‘অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ রাজনৈতিক অঙ্গনেও বাঙালি জাতীয়তাবাদীর চেতনার আলোকবর্তিকা’

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯,৬:০২ পূর্বাহ্ণ
0
52

[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]

বঙ্গবন্ধু সাংষ্কৃতিক জোটের স্মরণসভায় অংশগ্রহণ করেন মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ চট্টগ্রামে সাংবাদিক অঙ্গনের একজন সুনিপুন পথিকৃৎ।

রাজনৈতিক অঙ্গনেও তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদীর চেতনার একটি আলোকবর্তিকা। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবেও তাঁর অন্যতম ভূমিকা ইতিহাসের পাথায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আজ বিকালে নগরীর পল্টন রোডস্থ জহুর আহমদ চৌধুরী টাওয়ারে দৈনিক আজাদীর সাবেক সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের বিশ্বস্থ সহচর অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের ১৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলা আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আজ শুদ্ধাচারী রাজনীতির অভাব রয়ে গেছে। এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী রাজনীতিকে অর্থবিত্তের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাদের বিরুদ্ধে সুদৃঢ় অবস্থান নিয়ে দেশ, সমাজ এবং দলকে পরিশুদ্ধ করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এই প্রয়াসে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। স্মরণসভায় মুখ্য আলোচক বাংলাদেম আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন চৌধুরী বলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ সম্পাদক ও সাংবাদিক হিসেবে যেমন সত্যদ্রষ্টা ছিলেন একইভাবে রাজনীতিক হিসেবেও তিনি ছিলেন নিলোর্ভ। ৭০’র জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাউজান থেকে ফজলে কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে তাকে বঙ্গবন্ধু নৌকা প্রতীক দিয়েছিলেন। তিনি নির্বাচন করতে না চাইলেও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ও আদেশ অনুযায়ী নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হিসেবে ফজলুল কাদের চৌধুরীকে ধরাশায় করেছিলেন। এরপর অসহযোগ আন্দোলনের সময় তিনি বাঙালি জাতিসত্তার উত্থানে আন্তরিকভাবে সক্রিয় ছিলেন। মু্িক্তযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি ভারতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রানিত করেছিলেন এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন উপদেষ্টা ও পরামর্শক হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বাকশাল ঘোষণা করলে তাকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলার গর্ভণর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পরেই ৭৫’র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর যে পথ পরিবর্তন ঘনীভূত হয় তখনও তিনি আপোষ করেননি। তাঁর এই চারিত্রিক গুণাবলী আদর্শিক রাজনীতিকদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

বিশেষ অতিথির ভাষণে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শফর আলী বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদকে খুব কাছ থেকেই দেখা ও জানার সুযোগ ঘটেছিল। তার মধ্যে সামান্য অহংবোধও ছিল না। তার কাছে সবসময় সৎ পরামর্শ পেয়েছি। একজন মানুষ হিসেবে তিনি মানুষের জন্যই নিবেদিত ছিলেন। মরহুম অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁরই সন্তান মোহাম্মদ জহির বলেন, আমার বাবার প্রতি চট্টগ্রামবাসী শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় আমাদের পরিবার অবিভূত। আমরা জানি আমার বাবা কখনো তাঁর জীবনাদর্শনে কোন মোটা দাগ ছিল না।

এই কারণেই তিনি সর্বজনের কাছে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন। স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ একজন সাংবাদিক ও সম্পাদক হিসেবে যতটা সার্থক ছিলেন রাজনীতিক হিসেবেও তিনি ততটা সার্থক। পদ পদবীর জন্য তাঁর কোন আকাক্সক্ষা ছিল না। তাঁর আরাধ্য ছিল মানুষের কল্যাণ ও সমাজের প্রগতি। একজন সৎ মানুষ হিসেবে তাঁর সততার মাপকাঠি ছিল অনন্য উচ্চতায়। এ কারণেই তিনি আমাদের অন্তরে চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবেন।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাবেক ছাত্রনেতা এম এ মান্নান শিমুলের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম দোকান কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌস হাফিছ খান রুমু, চসিক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, নগর যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সুমন দেবনাথ, প্রাবন্ধিক ও লেখক শেখ মুজিব আহমেদ, জাবেদুল আলম সুমন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সুমন সাহেদ সিদ্দিকী, সম্মিলিত হর্কাস ফেডারেশনের সভাপতি মো: মিরন হোসেন মিলন, তামাকুমন্ডী লেইন কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো: বখতেয়ার, চট্টগ্রাম হর্কাস লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: হারুন অর রশিদ, চিত্রশিল্পী জয়দেশ দাশ যদু, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন হর্কাস লীগের প্রচার সম্পাদক মো: দুলাল হোসেন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন নগর যুবলীগ সদস্য মো: রুবেল, মো: ফারুক, মো: জয়নাল, মো: সাদ্দাম হোসেন, মো: সাগর, ওমর ফারুক পারভেজ, নগর ছাত্রলীগের সদস্য অভিজিৎ দে ঝুমুর, ফখরুল ইসলাম ফরহান, অরুপ বড়–য়া, কুমার রাজর্ষি, মো: পান্নু হাসান চৌধুরী, মো: সাইফুল খান রানা, শহীদুল ইসলাম বাপ্পী প্রমুখ। স্মরণসভার শুরুতেই মরহুম অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট দ^াঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়য়।

বিঃদ্রঃ মানব সংবাদ সব ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সাদরে গ্রহণ ও উৎসাহিত করে। অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পরিহার করুন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে