, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, শামসুন্নাহার মাহমুদ, কামরুল নাহার লাইলী প্রমুখ মহীয়সী নারীরা নারীর অধিকার তথা মানবাধিকার আদায়ে আমৃত্যু লড়াই সংগ্রাম করেছেন। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ ও সকল প্রকার বৈষম্য নিরসনে আমাদের তাদের কাছ থেকেই প্রেরণা নিয়ে এই লড়াইকে মাঠে নিয়ে যেতে হবে। দেশে বিদ্যামান এই সর্বগ্রাসী ধর্মান্ধতা, বর্বরতা, নৃশংসতা বৈষম্য প্রতিরোধ করতে হবে নতুবা দেশকে আফগানিস্তানের পরিণতি বরণ করতে হতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে নারী নেত্রী হাজেরা খাতুন বলেন, সাম্প্রতিক লকডাউন ও বিশ্ব পরিস্থিতিতে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা এহেন পরিস্থিতির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এহেন সহিংসতা ও বৈষম্য রোধে আমরা দেশব্যাপী আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলব। নারী মুক্তি সংসদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিউলী শিকদারের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এড. জোবায়দা পারভীন, এড. সুরাইয়া বেগম, মোস্তফা আলমগীর রতন, শাহানা ফেরদৌসী লাকী, ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি কাজী আবদুল মোতালেব জুয়েল, রাজিয়া সুলতানা প্রমুখ।