[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
এজি লাভলু, স্টাফ রিপোর্টার: ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বীর প্রতীক আব্দুল হাই সরকার তার মুক্তিবাহিনীকে নিয়ে পাক হানাদারমুক্ত কুড়িগ্রামে প্রবেশ করে ওভারহেড পানির ট্যাংকিতে স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় নিশান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সেই স্মৃতি ধরে রাখতে স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জানা যায়, ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বীরপ্রতীক আব্দুল হাই সরকারের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অমিত তেজে যুদ্ধ করে পাকিস্তান বাহিনীকে পরাজিত করে অবরুদ্ধ কুড়িগ্রামকে হানাদার মুক্ত করেছিল। ওইদিন বিকেল ৪টায় কুড়িগ্রাম শহরে অবস্থিত সরকারি মহিলা কলেজ ও জেলা নির্বাচন অফিস সংলগ্ন ওভারহেড পানির ট্যাংকের উপর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করে চারিদিকে বিজয় বার্তা ছড়িয়ে দেন আব্দুল হাই সরকার। ২৩০দিন পাকহানাদার বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে মুক্ত হয় কুড়িগ্রাম।
এর আগে বৃহত্তর কুড়িগ্রাম অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা ব্রিগেডিয়ার জসির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ষষ্ঠ মাউটেন্ড ডিভিশনের সহযোগীতায় পাকবাহিনীর উপর প্রচন্ড আক্রমন চালিয়ে ১৪ নভেম্বর ভুরুঙ্গামারী, ২৮ নভেম্বর নাগেশ্বরী এবং ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত উত্তর ধরলা হানাদার মুক্ত করে। ১ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিক থেকে কুড়িগ্রাম শহর ঘিরে ফেলে পাকবাহিনীর উপর আক্রমন শুরু করে। পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে পাকবাহিনী গুলি করতে করতে ট্রেনযোগে কুড়িগ্রাম শহর ত্যাগ করে রংপুরের দিকে পালিয়ে যায়। বীর প্রতীক আব্দুল হাই সরকার জানান, বর্তমানে উক্ত স্থানটি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি জানাতে এবং স্মৃতি সংরক্ষণে একটি নামফলক স্থাপন করা অতীব জরুরী। এজন্য চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি আবেদন করেছি।
এ ব্যাপারে সংরক্ষণ কমিটির আহবায়ক কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বীহী অফিসার নিলুফা ইয়াছমিন জানান, কমিটির চিঠি পেয়েছি। সকলে মিলে বসে জেলা প্রশাসকের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। উল্লেখ্য, বিজয় পতাকা উত্তোলনের স্থান সংরক্ষেণের জন্য কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা ইয়াছমিনকে আহবায়ক করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ইউনিট কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম টুকু, সদর উপজেলার সাবেক কমান্ডার আব্দুল বাতেন সরকার, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো: আমিনুল ইসলাম ও কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু।