কুড়িগ্রাম বিএনপিতে গ্রুপিং চরমে

শনিবার, জুন ১৭, ২০২৩,৪:০৪ অপরাহ্ণ
0
388

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

সদর উপজেলা কমিটি ঘোষিত

নিজস্ব সংবাদদাতা : কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির গ্রুপিং বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে। জেলা বিএনপির সভাপতি-সম্পাদক দু’গ্রুপের দুই কার্যালয়ের মাধ্যমে বিভক্ত। দুই গ্রুপের গ্রুপিং ছড়িয়ে পড়েছে জেলা পর্যায় থেকে ওয়ার্ড পর্যায়েও। কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সকল উপজেলা ও পৌর শাখা সহ অঙ্গদল সমূহে দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে আগে থেকেই। আজ কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি প্রদানের মধ্য দিয়ে জেলা বিএনপির দ্বন্দ ও গ্রুপিং এর চূড়ান্ত রূপ দেয়া হয়েছে বলে কুড়িগ্রামের সর্বত্রই আলোচিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০১৫ সালে। এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেছে। নতুন জেলা কমিটি না হওয়ার প্রেক্ষিতে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা সহ অন্যান্য উপজেলা ও পৌরশাখার সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। দলীয় কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।

গতকাল ১৬/০৬/২০২৩ খ্রিস্টাব্দে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা অনুমোদিত কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কমিটিতে জহুরুল আলমকে আহবায়ক ও মাজেদুল ইসলাম তারাকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট্য একটি আহবায়ক কমিটি প্রদান করা হয়েছে। প্রথমতঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় কমিটি প্রকাশ পেলে এনিয়ে সমগ্র জেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি’র সভাপতি তাসভির-উল-ইসলাম সমর্থিত গ্ৰুপটি প্রেস রিলিজ দিয়ে ঘোষিত কমিটির অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রেস রিলিজে আরও বলা হয়েছে যে, কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক ঘোষিত কমিটির কোন সম্পৃক্ততা নেই। কেননা বর্তমানে কোন কমিটি প্রদান করলে তা কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক করতে হবে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এককভাবে কোন কমিটি দলের সংবিধান মোতাবেক অনুমোদনের এক্তিয়ার রাখেন না। তিনি কেবল জেলা সভাপতি বরাবর সুপারিশ প্রদানের অধিকার রাখেন। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি সহ ইতোপূর্বে তিনি যে সকল কমিটি একক স্বাক্ষরে অনুমোদন করেছেন তা যেমন অবৈধ তেমনি অসাংগঠনিক। অতীতে ফুলবাড়ী,নাগেশ্বরী ও রাজিবপুর উপজেলা বিএনপির ক্ষেত্রে এমনটি করা হয়েছে।

প্রেসরিলিজ দাতা কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক ও দপ্তরের দায়িত্বে আশরাফুল হক রুবেল আরও বলেছেন, গত ১৪ই মে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির আজিজ-মাহবুব এর নেতৃত্বের কমিটি ৭ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি বলে যে মন্তব্য করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি ২/১১/২০১৫ সালে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সুপারিশ করেছিলেন এবং তা সভাপতির স্বাক্ষরে অনুমোদিত।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটির আহবায়ক জহুরুল আলমের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজিজ-মাহবুব এর নেতৃত্বে সদর উপজেলা কমিটি ৭ বছরেও সুপার ফাইভের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং অকার্যকর বিধায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নতুন কমিটি প্রদান করেছেন। তাছাড়া ইতোপূর্বে আমি একযুগের বেশি সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলাম। একারণে হয়ত তিনি আমার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। নতুন কমিটির সদস্য সচিব মাজেদুল ইসলাম তারাকে ফোন কলে পাওয়া যায়নি।

নিজের কমিটির বৈধতা দাবি করে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুর রহমান মাহবুব বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণের অজুহাত তুলে জেলা বিএনপির সেক্রেটারি যদি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা করেন তাহলে আমি বলব, আগে জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির মেয়াদ আছে কিনা তিনি যেন একটু খোঁজ নেন। তার অসাংগঠনিক কর্মকান্ড দলের কেউ আমলে নেয়নি, নিবেও না।

কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণায় বলেন, এরকম হটকারী, অসাংগঠনিক সিদ্ধান্ত দলে শুধু বিশৃংখলার পরিধি বৃদ্ধি করবে। দলীয় শৃংখলা বলতে নেতাকর্মীদের কাছে কোন দৃষ্টান্ত উপস্থাপনের মত আর কিছু নেই। এতদসংক্রান্ত বিষয়ে তিনি দ্রুত কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। জেলা বিএনপির আরেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু বলেছেন, সদর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণার বিষয়টি অসাংগঠনিক। এমন আরও অনেক অবৈধ, অনিয়মতান্ত্রিক কার্যকলাপ বিষয়ে সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। আশা করছি তিনি সহসাই সব কিছুর সমাধান করে দিবেন।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে