আগামী দুই বছরে জাতিসংঘ আমাদের দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করবে: চসিক মেয়র

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯,৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ
0
48
ফাইল ছবি

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে নগরীর বাকলিয়া স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন।

ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে কুচকাওয়াজ এর উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র। এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. সলিমউল্লাহ বাচ্চু, হাসান মুরাদ বিপ্লব, নাজমুল হক ডিউক, আবিদা আজাদ, সচিব মো. আবু সাহেদ চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া প্রমুখ। উদ্বোধণী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র বলেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। দীর্ঘ নয়মাস রক্তাক্ত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হয়।

মহান বিজয় দিবসে আমি সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছি এইসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের রক্তের বিনিময়ে এবং যারা জীবন বাজী রেখে এই দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। তিনি বলেন, যে আশা- আকাঙ্খা ও স্বপ্ন-সাধ নিয়ে ত্রিশ লক্ষ মানুষ ও দু’লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল-সেই অভিষ্ঠ লক্ষ্যে আমাদের পৌঁছাতেই হবে।

এ প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ পূরণে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান সরকার ১১ বছর ধারাবাহিকভাবে এদেশ পরিচালনা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ ও সাহসী নেতৃত্বে দেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে আমারা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে অবস্থান করছি। আগামী দুই বছরের মধ্যে জাতিসংঘ আমাদের বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করবে। ইতোমধ্যে এই মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার যে শর্তাবলী ছিল তা আমরা প্রধানমন্ত্রী সুদক্ষ নেতৃত্বে পুরন করতে সক্ষম হয়েছি। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশ। এ লক্ষ্য পূরণে দেশের আপামর জনসাধারণকে সরকারের সকল কর্মকান্ডে সর্বাত্বক সহযোগিতা দেয়ার আহ্বান সিটি মেয়রের। কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লের বিচারক ছিলেন চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আকতার, আইন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন। প্রথম ডিসপ্লে প্রদর্শন করে পাঁচলাইশ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় গাইড দল।

এরপর পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন বালিক উচ্চ বিদ্যালয়সহ একে একে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৫ মিনিট স্থায়ী ডিসপ্লে প্রদর্শন করে। কখনো স্মৃতিসৌধ, কখনো মুক্তিযুদ্ধ, কখনো লাল সবুজের উত্তাল ঢেউ মূর্ত করে তোলে শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হয় পুরস্কার বিতরণ পর্ব। ডিসপ্লে বালিকাদের ১ম স্থান অধিকার করে পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন বালিক উচ্চ বিদ্যালয়, ২য় স্থান পাঁচলাইশ সি/ক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ৩য় স্থান হোসেন আহম্মদ চৌধুরী সি/ক স্কুল এন্ড কলেজ এবং ডিসপ্লেতে বালকদের মধ্যে ১ম স্থান করে জুলেখা আমিনুর রহমান সি/ক উচ্চ বিদ্যালয়, ২য় স্থান করে হালিশহর মহব্বত আলী সি/ক উচ্চ বিদ্যালয় ও পোস্তারপাড় সি/ক বালক উচ্চ বিদ্যালয় অর্জন করে।

ডিসপ্লেতে কলেজ পর্যায়ে ১ম স্থান কুয়াইশ বুড়িশ্চর শেখ মোঃ সি.ক. কলেজ, ২য় স্থান কুলগাঁও সি.ক. কলেজ ও ৩য় স্থান কাপাসগোলা সি.ক. মহিলা কলেজ অর্জন করে। এছাড়া কিন্ডার গার্টেন, গাইড দল, স্কাউট দল, রোভার ও রেঞ্জার দলের কুচকাওয়াজের ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীদের পুরস্কার দেয়া হয়। এর আগে ভোরে কেন্দ্রীয় শহীদ বেদীতে সিটি মেয়রের নেতৃত্বে চসিক কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারী পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, এরপর আন্দরকিল্লাস্থ সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখান থেকে মেয়র টাইগারপাসে বিন্না ঘাস প্রকল্পে নগর যুব মহিলা লীগ স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান। বাকলিয়া স্টেডিয়ামে শিক্ষার্থীদের ডিসপ্লেতে মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’, ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘নোঙর তোলো তোলো সময় যে হলো হলো’, ‘তীরহারা এ ঢেউয়ের সাগর’ কালজয়ী সব গান। তার সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত খুদে শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক ডিসপ্লে মুগ্ধ করেছে হাজারো অভিভাবক, শিক্ষক আর দর্শক-শ্রোতাদের। চসিক পরিচালিত ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ ডিসপ্লে প্রদর্শন করেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ বিকেলে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে চিত্রাংকন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণী সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। এ প্রতিযোগিতায় রচনা লিখন, উপস্থিত বক্তৃতা, চিত্রাংকন, সাধারণ নৃত্য, লোকনৃত্য, আবৃতি, রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীত, দেশের গান, লোক সংগীত চিত্রাংকন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় ৭২০ জন প্রতিযোগী অংশ গ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা। এতে বক্তব্য রাখেন চসিক শিক্ষা স্বাস্থ্য স্ট্যাডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়া।

এই সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান সলিমউল্লাহ বাচ্চু, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেম, উপ সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু, অধ্যক্ষ আবু তালেব, অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন, অধ্যক্ষ ঝিনু আরা বেগম, অধ্যক্ষ মনোয়ার জাহান, অধ্যক্ষ সাহেদুল কবির সহ চসিকের কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে