আমার মেয়ে দুনিয়ার পরীক্ষায় পাস করতে না পারলেও আখেরাতের পরীক্ষায় পাস করবে: নুসরাতের মা

বুধবার, জুলাই ১৭, ২০১৯,১১:০৯ পূর্বাহ্ণ
0
87

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

নুসরাত জাহান রাফির আলিম প্রকাশ হয়েছে পরীক্ষার ফল । যৌন নিপীড়নের পর হুমকি-ধামকি মাথায় নিয়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে দুটি পরীক্ষায় নুসরাত অংশ নেন । দিয়েছিলেন প্রথম পরীক্ষা ফলাফল বিবরণীতে দেখা যায়, কোরআন মাজিদ, হাদিস ও উসুলে হাদিস পরীক্ষায় নুসরাত জাহান রাফি ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে। বাকি পরীক্ষায় আর নুসরাত অংশ নিতে পারেননি । যার কারণে অকৃতকার্য সম্বলিত ফল আসে নুসরাতের।

সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে এবার আলিম পরীক্ষায় নুসরাতসহ ১৭৫ শিক্ষার্থী  অংশ নেয় পরীক্ষায়। এদের মধ্যে পাস করে ১৫২ জন । নুসরাতসহ  ফেল করে ২৭ জন। এ মাদরাসায় এবার পাসের হার ৮৬.৮৬ শতাংশ।

মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. হুসাইন বলেন, নুসরাত সবগুলো পরীক্ষা দিতে পারলে ভালো ফল করতো। লেখাপড়ার প্রতি মেয়েটার কতটা আগ্রহ থাকলে পরীক্ষায় অংশ নেয় এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে । 

পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর নুসরাতের সহপাঠী ও স্বজনরা শোক ধরে রাখতে পারছেন না। বুধবার মাদরাসায় পরীক্ষার ফলাফল জানতে আসা শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন নুসরাতের জন্য । এ সময় উপস্থিত শিক্ষকদের চোখেও নেমে আসে শোকের অশ্রু। সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

এদিকে আলিম পরীক্ষার ফল প্রকাশের খবর পাওয়ার পর থেকে নুসরাতের স্বজনদের কান্না থামছে না । নুসরাতের মা শিরিনা আক্তারের বিলাপ যেন থামতেই চায় না। শিরিনা আক্তার বলেন, আমার মেয়ে দুনিয়ার পরীক্ষায় পাস করতে না পারলেও আখেরাতের পরীক্ষায় পাস করবে।

২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন । এ ঘটনায় ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেন সোনাগাজী মডেল থানায় । ওই দিনই পুলিশ আটক করে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। এ ঘটনার পর থেকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার সহযোগীরা নানাভাবে নুসরাতের পরিবারকে চাপ দেয় মামলা তুলে নিতে ।

জানা যায়, নুসরাত ছাত্রী হিসেবে মেধাবী ছিলেন। ২৭ তারিখের দুর্ঘটনার পর আমরা তাকে পরীক্ষা দিতে নিরুৎসাহিত করে বন্ধুরা। কিন্তু সে অংশ নেবে পরীক্ষায় । ১ ও ২ এপ্রিল অংশও নেয় সে দুটি পরীক্ষায় । পরে ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দিতে গেলে তাকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। 

৬ এপ্রিল নুসরাতকে কৌশলে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফেনী সদর হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বার্ন ইউনিটে পাঠান । সেখানে ১০ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে  মারা যান নুসরাত।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে