[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো মহান মে দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বিবৃতিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের শ্রমিক শ্রেনীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছে, বাংলাদেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি ক্রমাগত জটিল রূপ নিচ্ছে তখন দেশের শিল্প-ব্যবসায়ের মালিকরা তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে জনগণের জীবন ও জীবিকা উভয়কে চরম বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ইতিমধ্যে গামেন্টস শিল্প মালিকদের চাপে গার্মেন্টস কারখানাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে, অন্যদিকে দোকান মালিকরা বিপনী বিতানসমূহ খুলে দেয়ার দাবী জানিয়েছে। যেখানে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রোলিয়ার “কমিউনিটি ট্রান্সমিশন” এর অবসান ঘটায় তারা পাঁচ-ছয় সপ্তাহের পর লকডাউন তুলে নিয়েছে, সেখানে সেই উদাহরণ টেনে বাংলাদেশের “কমিউনিটি ট্রান্সমিশন” যখন ক্রমাগত উর্ধগামী তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী লকডাউন তুলে দেবার পক্ষে সাফাই গাইছেন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয় যে পুঁজির ধর্ম মুনাফা খোঁজা এবং তার জন্য পুঁজির মালিক নিজের গলায় ফাঁস দিতেও দ্বিধা করেনা, সেখানে তাদের এই মুনাফা লোভের জন্য জনগণকে জিম্মি করা কেন, শ্রমিকদের নিশ্চিত আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া কেন। যুক্তরাষ্ট্র করোনা পরিস্থিতির এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করেছিল বলেই সেখানে মৃত্যুর মিছিল চলছে, আর ভিয়েতনাম কঠোর লকডাউন করায়, আক্রান্তদের বিচ্ছিন্ন করায় সেখানে একটিও মৃৃত্যুও ঘটেনি।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয়, গার্মেন্টস শিল্পসহ শিল্প-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এভাবে খুলে দেয়া কেবল অবিবেচনা প্রসূতই নয়, জনগণের জীবনকে জিম্মি করার শামিল।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে শ্রমিক-কর্মচারিদের বেতন দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৫০০০ কোটি টাকার তহবিল ঘোষণার পরও বিজেএমইএ, বিকেএমই এপ্রিল মাসে শ্রমিকদের ৬০% ভাগ বেতন দেবার জন্য শ্রমিকদের রাজী হতে চাপ দিচ্ছে, অন্যদিকে ছুটির মধ্যে লে-অফ ছাটাই সরকার নিষিদ্ধ করেলও নির্বিবাদে তা করে যাচ্ছে। যে সব কারখানা খোলা হয়েছে সেখানেও স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছেনা।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয়, এই অবস্থায় ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন’ সর্বনিম্ন পর্যায় না পৌছানো পর্যন্ত কেবল হটষ্টস্পটই নয়, সারা দেশে কঠোর লকডাউন অব্যহত রাখার এবং কোন অজুহাতে তাকে শিথিল না করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান হয়।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে উপসংহারে বলা হয়, করোন ভাইরাসের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তা জাতীয় ক্ষতি; সবাইকে এটা ভাগ করে নিতে হবে। সাধারণ মানুষ যদি পেটে ক্ষুধা ও জীবিকা হারানো ভয়ের পরও তা মেনে নিতে পারে, দেশের সম্পদশালী মালিকরা পারবেন না কেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয় করোনা পরিস্থিতির সামাল দেয়া হলে এদেশের কৃষক-শ্রমিক-শ্রমজীবি মানুষ তাদের পরিশ্রম দিয়ে অর্থনীতির চাকাকে আবার উর্ধমুখী করবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সভায় মহান মে’দিবসের ১৩৪ তম বার্ষিকী ও দেশের করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে আলোচনা উত্থাপন করেন পার্টির সাধারণ সম্পদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। আলোচনায় যুক্ত হন পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড ড. সুশান্ত দাস, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরড নুর আহমদ বকুল, কমরেড হাজেরা সুলতানা, কমরেড কামরূল আহসান, কমরেড মোস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, কমরেড আমিনুল ইসলাম গোলাপ, কমরেড অধ্যাপক নজরুল হক নীলু, কমরেড নজরুল ইসলাম হক্কানী ও কমরেড আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান।