একাত্তরে পাকিস্তানী অস্ত্রবাহী সোয়াত জাহাজ প্রতিহত করেছিলো বন্দর শ্রমিকেরা

মঙ্গলবার, মার্চ ২২, ২০২২,৩:৪৩ অপরাহ্ণ
0
13

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের প্রাচীন ও প্রকৃতিগত বন্দর। বন্দরের ইতিহাস হাজার বছরের। এই বন্দরকে ঘিরে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সমৃদ্ধ হয়। অর্থ্যাৎ চট্টগ্রাম বন্দর বাঁচলে দেশ বাঁচবে এবং অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। বন্দরের শ্রমিকেরা ইতিহাসের অনেক ঐতিহ্যবাহী ঘটনার সাক্ষী। ১৯৭১সালে বাঙালীদের দমন করার জন্য পাকিস্তানী সোয়াত জাহাজে করে যে বিপুল পরিমাণের অস্ত্র নিয়ে বন্দরে নোঙ্গর করতে চাইলে তা প্রতিরোধ করেছিলো এই বন্দরের শ্রমিকেরা। সেদিন পাকিস্তানী সেনাদের আক্রমণে অনেক শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন। তাই বন্দর শ্রমিকদের এই আত্মত্যাগ ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে, থাকবে। সেই বন্দর শ্রমিকদের নেতা ছিলেন শামশুল হক শফি। তিনি ছাত্র জীবনে র্পোট কলোনীতে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে সাংগঠনিক কাজ শুরু করে পরবর্ত্তীকালে চট্টগ্রাম বন্দরে চাকরী নিয়ে চট্টল বীর এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর হাত ধরে শ্রমিক রাজনীতিতে জড়িয়ে ছিলেন। তার নেতৃত্বেই বন্দর রক্ষা আন্দোলন সহ শ্রমিকদের দাবী-দাওয়া আদায় করা সম্ভব হয়েছিলো। গতকাল সোমবার বিকেলে র্পোট কলোনীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে বন্দর এলাকার নাগরিক কমিটির আয়োজনে জাতীয় শ্রমিক নেতা মরহুম শামশুল হক শফির স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।


বীর মুক্তিযোদ্ধা রেদওয়ানুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, মহানগর শ্রমিকলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল খালেক চৌধুরী, ডক বন্দর শ্রমিকলীগ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি এড. মাহফুজুর রহমান খান, নারী নেত্রী নূরজাহান বারী, এ.কে.এম আলাউদ্দিন, শওকত হোসেন জগলু, মোকারম হোসাইন, সাইফুর রহমান স্বপন, মেজবাহ উদ্দিন মোর্শেদ, আব্দুল ওয়াহাব, নাছির উদ্দিন শামীম, সৈয়দ আহমদ বাদল, মো. সোলায়মান, আবু বক্কর মোল্লা, শামসুদ্দিন টুনু, আমির হোসেন, আব্দুর রহিম, শামশুল হক শফির ভাই ইকবাল উদ্দিন প্রমুখ।

মেয়র আরো বলেন, জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ট্রেড ইউনিয়ন সমন্বয় বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে শামশুল হক শফি স্বৈরাচার বিরোধী ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার শারিরীক অসুস্থতা থাকা স্বত্বেও শরীরের দিকে খেয়াল না রেখে সংগঠনের জন্য নিস্বার্থভাবে কাজ করে গেছেন। এই রকম ত্যাগি নেতা আজকের দিনে পাওয়া বিরল।

বন্দর জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি এড. মাহফুজুর রহমান খান বলেন, শামশুল হক চৌধুরী ছিল আমার কমিটির সাধারণ সম্পাদক। সে একজন দক্ষ সংগঠক ছিলো। সেই সাথে ছিলো বিনয়ী। আমরা যৌথভাবে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল, ১৪২টি ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সরকারের কাছে দাবীনামা পেশ করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দুইটি প্রকল্প একনেক সভায় গেলে তিনি তা অনুমোদন করেছিলেন। এভাবেই বন্দরের উন্নয়নের জন্য শফি এবং আমরা মিলে ভূমিকা রেখেছিলাম।
বন্দর ডক শ্রমিক নেতা আব্দুল খালেক চৌধুরী বলেন, বন্দর শ্রমিকলীগ এম.এ হান্নানের হাত গড়া সংগঠন। শামশুল হক শফি এই সংগঠনের নেতৃত্বে এসেছিলেন। এই সংগঠনের কারণে আমেরিকান স্টিভেটর কোম্পানীর মাধ্যমে বন্দরকে বেসরকারি খাতে দেয়ার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হয়েছিলো। এই আন্দোলন সংগ্রামে মরহুম শামশুল হক শফি ছিলেন অন্যতম কান্ডারী।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে