[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
মর্মান্তিক ও ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায়। তার মধ্যে ঘটনাস্থলে ১৩ জন এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জন মারা যান। এই দুর্ঘটনায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন একজন চমেক হাসপাতালে ও লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া হাসপাতালে আরো দু’জন। এক শিশুও রয়েছে তার মধ্যে। দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশ নিহত ১৫ জনের মধ্যে ১৩ জনের পরিচয় নিশ্চিত করতে পেরেছে।
শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে কক্সবাজার ছেড়ে আসা লবণবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে যাত্রীবাহী লেগুনা পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে। মর্মান্তিক ও ভয়াবহ এই দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয় মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য তথা চুনতি বনরেঞ্জ কার্যালয়ের নিকটস্থ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে।
নিহত ১৫ জনের মধ্যে ১৩ জন হলেন, চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের কোরবানিয়া ঘোনার আব্বাস উদ্দিনের দুই ছেলে জসীম উদ্দিন (৩৩) ও তাওরাফ হোসেন বেলাল (১৮), বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীর কালামিয়ার ছেলে মোহাম্মদ বাদশা (৩৮), চকরিয়ার উত্তর হারবাংয়ের মৃত আমির হোছেনের বৃদ্ধ পুত্র আবদুস সালাম (৭০), লোহাগাড়ার চুনতি মীরখিলের আবদুর রশিদের পুত্র সিরাজুল ইসলাম (৪০), বড়হাতিয়ার কুমিরাঘোনার আবদুল মাবুদের পুত্র মোহাম্মদ রুবেল (২০), লোহারদিঘীর জাফর আহমদের পুত্র জহির উদ্দিন (২৮), উত্তর কলাউজানের আবুল হোছনের পুত্র মোহাম্মদ এনাম (৪৪), অজ্ঞাত আবদুর রশিদ (৫০), লেগুনা চালক (ছারপোকা) চকরিয়ার মৃত ছৈয়দ আহমদের পুত্র ফরহাদ উদ্দিন (১৮) ও হেলপার (সহকারী) খুটাখালী গর্জনীয়া পাহাড় এলাকার নূর মোহাম্মদের পুত্র মোহাম্মদ সুমন (১৫)।
এদিকে, দোহাজারী হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মো. ইয়াছির আরাফাত নিশ্চিত করেছেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স থেকে প্রেরণ করা তিনজনের মধ্যে আরো দুইজন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন বলে। তারা হলেন, চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের নবী হোছাইন (৪০) ও সাইফুল ইসলাম (৩০)। চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহত অপরজন। জানা গেছে, তারও অবস্থা আশঙ্কাজনক।
লোহাগাড়া থানার ওসি জাকির হোসাইন মাহমুদ ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে ১২ জন এবং অপর তিনজন হাসপাতালে নেওয়ার পথেসহ সর্বমোট ১৫ জন মারা যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হতাহতদের উদ্ধার করা হয় দুর্ঘটনার পর পরই থানা, হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় জনতার সহায়তায়। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের প্রেরণ করা হয়।
দোহাজারী হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মো. ইয়াছির আরাফাত জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়কের বাঁকের কারণে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। মহাসড়কের দুই পাশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায় দুর্ঘটনার পর পরই। পরে হতাহতদের একে একে বের করে আনা হয় দুর্ঘটনায় পতিত গাড়ির ভেতর থেকে। এরপর প্রায় এক ঘণ্টা পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয় ক্রেন দিয়ে গাড়ি দুটি মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে । তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনার পর পরই পালিয়ে যায় কক্সবাজার ছেড়ে আসা লবণবোঝাই ট্রাকের চালক। ট্রাক এবং যাত্রীবাহী লেগুনা পরিবহনের গাড়িটিকে জব্দ করা হয়। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এ ঘটনায়।