[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে আত্মপ্রকাশ ঘটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সব আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া দেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। ৪৭-র দেশ বিভাগ, ৫২-র ভাষা আন্দোলন, ৬২-র ছাত্র আন্দোলন, ৬৬-র ছয় দফা, ৬৯-র গণঅভ্যুত্থান, ৭০-র যুগান্তকারী নির্বাচন আর ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা আন্দোলন সবখানেই কৃতিত্ব এককভাবে আওয়ামী লীগের। ১৯৫২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। পরের বছর ঢাকার ‘মুকুল’ প্রেক্ষাগৃহে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সম্মেলনে তাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ১৩ বছর সাধারণ সম্পাদকের দাযত্বি পালন করেন শেখ মুজিব। উল্লেখ্য যে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ ছিলো তৎকালীন পাকিস্তানে প্রথম বিরোধী দল।
রাজামেহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে শুক্রবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা (উঃ) জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন “গৌরব, ঐতিহ্য ও সংগ্রামের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্যের রূপকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতি-রাষ্ট্র ও আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার সুমহান ঐতিহ্যের প্রতীক। পাকিস্তানি প্রেতাত্মা জামাত ও বিএনপি দেশের প্রতি বিদেশি শক্তির মাধ্যমে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে তাদের এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলার মাধ্যমে ২০২৪ সালে সরকার গঠন করাই হলো আমাদের অঙ্গিকার”।
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। আর ‘পূর্ব পাকিস্তান’ শব্দ দুইটি বাদ পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে। বাংলাদেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে প্রবাসী সরকারের সব কাগজপত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নাম ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৭০ সাল থেকে এ দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। পরবর্তী সময়ে দেশের অন্যতম প্রাচীন এ সংগঠনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই স্বাধীনতা অর্জন করে আজকের সোনার বাংলাদেশ।
দীর্ঘ পথপরিক্রমায় দেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন রাজনৈতিক দলটিকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর অনেকটা অস্তিত্ব সংকটেই পড়ে আওয়ামী লীগ। দলের ভেতরেও শুরু হয় ভাঙন। এর মধ্যে আবদুল মালেক উকিল-জোহরা তাজউদ্দীনের দৃঢ়তায় সংকট কাটিয়ে উঠতে শুরু করে দলটি। ১৯৮১ সালে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশে ফিরে এক দশক ধরে সারা দেশ ঘুরে দলকে সংগঠিত করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বেই ২১ বছর পর সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আবার সরকার গঠন করে দলটি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পুনরায় বিজয়ী হয়। এরপর ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে রাজামেহার হাইস্কুল মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন সিকদার (বুলু) এর সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা (উঃ) জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান বাবুল, ১১নং রাজামেহার ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন সরকার, ১৫নং বরকামতা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম, ৯নং গুনাইঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোকবল হোসেন মুকুল, ৬ নং ফতেহাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান কেএম কামরুজ্জামান মাসুদ, ১২ নং ভানী ইউপি চেয়ারম্যান হাজী জালাল ভূঁইয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রুবেলসহ প্রমূখ।