ঘোগাদহ ইউপিতে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন!

বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৩, ২০২০,৯:০৬ পূর্বাহ্ণ
0
106

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

এজি লাভলু, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ৪নং ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহ আলম মিয়া’র সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী ও ইউপি সদস্যগণ। এরই জের ধরে গত ১৮ এপ্রিল (শনিবার) ঘোগাদহ বাজারে চেয়ারম্যান শাহ আলম মিয়ার বিরুদ্ধে ত্রাণ কার্যক্রমের অনিয়ম ও অভিযোগ এনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন ইউনিয়ন পরিষদের ১২ জন সদদ্যের মধ্যে ১০ জন ইউপি সদস্যসহ এলাকাবাসী । তার ঠিক তার ২দিন পর ২০ এপ্রিল (সোমবার) চেয়ারম্যান শাহ আলম মিয়ার পক্ষ নিয়ে ঘোগাদহ বাজারে মানববন্ধন করে ইউনিয়ন যুবলীগের নেতাকর্মীরা ।

২১ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ঘোগাদহ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা জানা যায়, পাল্টাপাল্টি এরকম মানববন্ধন ও বিক্ষোভের কারণে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ।

ইউপি সদস্যদের অভিযোগ অনুযায়ী ১, ২, ৩, ৫, ৬নং ওয়ার্ডে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব এলাকায় অধিকাংশ লোকজন এখনো পায়নি সরকারি ত্রাণ সহায়তা । ২ ও ৬নং ওয়ার্ডের কিছু লোক ত্রাণ পেলেও তারা জানান সেসব ত্রাণের তালিকা চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে কিছু দলীয় সমর্থকরা তালিকা করেছেন । ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানানো হয় এখন পর্যন্ত তারা বরাদ্দ পেয়েছেন ১১ মেট্রিক টন চাল তারমধ্যে ৩৫০ থেকে ৪০০ পরিবারকে তারা সহায়তা করেছেন।

১০ জন ইউপি সদস্যদের মধ্যে অভিযোগকারী প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল জানান, “ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম মিয়া আমাদের কোন মিটিং-এ ডাকেন না, তিনি একায় একায় তালিকা করে ত্রাল দেন, আমাদের দায়িত্ব দেন না, আমরা আমাদের ভোটারকে ত্রাণ দিতে পারি না । আমাদের তিনি সম্মানী ভাতাও এখনো দেননি, আমরা চেয়ারম্যানের এমন দূর্নীতির বিচার চাই”।

মেম্বারদেরকে নিয়ে মিটিং এ না বসার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় কাজ করে এবং তার প্রায় সবাই এলাকায় এসেছে । তাই আমাদের ইউনিয়ন অনেক ঝুকিপূর্ণ। করোনাভাইরাস সংক্রামণ ঠেকাতে আমরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলেছি হাটবাজারগুলো এবং জনসমাগমস্থলগুলো লকডাউন করে দিয়েছি। এই অবস্থায় মিটিং কল করা ঝুকিপূর্ণ তাই সবাইকে প্রতিনিয়ত ব্যক্তিগতভাবে ও ফোনে বিভিন্ন বিষয়ে অবগত করে আসছি।”

তিনি আরও জানান, আমি করোনার কারণে এখনও ট্যাক্স তুলতে পারি নাই, তাই তাদের সম্মানী দিতে পারছি না। অভিযুক্ত ওয়ার্ড গুলোর তালিকা আমি পেয়েছি আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে ত্রাণ দিবো ইনশাআল্লাহ । তালিকা কারা করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বাররা কিছু দিয়েছেন এবং সংরক্ষিত নারী মেম্বাররাও দিয়েছেন কিছু।”

তাহলে কেন আপনার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ কেন? এই প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান শাহ আলম মিয়া বলেন, “স্থানীয় জামায়াত ও বিএনপির লোকজনের যোগসাজশে সরকারের খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই দেশে দুর্যোগ ও জনগণের দুর্দিনে তারা এই জঘন্য পথ বেছে নিয়েছেন।”

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান (বিপিএম) বলেন, “এলাকায় আইনশৃঙ্খলা যাতে বিঘ্ন না ঘটে, সদর থানার ওসিকে বলা হয়েছে, তিনি চেয়ারম্যানকে সর্তক করে দিয়েছেন।”

জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম এ ব্যাপারে জানান, চেয়ারম্যানের বিষয়ে সদর ইউএনও কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তিনি বিষয়টি সমাধানে চেষ্টা করছেন ।

উল্লেখ্য যে, ৪নং ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম মিয়ার বিরুদ্ধে ১৫০ বছরের পুরোনো বকুল গাছ বিনা নিলামে কাটা, বাজারের রাস্তার ইট তুলে নিয়ে বাথরুম বানানো, ঘাটের ইজারা ডাকা সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের ১০ জন ইউপি সদস্য।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে