[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় স্যানিটেশন মাস এবং বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর ২০২০ এবং বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস-২০২০ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। করোনা মহামারির এই দুর্যোগে এ বছরের প্রতিপাদ্য যথাক্রমে ‘উন্নত স্যানিটেশন নিশ্চিত করি, করোনামুক্ত জীবন গড়ি’ এবং ‘Hand Hygiene for All’ যথাযথ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে
ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠনের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৬.২ এর লক্ষ্য অর্জনে জাতিসংঘ নিরাপদ স্যানিটেশন
ব্যবস্থাপনাকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে। আমাদের সরকার দেশের সবার জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন
ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। সকলের দোড়গোড়ায় স্যানিটেশন সুবিধা
পৌঁছে দিতে হাইজিন প্রসারের জাতীয় কৌশলপত্র-২০১২, সেক্টর উন্নয়ন পরিকল্পনা ২০১১-২৫
সহ বাস্তবমুখী বিভিন্ন কৌশলপত্র ও নীতিমালা প্রণয়ন করা
হয়েছে। জনগণের মাঝে সচেতনতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় স্যানিটেশন মাস উদ্যাপনসহ
সর্বস্তরে বিভিন্ন কার্যক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে। ছেলেমেয়েদেরকে পাঠ্যসূচির অংশ
হিসেবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। সচেতনতামূলক বিভিন্নমুখী
কার্যক্রম গ্রহণ করায় স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অনিরাপদ পানি ও
অস্বাস্থ্যকর স্যানিটেশনজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে যা
শিশুমৃত্যু হার কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
গত সাড়ে এগারো বছরে দেশে স্যানিটেশন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। দেশে বর্তমানে ৯৮.৪ শতাংশ জনগণকে স্যানিটেশন এবং নিরাপদ পানির উৎসের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। ২০০৩ সালে যা ছিল মাত্র ৩৩ শতাংশ। অপর দিকে খোলা স্থানে মলত্যাগকারীর হার ২০০৩ সালের ৪৪ শতাংশ থেকে প্রায় শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশের এই সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসার দাবি রাখে। এছাড়াও নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। দেশের সকল জেলায় পানি পরীক্ষাগার স্থাপনসহ পানি, স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক অনেক প্রকল্প চলমান রয়েছে যা বাস্তবায়ন হলে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে।
টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও এর প্রয়োগ, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব উন্নত টয়লেট নির্মাণ ও ব্যবহার এবং স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিসহ নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় ও এর বিস্তার রোধের সবচেয়ে সহজ, সাশ্রয়ী ও কার্যকর উপায়গুলোর একটি হলো নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো সঠিকভাবে মেনে চলা। এক্ষেত্রে আমাদের সরকারের সময়োপযোগী কার্যক্রম গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে স্যানিটেশন আজ একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আমি এই সামাজিক আন্দোলনকে আরো বেগবান করে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও গণমাধ্যমসহ দেশের সকল নাগরিককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
আমি জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর ২০২০ এবং বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ২০২০-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”