[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জিয়া, তারেক রহমানের সংশ্লিষ্টতা ও বেগম খালেদা জিয়ার প্রশ্রয় দেয়ার ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ায় বিএনপি’র গাত্রদাহ শুরু হয়েছে’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ।
গতকাল রাজধানীর সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সমসাময়িক বিষয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। এ সময় বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর মন্তব্য ‘জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে সরকার মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে’ -এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে, দুর্নীতি মামলায় তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার কারণে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়ে সাজাভোগ করছে। প্রধানমন্ত্রী নজিরবিহীনভাবে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি মহানুভবতা দেখিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাবলে প্রশাসনিক আদেশে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে তিনি ছয়মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছেন। বাংলাদেশে এরকম আগে ঘটেনি।’
সুতরাং সরকার বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যে মহানুভবতা দেখিয়েছে তা যেমন তুলনাহীন আর বিএনপি যেভাবে পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে মানুষের প্রতি হিংসতা দেখিয়েছে, সেটিও তুলনাহীন, মন্তব্য করেন ড. হাছান মাহ্মুদ।
এক-এগারোর সরকার খালেদা জিয়াকে মাইনাসের চেষ্টা করেছিল-বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বিএনপি সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি-দুঃশাসনের কারণেই এক-এগারোর সরকার সৃষ্টি হয়েছিল। আপনারা জানেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল বিএনপি কীভাবে দেশ পরিচালনা করেছে। সেসময় দেশ দুর্নীতিতে পরপর ৫বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমানের সৃষ্টি হয়েছে, দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে ৫০০ জায়গায় বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করা হয়েছে। অর্থাৎ দুর্নীতি ও চরম অপশাসনের কারণেই এক-এগারোর সরকার সৃষ্টি হয়েছিল।’
সেই সরকারের মূল উদ্দেশ্য যদি খালেদা জিয়াকে মাইনাস করা হতো, তাহলে সেই সরকার প্রথমে এসে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করার কথা ছিল, সেটি কিন্তু তারা করেনি বরং এক-এগারোর সরকারের সময় ঘটা অন্যায়ের প্রতিবাদকারী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তাদের উদ্দেশ্য ছিল মূলত জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মাইনাস করা। পরে দেশের মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এবং এই গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই মাঠে নেমেছিল, বিএনপির কর্মীরা নয়।’
মির্জা ফখরুলের অপর বক্তব্য ‘রাজপথে নামতে পারলে গণতন্ত্র বিরোধীদের সরাতে পারবো’ -এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম কথা, বিএনপি রাজপথে নামতে তো বাধা নেই। এটি গণতান্ত্রিক দেশ, এখানে যে কেউ রাজপথে নেমে প্রতিবাদ করতে পারে, মিছিল-মিটিং করতে পারে। প্রেসক্লাবের সামনে আপনারা প্রতিদিন দেখছেন, সেখানে মিছিল-মিটিং-মানববন্ধন হয়, অবস্থান ধর্মঘট হয়, দেশের অন্য জায়গাও হয়। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বিএনপি যেখানেই মিটিং করছে, সেখানেই নিজেরা মারামারি করছে। রিজভী সাহেব ক’দিন আগে উত্তরবঙ্গে মিটিং করতে গেছেন, সেখানে নিজেরা মারামারি করে মিটিং বন্ধ করে দিয়েছে। মির্জা ফখরুল সাহেব নিজে ক’দিন আগে বলেছেন, এখন প্রয়োজন হচ্ছে বিএনপি’র ভেতরে ঐক্য। তার বক্তব্য অনুযায়ী অনুরোধ জানাবো বিএনপি ভিতরের ঐক্যটা একটু প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আর তাদের বিভিন্ন আলটিমেটাম আমরা গত সাড়ে ১১ বছর থেকে শুনে আসছি। এখন জনগণ অনেক সময় প্রশ্ন করে তাদের এই আলটিমেটাম কোনো বছরের জন্য। তাদের এ বক্তব্যগুলো আসলে হাস্যকর।’