[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
আল-মামুন খান, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নারী কেলেঙ্কারি, স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা রাজ চন্দ্র রায় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন সাবেরীর বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিদ্যালয়ের অভিভাবক, শুভাকাঙ্খী, শিক্ষানুরাগী ও এলাকাবাসী প্রায় ৪০০ মানুষের স্বাক্ষরে পাহাড়সম লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকী বরাবর।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, তালজাঙ্গা রাজ চন্দ্র রায় উচ্চ বিদ্যালয়টি তাড়াইল উপজেলার একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। রাজা রাজ চন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠানটি তাদের এলাকার মানুষদেরকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে অত্যন্ত সুনামের সাথে পাঠদান চলছিল।
বর্তমানে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন সাবেরী ২০১৭ সালের আগষ্ট মাসে বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সাথে নারী কেলেঙ্কালীতে অভিযুক্ত হয় এবং তার নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়। বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হয়। ঘটনার সত্যতা থাকার পরেও পেশি শক্তি ও অর্থের জোড়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে দেয়। ২০১৭ সালের আগষ্ট মাসে নারী কেলেঙ্কারীতে অভিযুক্ত হওয়ার পর ফেরারী হয়ে টানা ছয় মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন মঈন উদ্দিন সাবেরী। ২০১৮ সালে অর্থের বিনিময়ে ভূয়া অডিট এনে শিক্ষকদের দুই মাসের বেতন না দিয়ে খরচের কথা বলে বিশাল অংকের টাকা জালিয়াতি করেন। বিদ্যালয়ের প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ২টি গাছ বিক্রি করেন। গ্রামের অসহায়-হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের থেকে বেতন, পরীক্ষার ফি, রেজিষ্ট্রেশন ফি, ছবি তোলা সহ বিভিন্নভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। করোনার সময়ে পরীক্ষার্থীদের থেকে নেওয়া ফি বোর্ড কর্তৃক ফেরত প্রদান করার নির্দেশনা থাকা সত্বেও তা ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির তথ্য গোপন করে বছরের পর বছর তাদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে বেতন আদায় করেন। আয়া পদে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৪৮ বছরের মহিলাকে দিয়ে টানা বছরের পর বছর বিদ্যালয়ের কাজ করান এবং বয়স সংশোধন করিয়ে চাকুরীর আশ্বাস দিয়ে আইডি কার্ড সংশোধন করান।
গত ১১ নভেম্বর তালজাঙ্গা ইউনিয়নের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য তালজাঙ্গা বাজারের খেলার মাঠে পরামর্শ সভার আয়োজন করেন। সভায় সকলের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর বিষয়টি তদন্তের জন্য লিখিত অভিযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
অভিযোগ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মোবাইল নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, তালজাঙ্গা রাজ চন্দ্র রায় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন সাবেরীর বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উল্লেখ করে বিদ্যালয়ের অভিভাবক, শুভাকাঙ্খী, শিক্ষানুরাগী ও এলাকাবাসীর স্বাক্ষরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।