[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
আজহারুল ইসলাম জনি (নিজস্ব প্রতিবেদক) : গত শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া, কালীগঞ্জ, টঙ্গী থেকে জেলা বিএনপি, যুবদল, শ্রমিক দল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন হাতে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। এবং জুমার নামাজের পর স্টেডিয়াম পূর্ণ হয়ে যায়।
গাজীপুর জেলা শহরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেছেন গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক ।
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে শুক্রবার বিকেলে গাজীপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘মানুষ আজ কোথাও নিরাপদ নয়। কক্সবাজারে আমার বোন স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে যেয়ে, সেখানে তিনি ধর্ষিত হয়েছেন। প্রতিদিন সংবাদ পড়লেই দেখবেন মা-বোনদের সম্মানহানি করা হচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে। এ সরকার যত দিন ক্ষমতায় থাকবে, আমাদের দেশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।’
নির্বাচন কমিশন নিয়ে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন করার জন্য সংলাপ শুরু করেছেন। আমরা হুদা মার্কা নির্বাচন কমিশন চাই না। নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে বর্তমান সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচন দিতে হবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা যে কারণে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেই অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন আর ভোট দিতে হয় না, আগের রাতেই ভোট হয়ে যায়। আমরা কথা বলতে পারি না। কথা বললেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়ে যায়। অনেক নেতা ও সাংবাদিক ভাইদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে আন্দোলন করি, আমাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মানুষ এখন ভোট দিতে চায় না, মানুষ এখন ভোট দিতে যায় না। কারণ, ভোট আগেই হয়ে যায়। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। সেটা এখন আর নেই।
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলার সৈন্যবাহিনীতে হাজার হাজার সেনা ছিল, কিন্তু লর্ড ক্লাইভ মাত্র কয়েক শত সৈন্য নিয়ে পলাশির প্রান্তরে নবাবকে পরাজিত করেন। বখতিয়ার খিলজি মাত্র ১৭ জন অশ্বারোহী নিয়ে জয়লাভ করেন। অতএব আপনারা যদি সুশৃঙ্খলিত না হন, আপনাদের মধ্যে শৃঙ্খলা না থাকে, তাহলে শুধু আবেগ দিয়ে চিৎকার করে স্লোগান দিয়ে যুদ্ধে জয়লাভ করা যাবে না। জনগণকে সংগঠিত করে তাদের নিয়ে মাঠে নামতে হবে। দেশের এই সংকট শুধু খালেদা জিয়ার নয়, বিএনপির নয়, তারেক রহমানের নয়, এই সংকট সব জনগণের।’
সমাবেশে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর আগে গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের মাঠে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল খালেদা জিয়ার। কিন্তু সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে সেই সমাবেশ বন্ধ করে। দীর্ঘদিন পরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে আমরা আবার একটি সমাবেশ করতে পেরেছি।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী সাইয়েদুল আলম ও মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব সোহরাব উদ্দিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন সরকার, সাবেক সাংসদ হাসান উদ্দিন সরকার, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম, বিএনপির সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ূন কবীর খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কালিয়াকৈর পৌর মেয়র মজিবুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাজহারুল আলম, হেলাল উদ্দিন, জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া সহ আরো অনেকেই।