[ + ফন্ট সাইজ বড় করুন ] /[ - ফন্ট সাইজ ছোট করুন ]
দেশজুড়ে ধর্মবাদী অপশক্তির আস্ফালন রুখতে সকল অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানালো বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।
আজ ৩ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) ভাস্কর্য বিতর্কসহ সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ভূত পরিস্থিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এ আহ্বান জানান।
সকাল ১১ টায় ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কমরেড রাশেদ খান মেনন বলেন, একটি বিশেষ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ধর্মবাদীরা ভাস্কর্যের বিরোধীতা করছে। অগণতান্ত্রিক অপশক্তি সব সময়ই ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। পাকিস্তান আমলে এবং বাংলাদেশ পরবর্তী সময়েও করা হয়েছে। এবারও ধর্ম বিতর্ককে সামনে আনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুসহ সকল ভাস্কর্য বিরোধীতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ’৭২-এর সংবিধান, এমনকি বর্তমান সংবিধানের বিরোধী। তাই ধর্মবাদী অপশক্তিকে রুখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় সকলকে সোচ্চার কণ্ঠেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, হেফাজতসহ ধর্মবাদীদের ভাষ্কর্য বিতর্ক তাদের মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করার কূট প্রচেষ্টা। বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক যাত্রাপথ থেকে বিচ্যুত করে আবার পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেওয়াই তাদের লক্ষ্য। তাই ধর্মবাদীদের শর্ত মেনে ও আস্ফালনে নয়, বাংলাদেশ পরিচালিত হবে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের ভিত্তিতে।
তিনি বলেন, জাতির পিতার ভাস্কর্য নিয়ে বিরোধীতার অর্থ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরোধীতা। অপর দিকে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলা, টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে নেয়ার কথা বলাও আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ক্ষেত্রেও কোনো ছাড় দেয়ার অবকাশ নাই। ওয়ার্কার্স পার্টি আশা করে সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। এই সংবাদ সম্মেলন থেকে ওয়ার্কার্স পার্টি রাষ্ট্রযন্ত্র নয়, জনগণের ওপর নির্ভর করেই এই ষড়যন্ত্র রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার জন্য সকলকে আহ্বান জানাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, এই একই ধর্মবাদী মহল লালন ও সুপ্রীম কোর্টের সামনে ন্যায়বিচারের প্রতীক ভাষ্কর্য নিয়ে তাদের চূড়ান্ত বিরোধীতা শুরু করেছিল। সেই সময়কার সরকার উভয় ক্ষেত্রে তাদের বিরোধীতাকে প্রশ্রয় দিয়ে ঐ সকল ভাষ্কর্য স্থাপন করা থেকে পিছিয়ে আসে। তাদের ঐ সাময়িক বিজয়ে সাহসী হয়ে তারা এখন খোদ বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের সংবিধান, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এই অপশক্তিকে এখনই রুখে দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড কামরূল আহসান। উপস্থিত ছিলেন পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড ড. সুশান্ত দাস, কমরেড নূর আহমদ বকুল, কমরেড আমিনুল ইসলাম গোলাপ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড তপন কুমার দত্ত চৌধুরী, কমরেড হবিবর রহমান, কমরেড মোস্তফা আলমগীর রতন, কমরেড রফিকুল ইসলাম, বিকল্প সদস্য কমরেড কিশোর রায়, কমরেড শাহানা ফেরদৌসি লাকী, কমরেড কাজী মাহমুদুল হক সেনা ও কন্ট্রোল কমিশন সদস্য কমরেড আব্দুল হক।